দুই দশকের বেশি সময় ধরে নিজের অসামান্য অভিনয় দক্ষতার জন্য সকলের মন জয় করছেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। একাধিক চ্যালেঞ্জিং চরিত্রের মাধ্যমে বারবার দর্শকদের মন ছুঁয়েছেন। বড়পর্দা থেকে শুরু করে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম- টলিউডের পাশাপাশি বলিউডেও দাপিয়ে কাজ করছেন অভিনেত্রী। মনের কথা অকপটেই বলে ফেলেন নায়িকা। সেজন্যে প্রায়শই থাকেন জল্পনার শীর্ষে। এমনকী ইন্ডাস্ট্রিতে 'ঠোঁট কাটা' নামেও পরিচিত সে।
আলোচনা শীর্ষ থাকলেও 'বোল্ড অ্যান্ড হট' অভিনেত্রী স্বস্তিকা, তাঁর ব্যক্তিত্বের জন্যে সবসময় ইন ও এভারগ্রীন। সেই সঙ্গে তাঁর স্টাইল স্টেটমেন্টও নজরকাড়া। নিত্য নতুন ফ্যাশন গোলস সেট করেন স্বস্তিকা। তবে নেটমাধ্যমে কম ট্রোলিংয়ের শিকার হতে হয় না তাঁকে। পান থেকে চুন খসলেই, তাঁর দিকে ধেয়ে আসে কটাক্ষ। সম্প্রতি নিজের সোশ্যাল পেজে বেশ কিছু ছবি শেয়ার করেছিলেন নায়িকা। আর সেখানেই তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন নেটিজেনদের একাংশ।
ঠিক কীসের জন্যে কটাক্ষ করা হচ্ছে স্বস্তিকাকে? আসলে ছবিগুলিতে দেখা যাচ্ছে, নায়িকা সিঁথিতে চওড়া সিঁদুর, হাতে শাঁখা -পলা। তা দেখেই অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হওয়ার পর কীভাবে সধবাদের এসব চিহ্ন পরেছেন তিনি। যদিও নিন্দুকদের একহাত নিয়ে তাঁদের যোগ্য জবাব দিয়েছেন তিনি। একজন লিখেছেন, "সব ঠিক আছে, কিন্তু হাতে হাতে শাঁখা -পলা আর মাথায় সিঁদুর কেন? এগুলো তো বিবাহিত মহিলারা পরে...।" এর উত্তরে স্বস্তিকা বলেন, "শ্যুটিং বলে একটা কাজ আমি করি, আর আমি বিবাহিত।"
স্বস্তিকা আরও বলেন, "সব তথ্য পরীক্ষা করে তারপর মন্তব্য করতে হয়। কিন্তু সেটা তো করা যাবে না। আগেই জাজমেন্টাল হয়ে একটা কমেন্ট করে দিতে হবে...।" এরপর আরও এক নেটিজেন কমেন্ট করেন, "আপনি এখনও কারও স্ত্রী... ডিভোর্স হয়েছে?" মোক্ষম উত্তর দিয়ে নায়িকা বলেন,"এই তথ্য আপনাকে আপনার জীবনে সাহায্য করবে...? "
তারকাদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে খুব কৌতূহল থাকে দর্শকদের। মনের কথা অকপটেই বলে ফেলেন এই নায়িকা। সেই জন্যে প্রায়শই থাকেন জল্পনার শীর্ষে। তবে কেরিয়ারের পাশাপাশি ব্যক্তিগত জীবনে চলেছে নানা টানাপড়েন। বহুবার নাম জড়িয়েছে একাধিক তারকাদের সঙ্গে। ১৯৯৮ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সে বিখ্যাত রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সাগর সেনের ছেলে, প্রমিত সেনের সঙ্গে স্বস্তিকার বিয়ে হয়। কিন্তু বৈবাহিক জীবন একদমই সুখকর হয়নি অভিনেত্রীর। গর্ভবতী অবস্থায়ও শিকার হতে হয়েছে নির্যাতনের। বিয়ের দু' বছরের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়ে যায় তাঁদের। প্রমিত- স্বস্তিকার একমাত্র মেয়ে অন্বেষা, নায়িকার সঙ্গেই থাকেন। মা- মেয়ের নানা মুহূর্তের সাক্ষী থাকে নেটিজেনরা।
অভিনেতা দিব্যেন্দু মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে খুব কম দিনের জন্য সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। 'নন্দিনী' ছবির শ্যুটিং সেটে কাছে আসেন দুজনে। এরপরই স্বস্তিকার জীবনে আসেন চলচ্চিত্র পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়। ইন্ডাস্ট্রিতে কান পাতলেই শোনার যায় তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে নানা জল্পনা। যদিও সম্পর্কের ব্যাপারে কখনও মুখ খোলেননি তাঁরা। শোনা যায় সৃজিত এই সম্পর্ক নিয়ে যথেষ্ট সিরিয়াস ছিলেন। 'জাতিস্মর'-র পরেই তাঁদের বিচ্ছেদ হয়ে যায় বলে খবর।
সৃজিতের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর স্বস্তিকা সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন চলচ্চিত্র পরিচালক সুমন মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে। দুজনের ঘনিষ্ঠ মহলের সঙ্গে সম্পর্কের কথা স্বীকার করেছিলেন দুজনেই। টলিউডের সুপারস্টার জিৎ-র সঙ্গে স্বস্তিকার সম্পর্ক অনেকেরই অজানা। 'পিতৃভূমি', 'প্রিয়তমা' ও একাধিক ছবিতে একসঙ্গে অভিনয় করেছিলেন এই জুটি। যদিও 'মস্তান' ছবির সময় থেকেই তাঁদের সম্পর্কের সূত্রপাত। শোনা যায় সম্পর্কে অনেকটা এগোনোর পর, স্বস্তিকা কেরিয়ার নিয়ে কোনও রকম ত্যাগ করতে চাননি। এরপর মোহনা রাতলানিকে বিয়ে করেন জিৎ।
টলিপাড়ার চর্চিত জুটি পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় ও স্বস্তিকা একসঙ্গে 'হ্যাং আউট' থেকে শুরু করে 'পার্টি' করা সবই তাঁরা করতেন একসঙ্গে। এরপর কিছু ব্যক্তিগত সমস্যার জন্য তাঁদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়।
প্রসঙ্গত, নিন্দুকরা শত কটূকথা বললেও, 'কেয়ার নট অ্যাটিটিউটই' রাখতে পছন্দ করেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। এই আচরণের জন্যেই তিনি বহু মানুষের মনের খুব কাছের। টলিউডের পাশাপাশি জমিয়ে কাজ করছেন বি- টাউনেও। এজন্যে মুম্বইতে তাঁর যাতায়াত লেগেই থাকে। মায়ানগরীতেও তাঁর কাজ যথেষ্ট প্রশংসিত।