scorecardresearch
 

Exclusive: শোয়ের অনুমতি পেলেও রয়েছে 'ফান্ডিং ক্রাইসিস! কী বলছেন রাজ্যের শিল্পীরা

অতিমারী আবহে দীর্ঘদিন ধরে রুজি-রুটির সংকটের মধ্যে রয়েছেন রাজ্যের শিল্পী ও কলাকুশলীরা। এই সমস্ত শিল্পীদের কথা মাথায় রেখে সমস্ত সুরক্ষাবিধি ও নিয়মাবলী মেনে যাত্রা, মঞ্চ, লোকশিল্পীদের জীবন-জীবিকা স্বাভাবিক করতে রাজ্য সরকার তাঁদের সব রকম সহায়তা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মুক্ত মঞ্চের পাশাপাশি বদ্ধ জায়গায়ও অনুষ্ঠান করার অনুমতি পেয়ে কী বলছেন শিল্পীরা? খবর নিল আজতক বাংলা।

Advertisement
সিধু,ঊষা,রূপঙ্কর,ইমন (ছবি সৌজন্য: ফেসবুক) সিধু,ঊষা,রূপঙ্কর,ইমন (ছবি সৌজন্য: ফেসবুক)
হাইলাইটস
  • সুরক্ষাবিধি মেনে শিল্পীদের অনুষ্ঠান করার অনুমতি মিলেছে।
  • অনুষ্ঠান করার অনুমতি পেয়ে কী বলছেন শিল্পীরা?
  • সমস্যার কোনও সমাধান দেখতে পাচ্ছেন না তাঁরা।

চলতি বছরে নভেল করোনা ভাইরাস ছন্দপতন ঘটিয়েছে সমস্ত ক্ষেত্রে। অতিমারী আবহে দীর্ঘদিন ধরে রুজি-রুটির সংকটের মধ্যে রয়েছেন রাজ্যের শিল্পী ও কলাকুশলীরা। এই সমস্ত শিল্পীদের কথা মাথায় রেখে সমস্ত সুরক্ষাবিধি ও নিয়মাবলী মেনে যাত্রা, মঞ্চ, লোকশিল্পীদের জীবন-জীবিকা স্বাভাবিক করতে রাজ্য সরকার তাঁদের সব রকম সহায়তা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মুক্ত মঞ্চের পাশাপাশি বদ্ধ জায়গায়ও অনুষ্ঠান করার অনুমতি পেয়ে কী বলছেন শিল্পীরা? খবর নিল আজতক বাংলা

 

গত ২১ নভেম্বর মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় (Alapon Bandopadhyay) নবান্ন থেকে জানান, আবশ্যিকভাবে মাস্ক ব্যবহার করে এবং শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে বদ্ধ জায়গায় সর্বাধিক ২০০ জন পর্যন্ত জামায়াতের অনুমতি নেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও জানান, মুক্ত জায়গায় জমায়েতের ক্ষেত্রে কোনও রকম সীমাবদ্ধতা আর থাকবে না। পুজোর সময় থেকে পুরো শীতকালটাই শিল্পীদের জন্যে অনুষ্ঠান করার 'পিক সিজন' বলা হয়। প্রায় দীর্ঘ ৮‌ মাস পর শো করার ভরা মরসুমে এই অনুমতি পেয়ে কী ভাবছেন চার সঙ্গীতশিল্পী...

 

প্রচুর ডিজিটাল কনসার্ট  ও অনলাইন ইভেন্ট করেছেন এই পুরো সময়কালে জনপ্রিয় সঙ্গীশিল্পী উষা উত্থুপ (Usha Uthup)। তিনি একদমই প্রস্তুত নন এই মুহূর্তে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাইরে অনুষ্ঠান করতে। তাঁর কথায়, "শিল্পীদের পাশে দাঁড়ানো ও সাহায্য করার জন্যে রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রীকে আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। আমি সরকারের কথা শুনে বাইরে অনুষ্ঠান করতে যেতে পারি‌, কিন্তু করোনা কি কারো কথা শুনবে? গত মার্চ মাস আমি বাড়ির বাইরে পা রাখিনি।আমার ছেলের ডায়ালিসিস চলছে,সেই জন্যেও যথেষ্ট সচেতনতা অবলম্বন করে চলেছি। আমরা এখন খুব কঠিন একটা পরিস্থতিতে রয়েছি। সমস্ত শিল্পী ও কলাকুশলীরা রয়েছেন বিপুল অর্থাভাবে। তাঁরা কিভাবে জীবন যাপন করবেন এই প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়েছেন অনেকেই। আর আমার মনে হয় দর্শকেরা এখনও অনুষ্ঠান দেখতে আসার জন্যে এখনও প্রস্তুত নয়। পর্যাপ্ত দর্শক না হলে কোনও অনুষ্ঠানের আয়োজকরা কিভাবে অর্থনৈতিক দিকটা সামলাবেন?"  তাহলে এই পরিস্থিতির কোনও সমাধান রয়েছে? উত্তরে উষা উত্থুপ জানালেন, "নিজেই অত্যান্ত অর্থনৈতিক সংকটে রয়েছি। আমি ভীষণভাবে চিন্তিত,এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক কবে হবে সেটা নিয়ে। আমি কোনও রকম জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই মুহূর্তে বাইরে অনুষ্ঠান করতে চাই না এবং মনে করি সবার আগে আমাদের করোনা ভাইরাসকে পুরোপুরি রোখার জন্যে সমস্ত রকম সুরক্ষাবিধি ও নিয়মাবলী মেনে চলা উচিত"।

Advertisement

 

জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সঙ্গীতশিল্পী রূপঙ্কর বাগচীর (Rupankar Bagchi) কন্ঠেও হতাশার সুর। তিনি বললেন, "সব মিলিয়ে মার্কেট খুব ডাউন। তাছাড়া যে কোনও অনুষ্ঠান করতে গেলে একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় 'ফান্ডিং'। এই অর্থনৈতিক সমস্যা থেকে কতটা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। তবে এই সমস্যার কোনও সমাধান দেখতে পাচ্ছি না। এরপর শিল্পীরা গান-বাজনা ছেড়ে দেবে, অন্য কিছু করবে। কিংবা ভিক্ষা করবে!"

 

জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত আরেক সঙ্গীতশিল্পী ইমন চক্রবর্তী (Iman Chakraborty) বললেন, "রিহার্সাল ও শোয়ের আগের সমস্ত প্রস্তুতি নিয়ে আমরা তৈরি। এর আগে যখন মুক্ত মঞ্চে অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়েছিল, তখন নিয়মাবলী মেনে একটা দু'টো শো-ও করেছি। এখন আমরা শুধু শোয়ের অপেক্ষা করছি। তবে দর্শকেরা কতটা আসবেন সেটা পুরোটা তাঁদের উপর নির্ভর করছে। আমি এই পরিস্থিতিতে তাঁদের দোষ দি না একদমই। কিন্তু মানুষ বিনোদন ছাড়া কতদিন থাকবেন? ম্যাডাম এই সিদ্ধান্ত সেদিন জানানোর পর অনেকেই যোগাযোগ করছেন শোয়ের জন্যে। তবে মূল সমস্যাটা হচ্ছে বাজেট। তাই আয়োজক ও শিল্পী, উভয় তরফের কথা মাথায় রেখে একটা সিদ্ধান্তে আসার চেষ্টা চলছে।" দীর্ঘ ৮ মাসে যে ডিজিটাল মাধ্যমের সঙ্গে মানুষ অভ্যস্ত হয়েছেন সেটা কী থেকে যাবে? ইমনের উত্তর, " এই যে ডিজিটাল কনসার্ট, ক্লাস, এটা কিন্তু আরও একটা মাধ্যম। এটা পাশাপাশি চলবে। আর বেশ কিছু দিন অবধি ফিজিকাল কনসার্টের থেকে ডিজিটালটাই বেশি চলবে বলে আমার মনে হয়"।

 

সঙ্গীতশিল্পী সিধু (Sidhu) একদম প্রস্তুত এবং আশাবাদী ফের  মঞ্চে অনুষ্ঠান করার জন্যে।তিনি বললেন, "অনুষ্ঠান করার জন্যে আমি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।মাঝখানে প্রচুর ডিজিটাল শো করেছি বলে আমরা প্রস্তুত।বদ্ধ জায়গায় দর্শকেরা যেতে একটু বেশি ভয় পাচ্ছেন ঠিকই। কিন্তু ওপেন এয়ার স্পেসে আমার মনে হয় না ভয়ের কোনও কারণ আছে। যদি ঠিকমত গাইডলাইন মেনে দর্শকদের বসানো যায়, তাহলে মনে হয় দর্শকেরা আসবেন। কারণ তাঁরাও তো অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। আমি ইতিমধ্যে ৩১ ডিসেম্বর একটি শো করার প্রস্তাব পেয়েছি। যদিও এখনও কোন কিছু ফাইনাল হয়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে হয়তো ডিজিটালের রমরমা কিছুটা কমবে। তবে যেমন টিভি চ্যানেল, ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ইত্যাদি আছে, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মও থেকে যাবে। বিশেষত প্রবাসীদের ক্ষেত্রে এটি অত্যন্ত সুবিধাজনক। পুনে বা পশ্চিমবাংলার বাইরে যেই বাঙালিটা থাকেন, উঁনি যদি ডিজিটাল কনসার্টের মাধ্যমে রুপঙ্কর, সিধু কিংবা অন্য কোনও শিল্পীকে দেখতে পান, তাহলে তো সেটাই তাঁদের প্রাপ্তি"। 

 

Advertisement