ওমিক্রনের কারণে দেশের করোনা পরিস্থিতি লাগামহীন হয়ে পড়ছে। শেষ ২৪ ঘন্টায়, দেশে ২,৬৪,২০২ জন মানুষ নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। গতকাল কেন্দ্রের রিপোর্টে দেশের প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। শেষ দু’দিনে দেশের মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৫ লক্ষেরও বেশি। এই পরিস্থিতিতে দেশজুড়ে বাড়ছে লকডাউনের আশঙ্কা।
মহারাষ্ট্র, দিল্লি, পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, কেরালা, অন্ধ্রপ্রদেশের মতো রাজ্যগুলিতে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ কোভিডে আক্রান্ত হচ্ছেন। দেশের মোট দৈনিক কোভিড আক্রান্তের প্রায় ৬০ শতাংশ কেসই এই রাজ্যগুলিতে নথিভুক্ত হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে এই রাজ্যগুলিতে লকডাউনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যেই অঘোষিত লকডাউন শুরু হয়েছে দেশের প্রায় সবকটি রাজ্যে। মহারাষ্ট্র, দিল্লি, পশ্চিমবঙ্গ সহ অধিকাংশ রাজ্যেই নাইট কারফিউ, সপ্তাহান্তের কারফিউ জারি করা হয়েছে। মন্দির, বাজার, শপিং মল ইত্যাদিতে ভিড় কমানোর জন্য নানা পদক্ষেপ করা হচ্ছে।
বাংলায় নাইট কারফিউ চলার পাশাপাশি জেলা ও ওয়ার্ড ভিত্তিক কন্টেনমেন্ট জোনে ভাগ করে লকডাউনের মতোই নিয়ম কার্যকর করা হচ্ছে। কোথাও সপ্তাহে ৩ দিন, তো কোথাও ৪ দিন করে এলাকা ভাগ করে বন্ধ রাখা হচ্ছে বাজার ও সমস্ত দোকানপাট। ওই দিনগুলোতে শুধুমাত্র দুধ বা ওষুধের দোকান খোলা থাকছে। এ সবের জেরে গত বছরের লকডাউনের আশঙ্কা ফিরেছে মানুষের মনে।
ইতিমধ্যেই বাড়ি বাড়ি চাল-ডাল, রান্নার তেল মজুত করা শুরু করেছেন অনেকেই। এর পাশাপাশি প্যাকেটজাত খাবার যেমন, বিস্কুট, ম্যাগি বা অন্যান্য রেডি টু কুক নুডুল্স, চিড়ে, মুড়ি মজুত করার তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে অনেক মধ্যবিত্ত পরিবার।
২ জানুয়ারি থেকে ৮ জানুয়ারির মধ্যে, পার্লের বিস্কুটের বিক্রি একলাফে ২০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে। বিস্কুটের পাশাপাশি বেড়েছে রান্নার তেলের বিক্রিও। গত কয়েক দিনে আদানি উইলমার ফরচুন তেলের বিক্রি প্রায় ১৫ শতাংশ বেড়েছে।
শুকনো খাবার-দাবারের পাশাপাশি অসময়ের জন্য একটু-আধটু মদ কিনে মজুত করতে চাইছেন সুরাপ্রেমীরা। পুরোপুরি লকডাউন চালু হলে মদের দোকান বন্ধ হয়ে যেতে পারে, এই আশঙ্কায় এখন থেকেই একটু গলা ভেজানোর ব্যবস্থা করতে সুরু করেছেন কেউ কেউ।
এ সবের পাশাপাশি দুধের প্যাকেট ও অন্যান্য দৈনন্দিন জরুরি পণ্যের চাহিদা ২০০ শতাংশ বেড়েছে। একই ভাবে, হিমায়িত প্যাকেটজাত খাদ্য সামগ্রী, মাস্ক এবং স্যানিটাইজারের মতো পণ্যের চাহিদা ১৫০ শতাংশ বেড়েছে।