মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রে একটি চাঞ্চল্যকর খবর পাওয়া গেছে। যেখানে স্ত্রী প্রেমিক এবং তার বন্ধুর সাথে হাত মিলিয়ে স্বামীকে হত্যা করেছিল। পরে স্বামী নিখোঁজ বলে পুলিশকে জানায় ওই মহিলা। এভাবে ১১ মাস সকলকে বিভ্রান্ত করে রাখে সে। আদালতেও বারবার পুলিশের বিরুদ্ধে স্বামীর সন্ধান না করার অভিযোগ তুলেছিল ওই মহিলা। সে এমনটি করতো যাতে পুলিশ তাকে কোনও সন্দেহ না করে।
এদিকে পুলিশ আদালতে নিয়মত চাপে থাকছিল। ১১ মাস ধরে মহিলার স্বামীকে খুঁজে যাচ্ছিল তারা। পরে দেখা গেল যে পুলিশ যাকে খুঁজছিল তাকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকারীরা হলেন খোদ তার স্ত্রী। সঙ্গী প্রেমিকা এবং তার বন্ধু।
স্বামীর কঙ্কালটি হস্তিনাপুরের চাপড়োলী মাউজার একটি জমিতে থাকা পুরনো কুয়ো থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল। দেহটি কুয়ায় ফেলে দেওয়ার পরে অভিযুক্তরা তার উপর কাঠের স্ল্যাব রেখে মাটি দেয়, তারপর একটি গাছের চারা লাগিয়েছিল, যা ওই ১১ মাসে গাছ হয়ে গেছিব। পুলিশ অভিযুক্ত স্ত্রী, তার প্রেমিকে গ্রেফতার করে। যদিও বন্ধু পলাতক। পুলিশকে বিভ্রান্ত করার, হত্যার ষড়যন্ত্র এবং দেহ ছুপিয়ে রাখাপ এই কায়দা ক্রাইম পেট্রোল থেকে পেয়েছিল অভিযুক্তরা।
(প্রতীকী ছবি)
ভিতরবার মোহনগড়ের বাসিন্দা ফেরন সিং জাটব(৩৫) ১১ মাস আগে ৬ অগাস্ট নিখোঁজ হন। নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি ফেরনের স্ত্রী মালতী (৩০) ভিতরবার থানায় দায়ের করেন। তদন্তভার এসডিওপি ভিতরবা অভিনব বড়ঞ্জের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এদিকে স্ত্রী তার স্বামীর সন্ধান না পেয়ে পুলিশকে অভিযুক্ত করে আদালতে একটি হাবিয়াস কর্পাস রিট দায়ের করে। বিষয়টি আদালতে যাওয়ার সাথে সাথে পুলিশ আরও গভীরভাবে তদন্ত শুরু করে।
(প্রতীকী ছবি)
তদন্তে জানা যায় যে মালতীর চরিত্র ভাল নয়। কৃপালপুরের বাসিন্দা রামঅবতার জাটভের সাথে তার সম্পর্কের বিষয়টি সামনে আসে। তার বিরুদ্ধে কয়েকজন লোকের সঙ্গে অন্যায় করার অভিযোগ ছিল। নিখোঁজ ফেরানের ভাই বৌদির উপর সন্দেহ প্রকাশ করেছিল, কিন্তু পুলিশের সামনে সমস্যা ছিল যে যখনই তাকে কঠোরভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাওয়া হচ্ছিল, মালতী আদালতে গিয়ে দাঁড়াত।
(প্রতীকী ছবি)
এমন পরিস্থিতিতে মালতীর বদলে পুলিশ তার প্রেমিক রামঅবতারের দিকে ফোকাস করে। পুলিশ রামঅবতারকে টানা চারদিন জিজ্ঞাসাবাদ করে। তার বক্তব্য প্রতিবার আলাদা ছিল।
(প্রতীকী ছবি)
পুলিশ এরপর কঠোর পদক্ষেপ নেয়, তখন প্রেমিক সমস্ত কিছু জানিয়ে দিতে বাধ্য হয়। সে মালতী ও বন্ধু শিবরাজকে সাথে নিয়ে ফেরনকে হত্যা করেছিল তা স্বীকার করে। শিবরাজ এখনও পলাতক। পুলিশ মালতীর বাড়িতে পৌঁছে তাকে সাধারণ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে। রামঅবতারকে হেফাজতে দেখে মালতীও তার অপরাধ মেনে নেয়।
মালতী এবং রাম অবতারের মধ্যে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। তার স্বামী এই বিষয়টি জানতে পেরেছিল। ২০২০ সালের৬ অগাস্ট, শিবরাজ এবং রামঅবতার কাছেই গোয়ালিয়রের হস্তিনাপুরে চাপড়োলী মাউজার একটি খামারে ফেরন সিংকে নিয়ে যায়। সেখানে স্ত্রীর সামনে রামঅবতার ও শিবরাজ পাথর ও লোহার রড দিয়ে ফেরানকে আক্রমণ করে। এরপরে দেহটি কুয়ায় ফেলে দেওয়া হয়েছিল। অভিযুক্তরা এরপর কুয়োর মুখ বন্ধ করতে গাছ লাগয়ি দেয়। সবকিছু জানার পর পুলিশ সেই কূপ থেকে গাছটি কেটে ফেলে। ডুবুরি কুয়া থেকে কঙ্কালটি উদ্ধার করে। অভিযুক্তরা বলেছিল যে তারা অপরাধ করার আগে ক্রাইম পেট্রোলের অনেক পর্ব দেখেছিল। এই পর্বগুলি দেখে পুরো ষড়যন্ত্রটি করা হয়েছিল। তারা ক্রমাগত আদালতে আবেদন জানাতে থাকে যাতে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ না করে।