scorecardresearch
 

টোকিও অলিম্পিক থেকে ফেরা তীরন্দাজের বাবা-মাকে হুমকি, পৌঁছল পুলিশ

টোকিও অলিম্পিকে গিয়েছিলেন ভারতীয় তীরন্দাজ প্রবীণ যাদব। তার মাঝেই অলিম্পিক থেকে ফিরেই শোনেন তাঁদের বাড়ি ছাড়া করার হুমকি দিচ্ছে এলাকার কয়েকজন। বাবা-মাকে ধমকেও গিয়েছেন। কিন্তু কেন?

Advertisement
প্রবীণ যাদব প্রবীণ যাদব
হাইলাইটস
  • অলিম্পিয়ান তীরন্দাজের বাড়িছাড়া করতে হুমকি
  • বাড়ি তৈরি নিয়ে প্রতিবেশীর সঙ্গে বিবাদ
  • জমি বিবাদ মেটাতে উদ্যোগী প্রশাসন

টোকিও ফেরক অলিম্পিয়ানের বাড়িতে প্রতিবেশিদের হুমকি

টোকিও অলিম্পিক ২০২০ ভারতীয় দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তীরন্দাজ প্রবীণ যাদব। পদক জিততে না পারলেও তীব্র লড়াই প্রশংসা কুড়িয়েছে খেলা মহলের। এমনিতেই পদক পাননি বলে মন খারাপ। তার উপর দেশে ফিরতেই নতুন বিপত্তির মধ্যে পড়তে হয়েছে তাঁকে।

বাড়ি ছাড়তে হুমকি

তাঁর পরিবারকে বাড়ি ছাড়ার জন্য ধমকানো হচ্ছে। তাঁরই এলাকায় তাঁর মা-বাবা নিজের গ্রামের নিজের বাড়িতে বাড়ির সংস্কার করাতে চান। কিন্তু তাদের বাড়ি সংস্কার করতে বাধা দিচ্ছে। যাদবের মা-বাবা জানান, নির্মাণের অনুমতি না মিললেও তারা গ্রাম ছাড়বেন। কারণ তাঁদের জরাজীর্ণ বাড়িতে আর থাকা যাচ্ছে না।

মহারাষ্ট্রের প্রত্য়ন্ত গ্রাম সারাডে

প্রবীণ যাদবের মা-বাবা মহারাষ্ট্রের সাতারা জেলার সারাডে গ্রামের বাসিন্দা। এখানে তাঁদের দু-কামরার একটি ছোট বাড়ি রয়েছে। যেটা তাঁরা বাড়াতে চান। তাঁর মা-বাবা জানিয়েছেন, জমি তাঁদের। বাড়ি তাঁদের। কিন্তু নিজের জমিতে বাড়ি তৈরি করতে তাঁদের প্রতিবেশিরা বাধা দিচ্ছে।

বাড়ি ছাড়তে হবে তাঁদের ?

প্রবীণের বাবা যাদব জানিয়েছেন, গোলমাল যদি না মেটে. তাহলে তাঁদের বাধ্য হয়ে ঘর-গ্রাম ছাড়তে হবে। মারামারি বা লড়াই করে তারা টিঁকে থাকতে পারবেন না।কিন্তু তাঁদের নিজের জমিতে বাড়ি করতে বাধা দেওয়ার অন্য কেউ কে ?

কেন তাঁকে বাধা দেওয়া হচ্ছে ?

সম্প্রতি টোকিও থেকে অলিম্পিকে ভারতীয় দলের হয়ে প্রবীণ যাদব তিরন্দাজিতে অংশ নিয়েছিল। প্রবীণ ভারতে ফিরে একই নিউজ এজেন্সিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, আমার মা-বাবা সেতি মহামন্ডল (স্টেট এগ্রিকালচারাল কর্পোরেশনে) দিনমজুরের কাজ করতেন। মহামন্ডল আমাদের ওই জমি দিয়েছিল। যখন আমাদের আর্থিক পরিস্থিতি একটু ভালোর দিকে যেতে শুরু করে আমরা বাড়ি তৈরি করা শুরু করেছি।

Advertisement
প্রবীণ

জমির পাট্টা নেই, দানের জমি

তিনি জানান, মহামন্ডল তাঁদের ওই জমির জন্য পাট্টা দেয়নি। শুধুমাত্র মৌখিক সমঝোতার ভিত্তিতে তাঁদের ব্যবহার করতে দিয়েছিল। তিনি জানান, সেনাবাহিনীতে তীরন্দাজি সূত্রে তিনি চাকরি পাওয়ার পর, তাঁদের আর্থিক পরিস্থিতি আগের চেয়ে অনেক ভালো হয়েছে। তারপর তাঁরা ঝুপড়ি ঘর থেকে দুকামরার ছোট একটা ঘর বানান। তখন কেউ কোন আপত্তি করেনি। কিন্তু যখন সেই ঘর বাড়িয়ে এ তারা আরেকটু বড় করে তৈরি করার চেষ্টা করছেন, তখন প্রতিবেশিদের আপত্তি শুরু হয়।

গোটা জমিটি প্রতিবেশিদের বলে দাবি

প্রতিবেশিরা দাবি করেন, যে গোটা জমিটি তাঁদের। গোটা জমি যদি তাঁদের হয়। তাহলে প্রথমে যখন তারা দু কামরার ঘর তৈরি করেছিলেন, তখন তাতে বাধা দেওয়া হয়নি কেন ? প্রশ্ন সংগত। কিন্তু উত্তর দেওয়ার কেউ নেই। তিনি বলেন ঘর তৈরি করার জন্য তাঁরা প্রায় দেড় লক্ষ টাকার সামগ্রী কিনে ফেলেছিলেন। কিন্তু পরে কাজ করতে না পারায় ওই সামগ্রী তাদের ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করতে হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, যখন তাঁরা বাড়িতে টয়লেট তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেন, তখনই পড়শিরা তাঁদের ধমকানো শুরু করেন এবং পুলিশে অভিযোগ করে জানান।

বিবাদ মেটাতে মহকুমাশাসক

এসডিও শিবাজি জগতাপ ওই নিউজ এজেন্সিকে জানিয়েছেন, জমি এখনও পর্যন্ত সেতি মহামন্ডলের নামে রয়েছে। তিনি জানান যে, যাদব পরিবার সেখানে বাড়ি তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু প্রতিবেশীরা বাধা দিয়েছে। তাদের আসা যাওয়ার রাস্তা বন্ধ হয়ে যাবে বলে এই আপত্তি উঠেছে। তিনি জানান, তিনি এবং কিছু পুলিশকর্মী সেখানে গিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে বিবাদ মেটানোর চেষ্টা করেছিলেন। তারা আশা করছেন খুব দ্রুত সমস্যা মিটে যাবে।

প্রবীণদের পরিবরের নামে জমির কাগজ হস্তান্তরের ভাবনা

প্রশাসন জমির কিছু অংশ প্রবীণের নামে ট্রান্সফার করার সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে বলে জানা গিয়েছে। তারা কী প্রক্রিয়ায় তা করা যায়, তার চেষ্টা করছেন। অলিম্পিক ফেরত কৃতী সন্তানের যাতে কোনও রকম সমস্যা না হয় সে বিষয়টি তারা নজর রাখছেন। সম্ভবত দানপত্র করে তাদের জমির অধিকার দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। প্রবীণ জানিয়েছেন, এর মধ্যেই একদিন তার পরিবারের সদস্য বাবা-মাকে ৫-৬ জন প্রতিবেশীরাা ধমকে গিয়েছেন। তিনি তাঁর কর্মক্ষেত্র সেনাবাহিনীতেও এর খবর পৌঁছে দিয়েছেন। নিজের জীবনের প্রথম অলিম্পিকে প্রবীণ পৃথিবীর এক নম্বর তীরন্দাজ ব্রেডি এলিফেন এর কাছে হেরে গিয়েছেন। তার পরই তিনি ভারতে ফেরেন।

 

Advertisement