
বাংলায় লাতিন আমেরিকান ড্রাগ কার্টেলের স্টাইলে মাদক দ্রব্যের বাঙ্কার?গণতন্ত্র দিবসের ঠিক আগে নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জ থানার মাজদিয়া এলাকায় মিলল লোহার বাঙ্কার। সীমান্ত এলাকার একটি বাগানের নিচে মাটি খুঁড়ে তিনটি লোহার বাঙ্কার উদ্ধার করেছে BSF। এই বাঙ্কারগুলিতে নিষিদ্ধ কাফ সিরাপের বোতল রাখা ছিল। গোটা ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মজদিয়ার সুধীর রঞ্জন লাহিড়ী কলেজ সংলগ্ন এলাকায়। এই ধরনের কাফ সিরাপ সাধারণ নেশার দ্রব্য হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
গোপন সূত্রে খবর পেয়ে এই বাগানে অভিযান চালিয়েছিল BSF। অনুমান,, কাফ সিরাপ বাংলাদেশে পাচারের উদ্দেশ্যে এখানে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। সীমান্তে বাড়তি নজরদারি থাকার কারণে পাচারকারীরা সেই কাজ হাসিল করতে পারেনি। তাই এই পন্থা। উদ্ধার হওয়া কাফ সিরাফের মূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকারও বেশি বলে মনে করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মাজদিয়ায় পাচারকারীদের এই কাজ দক্ষিণ আমেরিকা, মেক্সিকোর ড্রাগ কার্টেলগুলির মতো। দক্ষিণ আমেরিকার সিনালোয়া এবং মেদেলিন কার্টেল একসময় প্রায় এই ধরনেরই বাঙ্কার ব্যবহার করত। শুধু তাই নয়, মেক্সিকো-আমেরিকা সীমান্তে মাদক পাচারের জন্য তারা দীর্ঘ সুড়ঙ্গ খনন করত। ৯০-এর এবং ২০০০-এর দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে অভিযান চালিয়ে একাধিকবার এমন বাঙ্কার ও সুড়ঙ্গের সন্ধান পেয়েছিল DEA(আমেরিকার ড্রাগ এনফোর্সমেন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন)।
অতটাও পিছিয়ে যেতে হবে না, ২০২০ সালেই ইউরোপে এমন একটি ঘটনা ঘটে। তার সঙ্গেও মাজদিয়ার ঘটনার সাদৃশ্য আছে। ইংল্যান্ডের লিঙ্কনশায়ারের স্কেন্ডলবি অঞ্চলের একটি ফার্মে অভিযান চালিয়ে পুলিশ মাটির নিচে একটি বিশাল বাঙ্কার খুঁজে পায়। সেখানে ১২টি কন্টেনার থেকে প্রচুর পরিমাণে গাঁজা উদ্ধার হয়। এর আনুমানিক বাজারমূল্য ছিল প্রায় ৫৮০,০০০ পাউন্ড(ভারতীয় মুদ্রায় ৬ কোটি টাকারও বেশি)।
সেই তুলনায় মাজদিয়ায় উদ্ধার হওয়া নিষিদ্ধ দ্রব্যে মূল্য কম। তবে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে এমন বাঙ্কারে মাদক দ্রব্য রাখার বিষয়টি নিঃসন্দেহে আশঙ্কাজনক।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাজদিয়ার ঘটনায় এটাই প্রমাণ হচ্ছে যে পাচারকারীরা কৌশল পাল্টাচ্ছে। অন্যান্য দেশে, বড় পাচারচক্রের পদ্ধতির প্রয়োগ করা হচ্ছে। মাদক পাচারের নতুন পন্থা তৈরি হচ্ছে। ফলে সময়ের সঙ্গে নজরদারিতেও আরও জোর দিতে হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।