ভুয়ো দূতাবাস, ভুয়ো রাষ্ট্রদূত সেজে, বিদেশ মন্ত্রকের খুলে প্রতারণায় গ্রেফতার গাজিয়াবাদের ব্যক্তি। উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদের একটি অভিজাত কলোনিতে অভিযান চালায় ইউপি এসটিএফ। বিলাসবহুল বাংলোয় অভিযান চালিয়ে ভুয়ো দূতাবাস থেকে হাতেনাতে ধরা হয় ব্যক্তিকে। অফিসাররাও হতবাক হয়ে যান। গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তির নাম হর্ষবর্ধন জৈন, যিনি গাজিয়াবাদের কবিনগরের বাসিন্দা।
অভিযুক্ত হর্ষবর্ধন নিজেকে ওয়েস্ট আর্কটিকা, সাবোরগা, পুলভিয়া এবং লোডোনিয়ার মতো ছোট দেশগুলির রাষ্ট্রদূত বলে দাবি করেছিলেন হর্ষবর্ধন। বেশ কয়েক বছর ধরে ওই ভুয়ো দূতাবাস চালাচ্ছিলেন অভিযুক্ত। ইউপি এসটিএফের তদন্তে জানা গেছে, অভিযুক্তরা কবিনগর গাজিয়াবাদে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন। সেখানে ওয়েস্ট আর্কটিকা দূতাবাসের নামে এই ভুয়ো দূতাবাসটি খুলেছিল।
অভিযুক্তদের কাছ থেকে ডিপ্লোমেটিক নম্বর প্লেটযুক্ত চারটি বিলাসবহুল গাড়ি, ১২টি জাল ডিপ্লোমেটিক পাসপোর্ট এবং বিদেশ মন্ত্রকের ভুয়ো সিল উদ্ধার করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, তার কাছ থেকে ৩৪টি বিভিন্ন বিদেশী কোম্পানি ও দেশের স্ট্যাম্প, জাল প্রেস কার্ড, প্যান কার্ড এবং প্রায় ৪৪.৭ লক্ষ টাকা নগদ পাওয়া গেছে। এছাড়াও, প্রচুর বিদেশী মুদ্রা এবং মোট ১৮টি ডিপ্লোমেটিক নম্বর প্লেটও উদ্ধার করা হয়েছে।
অভিযুক্ত হর্ষবর্ধন প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি এবং অন্যান্য ভিআইপি ব্যক্তিত্বদের ছবির সঙ্গে নিজের ছবি ব্যবহার করে মানুষকে প্রতারণা করেছিলেন। সোশ্যাল মিডিয়া এবং ওয়েবসাইটে এই ভুয়ো ছবিগুলি দেখিয়ে মানুষকে কথা বলার ফাঁদে ফেলত। তাদের প্রতারণা করে বিদেশে চাকরি দেওয়ার নামে দালালি করে টাকা তুলত।
হাওয়ালা র্যাকেট এবং ভুয়ো কোম্পানির সঙ্গেও সংযোগ
STF-এর মতে, অভিযুক্ত হর্ষবর্ধনের মূল কাজ হল বিদেশে চাকরির নামে দালালি করা, জাল নথি তৈরি করা এবং ভুয়ো কোম্পানির মাধ্যমে হাওয়ালা লেনদেন করা। প্রাথমিক তদন্তে আরও জানা গেছে, তিনি এর আগেও বিতর্কে জড়িয়েছিলেন। ২০১১ সালে, তার বিরুদ্ধে কবিনগর থানায় অবৈধ স্যাটেলাইট ফোন রাখার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। এছাড়াও, তার নাম কুখ্যাত চন্দ্রস্বামী এবং আন্তর্জাতিক অস্ত্র ব্যবসায়ী আদনান খাগোশির সঙ্গেও যুক্ত হয়।
এসটিএফের পদক্ষেপের পর, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কবিনগর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। বর্তমানে, অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে এবং তার নেটওয়ার্ক কতদূর ছড়িয়ে আছে এবং তিনি এখন পর্যন্ত কতজনকে তার জালে ফাঁসিয়েছেন তা এখনও নিশ্চিত করা হয়নি। পুলিশ এবং তদন্ত সংস্থাগুলি এখন এই পুরো নেটওয়ার্কের তদন্তে ব্যস্ত।