
Wildlife Smuggler Arrest: এক দীর্ঘ দশক ধরে পলাতক থাকা আন্তর্জাতিক বন্যপ্রাণ পাচার চক্রের এক অন্যতম মুখ অবশেষে ধরাশায়ী। ইন্টারপোলের লাল নোটিশে থাকা ইয়াংচেন লাচুংপাকে সিকিমের লাচুং এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে মধ্যপ্রদেশের টাইগার স্ট্রাইক ফোর্স। ওয়াইল্ড লাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল ব্যুরোর সঙ্গে যৌথ তৎপরতায় মঙ্গলবার বিকেলে তাঁকে আটক করা হয়। পরদিন আদালতে পেশ করে ট্রানজিট রিমান্ডে নিয়ে যাওয়া হয়েছে মধ্যপ্রদেশে।
পরিবেশমন্ত্রকের পক্ষ থেকে শুক্রবার জানানো হয়েছে, প্রায় এক দশক আগে যে মহিলার নামে হোসাঙ্গাবাদের সাতপুরা ব্যাঘ্র প্রকল্প এলাকায় মামলা রুজু হয়েছিল, সেই ইয়াংচেন লাচুংপাকেই ফের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হল। বন্যপ্রাণ পাচারের জাল তিনি বিস্তার করেছিলেন নেপাল, তিব্বত ও ভুটান থেকে শুরু করে শিলিগুড়ি, গ্যাংটক, কলকাতা, কানপুর ও দেশের নানা শহরে। তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে চারটি বাঘের হাড়, বাঘের মজ্জার তেল, বাঘের ছাল এবং প্রায় দেড় কেজি প্যাঙ্গোলিনের আঁশ। তদন্তকারীদের দাবি, এই চক্রে তিনি ছিলেন ‘মাস্টারমাইন্ড’।
২০১৫ সালে জয় তামাং নামে এক পাচারকারীকে আটক করার পরে ইয়াংচেনের বিরুদ্ধে প্রথম বড়সড় অভিযোগ উঠে আসে। ২০১৭ সালে একবার গ্রেপ্তার হলেও শর্তসাপেক্ষ জামিনে মুক্ত হয়ে ফের আড়ালে চলে যান তিনি। এরপর ২০১৯ সালে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলেও তাঁর হদিশ মেলেনি। পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠায় ২০২৫ সালের ২ ডিসেম্বর সিবিআইয়ের মারফত ইন্টারপোল রেড নোটিশ জারি করে মধ্যপ্রদেশ সরকার।
ইয়াংচেন লাচুংপা সীমান্তেল অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে নিজেদের সোর্স বা যোগাযোগের জাল বিস্তৃত করে রেখেছিলেন। সেই কারণেই সিকিম পুলিশ, সিকিম বন দফতর এবং এসএসবি, তিন বাহিনীর সমন্বয়ে অভিযান চালাতে হয়। গ্রেপ্তারের পরে তাঁকে শিলিগুড়ি হয়ে মধ্যপ্রদেশে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এসএসবি-র সহযোগিতায়। পরিবেশমন্ত্রক জানিয়েছে, এই মামলায় মোট ৩৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র রয়েছে। ইতিমধ্যেই ২৭ জনকে আদালত দোষী সাব্যস্ত করেছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
উত্তরবঙ্গের মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) ভাস্কর জে ভি জানান, ওয়াইল্ড লাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল ব্যুরোর নির্দেশ মেনে তাঁরা নিয়মিত বন্যপ্রাণ পাচার রোধে অভিযান চালান। তবে এই গ্রেপ্তার প্রমাণ করল যে আন্তর্জাতিক পাচার চক্র এখনো উত্তরবঙ্গ–সিকিম সীমান্তে সক্রিয়, এবং তাদের বিরুদ্ধে কঠোর নজরদারি জরুরি।