Kerala Human Sacrifice Case: মহিলাদের ধর্ষণ করার পর কাটতে কাটতে, তাঁদের চিত্কার, ছটফটানি উপভোগ করত সিরিয়াল রেপিস্ট। কেরলের কোচিতে ঘটা নরবলির ভয়াবহ ঘটনার তদন্তে নেমে যা যা তথ্য উঠে আসছে, তা শিরদাঁড়া দিয়ে ঠান্ডা স্রোত বয়ে যাওয়ার মতো। পুলিশ জানাচ্ছে, অপরাধী তান্ত্রিক নয়, আসলে সাইকো কিলার। ৭৫ বছরের বৃদ্ধাকেও ধর্ষণ করার চেষ্টা করেছিল সে। নরবলি দিলে জীবনে কী কী শুভফল ঘটে, নিজের সোশ্যাল মিডিয়া পেজে সেই সবও লিখতো সাইকোকিলার। পুরো ঘটনার ভিতরের কাহিনি রইল।
তান্ত্রিক যখন সাইকো রেপিস্ট
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে নকল মহিলা সেজে সোশ্যাল মিডিয়ায় শিকার খুঁজত ওই সিরিয়াল রেপিস্ট ও কিলার। শিকার পেলেই প্রথম সংশ্লিষ্ট মহিলাকে তন্ত্র-মন্ত্রের পাঠ পড়াতো। তারপর ধীরে ধীরে নরবলির শুভ ফল বোঝানোর চেষ্টা করত। এই ভাবে মহিলাকে নিজের বশে এনে নরবলির দিন প্রথম ধর্ষণ করত। তারপর বলি দিত। কেরলে নরবলি কাণ্ডে ডাক্তার দম্পতির সঙ্গী তৃতীয় অভিযুক্ত অর্থাত্ তান্ত্রিক এতটাই খতরনাক বলে জানা যাচ্ছে।
টার্গেট করত প্রবীণ মহিলাদের
কোচিতে ঘটা নরবলির ঘটনায় একাধিক হাড়হিম করা তথ্য উঠে আসছে। তিনজনের মধ্যে দুজনের ক্ষেত্রে তো দেখা যাচ্ছে, শিক্ষিত হওয়া সত্ত্বেও নরবলিতে রাজি হয়েছেন। তান্ত্রিক ও সাইকো রেপিস্ট-কিলার মূলত বৃদ্ধাকে খুঁজত শিকারের জন্য।
কেরলের নরবলি কাণ্ডের ৩ মূর্তি
এখন দেখা যাচ্ছে, সাম্প্রতিককালে যতগুলি ঘটনা ঘটেছে, বেশির ভাগই ওই তান্ত্রিক মহিলাদের ধর্ষণ করে খুন করেছে। প্রাকৃতিক থেরাপি চিকিত্সক দম্পতিরও সাহায্য নিয়েছে তথাকথিত তন্ত্র সাধনার জন্য। হাড়হিম করা নরবলি কাণ্ডে তিন জনেরই জড়িত থাকার সন্দেহ দানা বাঁধছে।
প্রথম অভিযুক্ত: সফি ওরফে সাজিদ
মহম্মদ সফি ওরফে সাজিদ এমন একজন সাইকো রেপিস্ট, যে সর্বদাই কোনও না কোনও শিকারের খোঁজে থাকত। পুলিশ জানাচ্ছে, এবারের ঘটনায় সফিক শিকার ধরতে হাইটেক পদ্ধতি নিয়েছিল। সফি প্রথমে শ্রীদেবী নাম নিয়ে ফেসবুকে একটি ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খোলে। এই অ্যাকাউন্ট থেকেই ফাঁসাতো মানুষকে। সোশ্যাল মিডিয়াতেই ভগবল সিংয়ের সঙ্গে সফির আলাপ। অর্থাত্ তথাকথিত তান্ত্রিকের।
ভগবল সিং ন্যাচারাল থেরাপিস্ট। একই সঙ্গে সোশিও-পলিটিক্যাল অ্যাক্টিভিস্টও। রাজনীতির সঙ্গে সমাজকর্মী হিসেবেও নিজেকে দাবি করত। শ্রীদেবী নামে অ্যাকাউন্ট দিয়ে ভগবল সিংয়ের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতায় সফি। ভগবল সিং অচিরেই জড়িয়ে পড়ে। ভগবল সিং শ্রীদেবীর সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছে প্রকাশ করে। ব্যস, সফি তখন টোপ দেয়, সে এক তান্ত্রিককে জানে, যে ভগবল সিংয়ের খারাপ সময় কাটিয়ে দেবে। শ্রীদেবীর ছদ্মবেশে মহম্মদ সফি ওরফে সাজিদ ভগবলের বিশ্বাস জাগাতে বলে, তার টাকাপয়সার অভাব ছিল। ওই তান্ত্রিকই মিটিয়ে দিয়েছে। এই সব চ্যাট চলত ফেসবুক মেসেঞ্জারে।
অভিযুক্ত ২: ভগবল সিং, ন্যাচারাল থেরাপিস্ট
কোচিতে ভগবল সিংকে অনেকেই ভাল ভাবে চেনেন। পাড়া বা এলাকায় বেশ সম্মানও রয়েছে। কারণ ভগবলের পরিবার বহুদিন ধরে ওই এলাকায় বসবাস করে। তারা বংশগত ভাবে ন্যাচারাল থেরাপিস্টের কাজ করে। ভগবলের স্ত্রীও একই পেশায়। সিপিআইএম পার্টির সক্রিয় কর্মী। কিন্তু টাকাপয়সার জন্য সফির অন্ধবিশ্বাসে পা দেয়। ভগবল এক মহিলাকে নরবলি দিয়েছে বলে অভিযোগ।
অভিযুক্ত ৩: লয়লা সিং, ভগবলের স্ত্রী
একজন মহিলা হয়েও কোনও মহিলার প্রতি এতটা নৃশংস হতে পারে, লয়লা সিং তার প্রমাণ। ভগবল ও লয়লার বাড়িতে দুই মহিলাকে বলি দেওয়ার ঘটনা সামনে আসতেই তৃতীয় ব্যক্তি, অর্থাত্ তান্ত্রিককে গ্রেফতার করে পুলিশ।
লয়লা ভগবলের দ্বিতীয় স্ত্রী। ভগবলের প্রথম স্ত্রী ও তার সন্তানরা বিদেশে থাকে। ওদিকে লয়লার আগের পক্ষের ছেলেও বিদেশে চাকরি করে। এই দম্পতির সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠে।
আরও পড়ুন- চাই অঢেল টাকা, দুই নরবলির অভিযোগে গ্রেফতার দম্পতি