scorecardresearch
 

Mahalakshmi Murder Case : যুবকের সঙ্গে প্রেম-ঘনিষ্ঠতা, ঘরের ভিতর লাশের ৫৯ টুকরো; মহালক্ষ্মীর খুনিকে কীভাবে খুঁজছে পুলিশ?

বেঙ্গালুরুর বোরিং হাসপাতালে গত ২১ সেপ্টেম্বর ময়নাতদন্তের জন্য মহালক্ষ্মীর খণ্ডিত দেহ নিয়ে আসা হয়। ফ্রিজ থেকে উদ্ধার হওয়া লাশের টুকরোগুলো গণনা করার পর জানা যায়, খুনিরা মহালক্ষ্মীর দেহকে ৫৯ টুকরো করে। বেঙ্গালুরুর হাসপাতালে  লাশের এত টুকরো এর আগে কখনও আসেনি। 

Advertisement
Mahalakhsmi Murder Case Mahalakhsmi Murder Case
হাইলাইটস
  • বেঙ্গালুরুর বোরিং হাসপাতালে গত ২১ সেপ্টেম্বর ময়নাতদন্তের জন্য মহালক্ষ্মীর খণ্ডিত দেহ নিয়ে আসা হয়
  • কোনও একটি দেহের এত টুকরো এর আগে আসেনি হাসপাতালে

বেঙ্গালুরুতে ফ্রিজের মধ্যে থেকে যুবতীর দেহ উদ্ধারের ঘটনায় নয়া মোড়। আশরাফ নয়, মহালক্ষ্মীকে খুন করেছে পশ্চিমবঙ্গের কোনও বাসিন্দা। প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত পুলিশ। গত ২১ সেপ্টেম্বর নিজের ভাড়া থেকে উদ্ধার হয় ২৯ বছর বয়স্ক মহালক্ষ্মীর দেহ। হত্যাকারীর সন্ধানও পেয়েছে পুলিশ। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, বেঙ্গালুরু ছাড়ার আগে খুনি তার ভাইকে বলেছিল, সে মহালক্ষ্মীকে খুন করেছে। অপরাধীকে ধরতে পুলিশ এখন রওনা দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশায়। এদিকে, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা গেছে, লাশের চল্লিশটি নয়, আরও বেশি সংখ্যক টুকরো করা হয়েছিল। 

বেঙ্গালুরুর বোরিং হাসপাতালে গত ২১ সেপ্টেম্বর ময়নাতদন্তের জন্য মহালক্ষ্মীর খণ্ডিত দেহ নিয়ে আসা হয়। ফ্রিজ থেকে উদ্ধার হওয়া লাশের টুকরোগুলো গণনা করার পর জানা যায়, খুনিরা মহালক্ষ্মীর দেহকে ৫৯ টুকরো করে। বেঙ্গালুরুর হাসপাতালে  লাশের এত টুকরো এর আগে কখনও আসেনি। 

মহালক্ষ্মীর ঘর থেকে মিলেছে ট্রলি ব্যাগ 

সেপ্টেম্বর মাসের ২ তারিখ অর্থাৎ দেহ উদ্ধারের ১৯ দিন আগে মহালক্ষ্মীকে খুন করা হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। মহালক্ষ্মীর ঘরে রাখা একটি ট্রলি ব্যাগও পেয়েছে পুলিশ। বেঙ্গালুরু পুলিশ সূত্রে জানা খবর, সম্ভবত খুনিরা শরীরের টুকরোগুলো কেটে সেই ট্রলিতে করে ফেলে দেওয়ার চক্রান্ত করেছিল। কিন্তু এলাকাটি জনাকীর্ণ হওয়ায় তা পারেনি। 

সেই ঘরেই খুনের পর লাশের টুকরো

প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের এও অনুমান, ওই ঘরেই খুনের পর লাশের টুকরো করা হয়। কারণ খুনের পর আস্ত লাশ ঘর থেকে বের করা সহজ ছিল না। তেমনই বাইরে থেকে লাশ ঘরে আনাও অসম্ভব। ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে পুলিশ আরও জানায়, হত্যা ও লাশের টুকরো করার পর ঘর ও বাথরুম পরিষ্কার করার চেষ্টা করা হয়। 


খুনির ভাইয়ের কাছে পৌঁছয় পুলিশ 

Advertisement

এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন মহালক্ষ্মীর খুনি কে এবং খুনের কারণ কী? বেঙ্গালুরু পুলিশ সূত্রে খবর, মহালক্ষ্মীর খুনি কে তার খোঁজ মিলেছে। সূত্রের আরও দাবি, হত্যাকারীর পরিবারকে পুলিশ খুঁজছে। তারা মুম্বইয়ে থাকে। বেঙ্গালুরু পুলিশ খুনির ভাইয়ের কাছে পৌঁছেছে। খুনির ভাই পুলিশকে জানিয়েছে, মহালক্ষ্মীকে খুনের পর তার ভাই নিজেই তাকে বলেছিল, সেই মহালক্ষ্মীকে খুন করেছে।

বেঙ্গালুরু পুলিশ সিসিটিভি থেকে খুনি সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ ও ক্লু পেয়েছে। ভ্যালিকওয়াল এলাকায় যেখানে মহালক্ষ্মী থাকত, তার বাড়ির দিকে এবং যাওয়ার রাস্তায় কিছু জায়গায় সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল। সেখানে খুনির ছবি দেখা যায়। বেঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনার নিজেই জানিয়েছেন, পুলিশ খুনিকে শনাক্ত করেছে এবং তাকে গ্রেফতার করতে দেশের অনেক জায়গায় পুলিশের দল পাঠানো হয়েছে। 

খুনি পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা

 'আজ তক'-এর প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, বেঙ্গালুরু পুলিশ যে খুনিকে খুঁজছে সেও একজন হেয়ারড্রেসার। মহালক্ষ্মীর সঙ্গেও তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। ওই হেয়ারড্রেসার পশ্চিমবঙ্গের। মহালক্ষ্মীকে হত্যার পর সে বর্তমানে ভুবনেশ্বর হয়ে পশ্চিমবঙ্গের কোথাও লুকিয়ে আছে। এর আগে মহালক্ষ্মীর স্বামী হেমন্ত আশরাফকে অভিযুক্ত করেছিল। আশরাফ এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে সন্দেহ প্রকাশ করেছিল হেমন্ত। আশরাফও একজন হেয়ার ড্রেসার। সূত্রের খবর, মহালক্ষ্মীর সঙ্গেও আশরাফের ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব ছিল। 

হেমন্তের অভিযোগের পর পুলিশ আশরাফকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেয়। আশরাফ সেদিন বেঙ্গালুরুতে ছিল এবং কর্মস্থলে ছিল। পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে। এবং তাকে দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করে। তার বক্তব্য, গত ২০ দিনে তার অবস্থান, কল ডিটেইল রেকর্ড এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্যের পর আশরাফকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেয় পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, মহালক্ষ্মী খুনের সঙ্গে আশরাফের কোনও যোগসূত্র নেই। বরং প্রকৃত খুনি বর্তমানে বাংলায়। 

মহালক্ষ্মী তাঁর পরিবারের সাথে শেষবারের মতো দেখা করেছিলেন ১৯ অগাস্ট। মহালক্ষ্মীর পরিবার নেপালের হলেও গত ৩৫ বছর ধরে বেঙ্গালুরুতে বসবাস করছে। একই শহরে বসবাস করেও মহালক্ষ্মী তার মা, বোন বা ভাইয়ের সঙ্গে তেমন ঘনিষ্ঠ ছিল না। ৯ মাস আগে স্বামী হেমন্ত দাসের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর, মহালক্ষ্মী একটি ভাড়া বাড়িতে একাই থাকতে শুরু করে। 

২ সেপ্টেম্বর মহালক্ষ্মীকে খুন করা হয় বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছে পুলিশ। সেদিন তার মোবাইল বন্ধ ছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও পরবর্তী ১৯ দিন অর্থাৎ ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পরিবারের সদস্যরা কখনও মহালক্ষ্মীর কোনও খবর জানার চেষ্টা করেনি। অর্থাৎ ২১  সেপ্টেম্বর মহালক্ষ্মীর ঘর থেকে দুর্গন্ধ আসার অভিযোগ করলে বাড়িওয়ালা মহালক্ষ্মীর মাকে ডেকে পাঠায়। এরপরই মহালক্ষ্মীর দেহ উদ্ধার হয়। 
 

 

Advertisement