সম্প্রতি একটি খবর নাড়িয়ে দিয়েছিল সভ্য সমাজকে। আইফোন ১৪ কেনার জন্য আটমাসের শিশুকে মোটা টাকায় বিক্রি করেছিলেন উত্তর ২৪ পরগণার এক দম্পতি। আবার সন্তান বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এবার খোদ শহর কলকাতায়। ৪ লক্ষ টাকার বিনিময়ে নিজের ২১ দিনের কন্যাসন্তানকে বিক্রি করেছেন স্বয়ং মা। ঘটনাটি ঘটেছে আনন্দপুর থানার অন্তর্গত নোনাডাঙার রেল কলোনিতে। অভিযুক্ত মায়ের নাম রূপালি মণ্ডল।
জানা যাচ্ছে, রূপালি মণ্ডল নামে ওই মহিলা তাঁর ২১ দিনের শিশুকন্যাকে বিক্রি করে দিয়েছেন কল্যাণী গুহ নামে মেদিনীপুরের এক মহিলার কাছে। কল্যাণী গুহর বাড়ি মেদিনীপুরে হলেও কলকাতাতেও তাঁর একটি অস্থায়ী ঠিকানা ছিল। রূপালি তাঁর মেয়েকে চারজন মিডলম্যান মারফত কল্যাণীর কাছে বিক্রি করে দিয়েছে বলে অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে কিছুদিন আগে আনন্দপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। প্রতিবেশীরাই থানায় খবর দেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে ইতিমধ্যেই ছয় জনকে গ্রেফতার করেছে আনন্দপুর থানার পুলিশ। টানা জিজ্ঞাসাবাদে ভেঙে পড়েন শিশুর মা। শিশুকে বিক্রির কথা কবুল করেন।
জানা গেছে, কল্যাণী গুহ নিঃসন্তান, বেশ কয়েকদিন ধরে শিশু নেওয়ার জন্য খোঁজ করছিলেন। কল্যাণী গুহর কলকাতার ঠিকানা পর্ণশ্রী থানার সাতগ্রাম এলাকায়। সেসময়ই একজন এসে তাঁদের একটি সন্তান দিয়ে যান। বিশাল অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ওই দম্পতিকে শিশুটি বিক্রি করে ওই ব্যক্তি। আনন্দপুরের রূপালির সন্তান কীভাবে বিক্রি হল পর্ণশ্রীর কল্যণীর কাছে? এই নিয়ে সন্দেহ দানা বাঁধতে থাকে। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, একাধিক মিডলম্যান জড়িত ছিল এই ঘটনায়। পাটুলির রূপা দাস, স্বপ্না সর্দার,হরিদেবপুরের পূর্ণিমা কুণ্ডু ও বেহালার লালতি দে’র মারফত ছোট্ট ওই শিশুটি হাতবদল হতে হতে কল্যাণী গুহর কাছে পৌঁছয়। এই চারজন মিডলম্যানকেও পাকড়াও করেছে পুলিশ। এই হাতবদল হওয়ার নেপথ্যে একটি বড় র্যাকেট থাকতে পারে বলে সন্দেহ পুলিশের। কীভাবে ওই মিডলম্যানদের সঙ্গে রূপালি ও কল্যাণীর যোগাযোগ হল, এই চক্রের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত রয়েছে কি না, সেই সব দিকগুলি খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারী অফিসাররা।