আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে মৃত তরুণী চিকিৎসকের বাড়িতে সিবিআই। মঙ্গলবার এই মামলার প্রধান তদন্তকারী সীমা পাহুজার নেতৃত্বে ৩ সদস্যের এক প্রতিনিধিদল যায় নির্যাতিতার বাড়িতে। তরুণী চিকিৎসকের বাবা ও মায়ের সঙ্গে দেখা করে। প্রায় ২ ঘণ্টা বৈঠক চলার পর সন্ধে ৬.৩৫ নাগাদ বেরিয়ে যান আধিকারিকরা।
এই বৈঠকের পর চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেন মৃতা চিকিৎসকের বাবা ও মা। তাঁদের দাবি, সিবিআই তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করে, এই ঘটনায় একমাত্র সঞ্জয় রাই দোষী। দু ঘণ্টা ধরে এটাই তারা বলেছে।
নির্যাতিতার বাবা এই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বলেন, 'তদন্তকারীরা একটা জায়গাতেই আটকে রয়েছেন। তাঁরা বলছেন দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয় রাই একমাত্র দায়ী। প্রায় ২ ঘণ্টা ধরে এটাই বোঝানোর চেষ্টা করে চলেন। কিন্তু আমরা অন্য প্রমাণ দিয়েছি। এর পিছনে বৃহত্তর ষড়যন্ত্র রয়েছে। আমি তদন্তকারী অফিসারদের বলি, আমার মেয়ের সুবিচার মেলেনি। পেলে দক্ষিণ কলকাতার আইন কলেজে ওরকম ঘটনা ঘটত না আর। অপরাধীরা এমন জঘন্য অপরাধের সাহস দেখাত না। আমরা সিবিআই-এর ভূমিকায় সন্তুষ্ট নই।'
তিনি আরও অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সাহায্য করছে না। তবে কোথাও না কোথাও ন্যায়বিচার পাবেন বলেও আশাপ্রকাশ করেন। বলেন, 'আজ সীমা পাহুজা আমাদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। তিনি জানান, সঞ্জয় একা আমার মেয়েকে ধর্ষণ ও খুন করেছে। তবে আমাদের মনে হয় তদন্ত ঠিকমতো হচ্ছে না। আমরা আদালতে যাব। রাস্তায় নামব। তাহলে কোনও না কোনও রাস্তা নিশ্চয় বেরোবে। যদি সিবিআই-কে আদালত নির্দেশ দেয় তাহলে তাদের ভালোভাবে কাজ করতেই হবে। রাজ্য সরকার সাহায্য না করলে, প্রতিবাদ না হলে এই ব্যবস্থার কোনও পরিবর্তন হবে না। সেটা খুব বিপজ্জনক।'
নির্যাতিতার মা বলেন, 'আমার মেয়ের সঙ্গে সেদিন শেষ পর্যন্ত ৫ জন কনফারেন্স রুমে ছিলেন। মযনাতদন্তের রিপোর্টে উল্লেখ মৃত্যু হয়েছে ১২ টা থেকে ৬ টার মধ্যে। তাহলে অতটা সময় আমার মেয়ের সঙ্গে যারা ছিল তারা কেন অপরাধী হবে না। তাদের কেন হেফাজতে নেওয়া হবে না? এই প্রশ্নগুলো আমি তদন্তকারীদের কাছ থেকে জানতে চেয়েছি।'
২০২৪ সালের ৯ অগাস্ট আরজি কর হাসপাতালে এক তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনায় একমাত্র অভিযুক্ত হিসেবে গ্রেফতার হয় সিভিক ভলেন্টিয়ার সঞ্জয় রাই। সঞ্জয়কেই শিয়ালদহ আদালত দোষী সাব্যস্ত করে এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়।
তবে নির্যাতিতার মা-বাবার তরফে সঞ্জয়ের ফাঁসি চাওয়া হয়নি। প্রথম থেকেই তাঁরা অভিযোগ করে আসছেন, আরও অপরাধী রয়েছে। তাদেরও সাজা দিতে হবে।