শুক্রবার সকালে কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের একটি সেমিনার হলে যে স্নাতকোত্তর ইন্টার্ন চিকিৎসকের মৃতদেহ পাওয়া যায়, তাঁর শরীরে ১০টি আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। প্রাথমিক ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, নিহতের চোখ, মুখ, গোপনাঙ্গ, পেট, হাত এবং পায়ে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। গোপনাঙ্গ থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। ঘটনাস্থলে অর্ধনগ্ন অবস্থায় পাওয়া যায় মৃতদেহটি। গোলাপি কুর্তি ও সাদা ওপরের পোশাক পাশে পড়ে ছিল।
এছাড়াও, লাশের কাছে জিন্স ও অন্তর্বাস পাওয়া যায় এবং গোপনাঙ্গের কাছে একটি চুলের ক্লিপও খুঁজে পাওয়া গেছে।
ময়নাতদন্তের ফলাফল অনুযায়ী, ঘটনাটি আত্মহত্যার নয়, বরং যৌন নিপীড়নের পরে নৃশংস হত্যার ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, এই চিকিৎসকের ঘাড়ের হাড় ভেঙে যাওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে, যা শ্বাসরোধের মাধ্যমে হত্যার সম্ভাবনা নির্দেশ করছে। ঘটনার সময় হিসাবে ভোর ৩টা থেকে ৬টার মধ্যে সময়কাল উল্লেখ করা হয়েছে।
ঘটনাস্থলে কোনও সিসি ক্যামেরা না থাকায় পুলিশ অপরাধীর সঠিক পরিচয় জানার জন্য প্রাথমিক ময়নাতদন্তের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্টের অপেক্ষা করছে। এদিকে, নির্যাতিতার পরিবার ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে। ময়নাতদন্তের সময় নির্যাতিতার মা ও দুই মহিলা সাক্ষী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। পুরো প্রক্রিয়াটি ক্যামেরায় ধরা হয়। কলকাতা পুলিশের একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT) ইতিমধ্যেই গঠন করা হয়েছে।
এদিকে, হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তাররা অবিলম্বে অপরাধীদের গ্রেফতার এবং কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। তাঁরা আরও দাবি করেছেন, ডাক্তারদের জন্য রাতে ডিউটির সময় বিশ্রামের কোনও সুনির্দিষ্ট কক্ষ নেই এবং মহিলা ও পুরুষ ডাক্তারদের জন্য আলাদা টয়লেটেরও ব্যবস্থা নেই। নিরাপত্তার অভাবে তারা ভীষণ উদ্বিগ্ন এবং দ্রুত সুরক্ষার পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
এই ঘটনা হাসপাতাল চত্বরে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে, এবং চিকিৎসক ও শিক্ষানবিশদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে। তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে সবার নজর রয়েছে।