Shocking: ৩ কোটির বিমা, সরকারি চাকরির লোভ, ঘুমন্ত বাবার গায়ে সাপ ছাড়ল ছেলে

প্রায় ৩ কোটি টাকার বিমা এবং বাবার সরকারি চাকরি পাওয়ার লোভ। নিজের বাবাকে খুনের ছক কষল ছেলেরা। আর সেই খুনকে নিছক দুর্ঘটনার মোড়ক দিতে ব্যবহার করা হয়েছিল বিষধর সাপ। তামিলনাড়ুর তিরুভাল্লুর জেলার ঘটনা হার মানাবে থ্রিলার কাহিনীকেও।

Advertisement
৩ কোটির বিমা, সরকারি চাকরির লোভ, ঘুমন্ত বাবার গায়ে সাপ ছাড়ল ছেলেTiruvallur murder case: বিষধর সাপে বাবার মৃত্যু, বিমার টাকার লোভে ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্র
হাইলাইটস
  • প্রায় ৩ কোটি টাকার বিমা এবং বাবার সরকারি চাকরি পাওয়ার লোভ।
  •  নিজের বাবাকে খুনের ছক কষল ছেলেরা।
  • খুনকে নিছক দুর্ঘটনার মোড়ক দিতে ব্যবহার করা হয়েছিল বিষধর সাপ। 

প্রায় ৩ কোটি টাকার বিমা এবং বাবার সরকারি চাকরি পাওয়ার লোভ। নিজের বাবাকে খুনের ছক কষল ছেলেরা। আর সেই খুনকে নিছক দুর্ঘটনা হিসাবে দেখাতে ব্যবহার করা হল বিষধর সাপ। তামিলনাড়ুর তিরুভাল্লুর জেলার এই ঘটনা থ্রিলার সিনেমাকেও হার মানাবে। ঘটনাটি ঘটে গত ২২ অক্টোবর। তিরুভাল্লুরের পোথাথুরপেট্টাই এলাকায় নিজের বাড়িতেই মৃত অবস্থায় উদ্ধার হন ৫৬ বছরের গণেশ। পেশায় তিনি ছিলেন একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের ল্যাবরেটরি অ্যাসিস্ট্যান্ট। পরিবারের দাবি ছিল, রাতে ঘুমের মধ্যেই তাঁর গলায় সাপ কামড় দেয়। স্থানীয়রাও প্রথমে সেটিকেই দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু বলে ধরে নিয়েছিলেন। পুলিশও প্রাথমিকভাবে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছিল।

কিন্তু ঘটনার কয়েক দিনের মধ্যেই ছবিটা বদলাতে শুরু করে। একাধিক বিমা সংস্থা পুলিশকে জানায়, গণেশের নামে অস্বাভাবিক সংখ্যক বিমা রয়েছে। তদন্তে উঠে আসে, মোট ১১টি বিমা পলিসি করেছিলেন তিনি, যার মোট কভারেজ প্রায় ৩ কোটি টাকা। এক ব্যক্তির পক্ষে এতগুলি বিমা এবং এত বড় অঙ্কের কভারেজ স্বাভাবিক কি না, সেই প্রশ্ন থেকেই প্রথম সন্দেহ শুরু হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত্যুর কয়েক সপ্তাহ আগে গণেশ একটি দুর্ঘটনারও শিকার হয়েছিলেন। সেই ঘটনাও বিমা সংক্রান্ত নথিতে উল্লেখ ছিল। একের পর এক এমন অস্বাভাবিক বিষয় দেখেই উঠেপড়ে লাগেন তদন্তকারীরা। এরপরই তিরুভাল্লুর জেলা পুলিশের একটি বিশেষ দল গোটা বিষয়টি খুঁটিয়ে দেখতে শুরু করে।

তদন্তে বড় ভূমিকা নেয় প্রযুক্তি। কল ডিটেল রেকর্ড খতিয়ে দেখে পুলিশ জানতে পারে, মৃত্যুর ঠিক আগের কয়েক দিনে গণেশের দুই ছেলের সঙ্গে কয়েক জন বাইরের লোকের ঘন ঘন যোগাযোগ ছিল। সেই সূত্র ধরেই একে একে সামনে আসতে থাকে চাঞ্চল্যকর তথ্য। অভিযোগ, সাপ জোগাড় করার জন্যই ওই ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন তাঁর ছেলেরা। পরে রাতের অন্ধকারে পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘরের মধ্যেই বিষধর সাপ ছেড়ে দেওয়া হয়।

পুলিশের দাবি, ঘুমন্ত অবস্থায় গণেশের গলায় সাপ কামড় দেয়। ফলে বাইরের আঘাত বা ধস্তাধস্তির কোনও চিহ্ন পাওয়া যায়নি। পুরো ঘটনাটিকে দুর্ঘটনা হিসেবে সাজানোই ছিল মূল উদ্দেশ্য। কিন্তু বিমার অঙ্ক এবং আগের দুর্ঘটনার সূত্র ধরেই ভেঙে পড়ে সেই পরিকল্পনা।

Advertisement

টানা জেরা ও প্রযুক্তিগত প্রমাণের ভিত্তিতে পুলিশ ইতিমধ্যেই ছ’জনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন মৃতের দুই ছেলে, তাঁদের একজনের বয়স ২৯ বছর। পাশাপাশি যাঁদের মাধ্যমে সাপ সংগ্রহ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ, তাঁদেরও গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের আদালতে পেশ করে হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হবে। তদন্ত এখনও শেষ হয়নি, আরও কেউ যুক্ত রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এই ঘটনায় তিরুভাল্লুর জুড়ে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। নিজের সন্তানদের হাতেই বাবার এমন পরিণতি; এ প্রশ্ন শুধু আইনশৃঙ্খলা নয়, সামাজিক পরিস্থিতি নিয়েও ভাবাচ্ছে। বিমার টাকা ও সরকারি চাকরির লোভ যে কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে, এই ঘটনা যেন তারই এক নিষ্ঠুর উদাহরণ।  

POST A COMMENT
Advertisement