এক মহিলাকে খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে 'স্টোনম্যান' আতঙ্কে কাঁপছে আলিপুরদুয়ারের ফালাকাটা (Alipurduar Falakata)। ভবঘুরে ওই মহিলাকে পাথর দিয়ে নৃশংসভাবে মাথায় আঘাত করে খুন করার অভিযোগে এক যুবককে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃত যুবকের নাম আশরাফুল ইসলাম। ঘটনার জেরে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার রাতে পশ্চিম শালকুমার গ্রামে ফালাকাটা-মাদারিহাট রাজ্য সড়কের ধারে একটি যাত্রী প্রতীক্ষালয় থেকে মহিলার রক্তাক্ত দেহটি উদ্ধার করে পুলিশ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ২৬-২৭ বছরের ওই ভবঘুরে মহিলাকে ধর্ষণ করে পাথর দিয়ে থেঁতলে নৃশংসভাবে খুন করেছে দুষ্কৃতীরা। পুলিশ অবশ্য ময়নাতদন্তের (Post Mortem) রিপোর্ট হাতে আসার আগে ধর্ষণের তত্ত্বে মান্যতা দিচ্ছে না। এই বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার ভোলানাথ পান্ডে জানান, ওই মহিলাকে ধর্ষণ করা হয়েছে কি না তা এখনই বলা যাবে না। মৃতার দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় আশরাফুল নামে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। ধৃতকে ৫ দিনের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
মহিলার বাড়ি উত্তরপ্রদেশে?
স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, ওই মহিলা নিজেকে উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) বাসিন্দা বলে পরিচয় দিতেন। পুলিশ ওই মহিলার পরিচয় জানার চেস্টা করছে। এই প্রসঙ্গে, ছোট শালকুমার গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা তথা তৃণমূল (TMC) কিষাণ ক্ষেতমজদুর ইউনিয়নের জেলা সভাপতি প্রসেনজিৎ রায় বলেন, অত্যন্ত ঘৃণ্য কাজ। পাথর দিয়ে মাথা থেঁতলে খুন করার আগে ওই মহিলাকে ধর্ষণ করা হয়ে থাকতে পারে। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। এই ধরনের নৃশংস খুনের ঘটনায় যারাই যুক্ত থাকুক না কেন পুলিশকে তাদের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
স্থানীয় বাসিন্দারা আরও জানাচ্ছেন, ভবঘুরে ওই মহিলা সারাদিন এলাকায় ভিক্ষে করে রাজ্য সড়কের ধারে ওই যাত্রী প্রতীক্ষালয়ে রাত কাটাতেন। এলাকার কারও সঙ্গে তাঁকে কোনওদিন বিবাদে জড়াতেও দেখা যায়নি। তারপরেও ওই মহিলা কেন এভাবে খুন হলেন তা নিয়ে স্থানীয়রা রীতিমতো ধন্দে। তবে বাসিন্দারা অনেকেই মনে করছেন, ধর্ষণের চেষ্টায় বাধা দেওয়াতেই ওই মহিলাকে খুন করা হয়েছে।
মদের দোকানকে ঘিরে দুষ্কৃতীদের জমায়েত
জানা যাচ্ছে, ওই যাত্রী প্রতীক্ষালয়ের ঢিল ছোঁড়া দূরত্বেই রয়েছে একটি লাইসেন্সপ্রাপ্ত মদের দোকান (Wine Shop)। বাসিন্দাদের অভিযোগ, সন্ধ্যা নামলেই ওই মদের দোকানে স্থানীয় যুবক ও দুষ্কৃতীদের জমজমাট আড্ডার আসর বসে। গত কয়েকদিন ধরে রাতে বৃষ্টি হচ্ছে। সম্ভবত, রাতভর বৃষ্টির সুযোগ নিয়েই ওই মহিলাকে এভাবে খুন করা হয়ে থাকতে পারে লে অনুমান তাঁদের। এই প্রসঙ্গে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, বৃষ্টির সময় ওই মদের দোকানে আড্ডা আরও জমে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ওই মহিলাকে খুনের ঘটনায় এক বা একাধিক ব্যক্তির যোগসাজস থাকতে পারে। পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, ধৃত আশরাফুলের বিরুদ্ধে আগেও মদ্যপ অবস্থায় এলাকায় অশান্তি করারও অভিযোগ রয়েছে।