Panagarh Incident: পানাগড়ের ঘটনায় এখনও রহস্য, তরুণীর মৃত্যুতে ভাবাচ্ছে যে প্রশ্নগুলি

একের পর এক বড় প্রশ্নই এখন ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। তবে পুলিশ সূত্রে খবর, এখনও পুরোটাই প্রাথমিক স্তরে। এখনই এই নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত পৌঁছানো ঠিক হবে না বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা।

Advertisement
পানাগড়ের ঘটনায় এখনও রহস্য, তরুণীর মৃত্যুতে ভাবাচ্ছে যে প্রশ্নগুলিসুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়

পানাগড়ে সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যু ঘিরে একাধিক রহস্য। প্রথমে সহকর্মীরা ইভটিজিংয়ের দাবি করলেও, পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে তার উল্লেখ নেই কেন? পুলিশের প্রকাশিত দুইটি সিসিটিভি ফুটেজে সাদা SUV-র পিছনেই সুতন্দ্রাদের গাড়ি কেন? কেনই বা সাদা SUV-র কাউকে দীর্ঘ সময় পরেও খুঁজে পাওয়া গেল না? একের পর এক বড় প্রশ্নই এখন ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। তবে পুলিশ সূত্রে খবর, এখনও পুরোটাই প্রাথমিক স্তরে। এখনই এই নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত পৌঁছানো ঠিক হবে না বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা।

পেশায় নৃত্যশিল্পী সুতন্দ্রার বাড়ি হুগলির চন্দননগরে। মৃতার পরিবারের দাবি, সেদিন রাতে ইভটিজিংয়ের শিকার হয়েছিলেন সুতন্দ্রা। অভিযোগ কয়েকজন যুবক অপ্রকৃতিস্থ অবস্থায় কটূক্তি করেছিল সুতন্দ্রাকে। এমনকী তাঁর গাড়িকে ধাওয়াও করেছিল। কিন্তু পুলিশের দাবি, প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী ইভটিজিং-এর কোনও ঘটনা ঘটেনি। উল্টে অভিযুক্ত যুবকদের গাড়িটিকেই ধাওয়া করছিলেন সুতন্দ্রার গাড়ির চালক। তাঁদর কাছে নাকি এর প্রমাণ হিসাবে রয়েছে জাতীয় সড়কের বিভিন্ন মোড়ের সিসিটিভি ফুটেজ। প্রশ্ন উঠছে যদি সুতন্দ্রার গাড়ি অভিযুক্ত যুবকদের গাড়িকে ধাওয়া করেও থাকেন,তাহলে কি এটা ধরে নেওয়া যায় যে ইভটিজিং-এর কোনও ঘটনাই ঘটেনি? শুধুমাত্র সিসিটিভি ফুটেজের ভিত্তিতে কিভাবে এতবড় ঘটনার সিদ্ধান্তে পৌঁছে গেল পুলিশ? বিষয়টিতো এমনও হতে পারে যে প্রথমে ইভটিজিং-এর শিকার হয়েছিলেন সুতন্দ্রা। এরপর অভিযুক্তদের গাড়িটিকে ধাওয়া করেছিল সুতন্দ্রার গাড়ি?

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে একটি ছোট গাড়িতে করে চালক-সহ ৫ জন চন্দননগর থেকে গয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন সুতন্দ্রারা। বুদবুদে একটি পেট্রোল পাম্পে তেল ভরানোর পর থেকে পানাগড়ের কয়েকজন যুবক একটি ছোট গাড়িতে করে তাদের কটূক্তি করতে করতে পানাগড় পর্যন্ত ধাওয়া করে। পরে পানাগড় বাজারের রাইসমিল রোডের মুখে তাদের গাড়ি আটকাতে গেলে ভয়ে চন্দননগরের ওই ছোট গাড়িটি রাইস মিল রোডে দ্রুত গতিতে ঢুকিয়ে দিলে ছোট গাড়িটি প্রথমে একটি দোকানে ধাক্কা মারার পর রাস্তার ধারে বাথরুমে ধাক্কা মেরে পড়ে থাকা লোহার যন্ত্রাংশে ধাক্কা মেরে রাস্তার উপর উল্টে যায়। গাড়িতে থাকা মহিলার মৃত্যু হয় ঘটনাস্থলেই। বাকি চারজন অল্প বিস্তর আহত হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে কাঁকসা থানার পুলিশ। পুলিশ দুটি গাড়িকে আটক করার পাশাপশি দেহ উদ্ধার করে সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি মহকুমা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। অন্যদিকে অভিযুক্ত যুবক যারা কটূক্তি করছিল তাদের সন্ধান চালাচ্ছে পুলিশ।

Advertisement

 পানাগড়ে দুর্ঘটনায় মহিলার মৃত্যুর ঘটনায় কাঁকসা থানায় সাংবাদিক সম্মেলন করে মহিলাকে ইভটিজিং করার বিষয়ে অস্বীকার করেন আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের সিপি সুনীল কুমার চৌধুরী।তিনি জানিয়েছেন,বুদবুদের আগে একটি পেট্রোল পাম্পে ওই মহিলার গাড়ি তেল ভরে তারা গয়ার উদ্যেশ্যে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে এগোতে থাকেন।পানাগড় ঢোকার মুখে পানাগড়ের যুবকদের সাদা গাড়িটি আগে ঢোকে।তার পিছনে মহিলার গাড়ি ধাওয়া করে।পরের একটি সিসিটিভি ফুটেজে দুর্ঘটনাস্থল এর কয়েক মিটার দূরের একটি ভিডিও দেখিয়ে জানান সেখানেও মহিলার গাড়ি ধাওয়া করে পানাগড়ের যুবকদের গাড়ি সেটাই স্পষ্ট দেখা গেছে।পারাজ থেকে পানাগড় পর্যন্ত মাঝে কি ঘটেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। গাড়িতে কতজন ছিলো তাদের পরিচয় পেয়ে তাদের খোঁজ চালানো হচ্ছে।

বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। তাঁর মতে এই ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়। অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিৎ। কিন্তু একইসঙ্গে তাঁর দাবি, পুলিশ তদন্ত করে দেখেছে ইভটিজিং-এর ঘটনা ঘটেনি। এটা একটা ন্যারেটিভ তৈরি করা হচ্ছে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে।

সংবাদদাতাঃ অনিল গিরি, রাজেশ সাহা, ভোলানাথ সাহা

POST A COMMENT
Advertisement