বস্তায় শিশুর মৃতদেহ। আর ঠিক তার পাশেই রান্না করছিল অভিযুক্ত অলোক। তিলজলাকাণ্ডে সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশ সূত্রে খবর, তান্ত্রিকের পরামর্শ মতোই শিশুকে খুন করে অলোক। তার বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগও উঠেছে। তবে ময়নাতদন্তের পরই এই অভিযোগের সত্যতা জানা যাবে।
রবিবার সকাল আটটা। তিলজলার ওই সাত বছরের নাবালিকা ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে ময়লা ফেলতে যায়। তারপর আর তাকে দেখা যায়নি। মেয়ে ফিরছে না দেখে, পরিবারের সদস্যরা চিন্তিত হয়ে পড়েন। থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। পুলিশ প্রথমে সিসিটিভি চেক করে। পুলিশ সূত্রে খবর, সেখানে দেখা যায়, শিশুটি ময়লা ফেলে ফের আবাসনেই ঢোকে। তখন পুলিশ সেই আবাসনের ফ্ল্যাটগুলিতে তল্লাশি চালাতে শুরু করে। সেই ফ্ল্যাটেই অভিযুক্ত অলোক বসবাস করত। পুলিশকর্মীরা যখন অলোকের ফ্ল্যাটে যান, তখন দেখেন অলোক রান্না করছে। সেই রান্নাঘরেই একটা বস্তা রাখা। সেই বস্তা খুলতেই চক্ষু চড়কগাছ পুলিশকর্মীদের। বস্তার ভিতর থেকে উদ্ধার হয় নাবালিকার ক্ষতবিক্ষত দেহ।
আরও পড়ুন : 'আপনার কথা অযৌক্তিক, সরকারি কর্মীদের বঞ্চনা কেন?', CM-কে চিঠি ডিএ আন্দোলনকারীদের
পুলিশ সূত্রে খবর, শিশুটিকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়। তাঁর মাথায় হাতুড়ি বা ওই জাতীয় কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়। আবার শ্বাসরোধের অভিযোগও উঠে আসছে। তাঁর দেহেও একাধিক ক্ষত মিলেছে। তদন্তকারীদের প্রাথমিকভাবে অনুমান, শিশুটির শরীরে সূঁচ বা ওই জাতীয় কিছু ফোটানো হয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, শিশুর উপর যৌন নির্যাতনও চালায় অলোক। তারপর তাকে খুন করে। যদিও পুলিশ এই বিষয়ে এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলতে নারাজ।
এদিকে রবিবারই অলোককে গ্রেফতার করে পুলিশ। আর তাকে জেরা করে বিস্ফোরক সব তথ্য হাতে আসে তদন্তকারীদের। সূত্রের খবর, অলোক কুমার কোনও এক তান্ত্রিকের পরামর্শ মতো সেই শিশুকে খনু করে। কারণ, অলোকের স্ত্রী সন্তানের জন্ম দিতে পারেননি। বিহারের এক তান্ত্রিক সন্তান লাভের জন্য অলোককে নরবলি দিতে বলেছিলেন। সেই মতোই নাকি নরবলি দেয় অলোক।
কে এই অলোক ?
পুলিশ সূত্রে খবর, অলোক বিহারের বাসিন্দা। সে কলকাতার কোনও এক গ্যাস সিলিন্ডার কোম্পানিতে কাজ করত। ২০১৪ সালে অলোক কলকাতায় আসে। সেই থেকে ওখানেই আছে। সে তান্ত্রিকের পরামর্শ মতো নিজে সন্তান পেতে এই চরম পদক্ষেপ নেয়।
এই বিষয়ে এক পুলিশ আধিকারিক জানান, অভিযোগ মিলেছে। পুলিশ তদন্তে নেমেছে। নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে। তবে বাকি যে অভিযোগ উঠছে সেগুলো ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না এলে বোঝা যাবে না।