প্রতীকী ছবি পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলার একটি সালিশি সভায় ছুরির কোপে এক তৃণমূল কর্মীকে খুনের অভিযোগ। মৃতের নাম একরামুল শেখ (৪৫)। গুরুতর আহত হয়েছেন আরও ৫ জন। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার রাতে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কালিয়াচক থানা এলাকার রাজনগরে বসেছিল এই সালিশি সভা। জমিতে ট্রাক্টর চালানো নিয়ে বিবাদকে কেন্দ্র করে বসেছিল এই সভাটি। যা মুহূর্তের মধ্যেই হিংসাত্মক আকার ধারণ করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েকদিন ধরেই বিবাদ চলছিল তৃণমূল কর্মী একরামুল এবং স্থানীয় তৃণমূলের বুথ সভাপতি শামসুল শেখের মধ্যে। দু'পক্ষই এর আগে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিল। তবে পরিবারের অভিযোগ, পুলিশ কোনও অভিযোগ দায়ের করতে চায়নি। এরপর গত মঙ্গলবার, ভুট্টার খেতে ট্রাক্টর চালানোর জন্য তা নষ্ট হয়ে যায়। বিবাদ আরও বাড়ে। শেষ পর্যন্ত দুই পক্ষের মধ্যে সমস্যা মেটাতে গ্রামে একটি সালিশি সভা ডাকা হয়।
বৃহস্পতিবার রাজনগর মডেল মাদ্রাসায় বসে এই সালিশি সভা। শুনানির সময়ে সামশুলকে কান ধরে ওঠবোস করতে নিদান দেওয়া হয়। এতেই চটে লাল হন তৃণমূলের বুথ সভাপতি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ক্ষুব্ধ শামসুল একটি ধারাল অস্ত্র দিয়ে একরামুলকে একাধিকবার আঘাত করেন।
একরামুলের শরীরে একাধিক ক্ষত হয়েছে। শামসুলের আকস্মিক এই এলোপাথাড়ি হামলায় ধারাল অস্ত্রের আঘাত লেগেছে সালিশি সভায় উপস্থিত আরও ৫ জনের। একরামুলকে স্থানীয়রা দ্রুত উদ্ধার করে মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। তবে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব বলেন, 'ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত পৌঁছয় পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে একাধিক পুলিশ মোতায়েন করা হয় এলাকায়।' এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৭ জনকে আটক করা হয়েছে।
BJP-র জেলা সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায় বলেন, 'আইনশৃঙ্খলা ধ্বংস হয়ে গিয়েছে এ রাজ্যে, এই ঘটনাই তার প্রমাণ। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর এখানে কোনও পুলিশ প্রশাসন নেই। পুলিশ তৃণমূলের নেতাদের সেবায় ব্যস্ত। সে কারণেই সাধারণ মানুষকে বাধ্য হয়ে সালিশি সভার দ্বারস্থ হতে হচ্ছে নিজেদের বচসা মেটাতে। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।'
তৃণমূল নেতা বিশ্বজিৎ ঘোষ এই ঘটনাকে পারিবারিক বিবাদ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, 'যখনই কোনও ঘটনা ঘটে BJP তৃণমূলকে টেনে আনার চেষ্টা করে সেখানে। এই ঘটনা অনভিপ্রেত এবং পুলিশ দ্রুতই যথাযথ পদক্ষেপ করবে।'