দুই প্রতিবেশী চিন ও পাকিস্তানের সঙ্গে যুঝতে আরও শক্তিশালী হচ্ছে ভারতীয় বায়ুসেনা। তার অঙ্গ হিসাবেই বিমানবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ৮৩টি 'তেজস মার্ক-১এ' লাইট কমব্যাট এয়ারক্র্যাফট(এলসিএ)।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ জানিয়েছেন, ৮৩টি তেজস মার্ক-১এ কেনার জন্য খরচ হচ্ছে ৪৮ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে দশটি বিমান ট্রেনিং দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হবে।
তেজসের এই নয়া সংস্করণ আগামী দিনে ভারতীয় বায়ুসেনার মেরুদণ্ড হবে। আগামী ৬ থেকে ৭ বছরের মধ্যে তেজস মার্ক-১এ স্কোয়াড্রনগুলি ভারতীয় বায়ুসেনায় যোগ দেবে। এই মুহূর্তে নতুন প্রযুক্তিতে তৈরি এই বিমানে পঞ্চাশ শতাংশ ভারতীয় জিনিস ব্যবহার করা হয়েছে। পরে যন্ত্রাংশ তৈরির ক্ষেত্রে আরও বেশি করে ভারতীয় জিনিস ব্যবহারের চেষ্টা হবে। তবে ইঞ্জিন মার্কিন সংস্থা জেনারেল ইলেকট্রনিক্সের।
হিন্দুস্থান অ্যারোনেটিকস লিমিটেড বা হ্যাল-এর কাছ থেকে তেজস মার্ক ওয়ান সংস্করণের এই যুদ্ধবিমানগুলি কিনবে কেন্দ্র। ৮৩টি লাইট ওয়েট কমব্যাট এয়ারক্রাফ্ট তেজস কেনার ব্যাপারে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজে।
প্রয়োজনের তুলনায় ভারতীয় বায়ু সেনারকাছে ফাইটার জেট কম রয়েছে। অনেকদিন ধরেই প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সঙ্গে এই নিয়ে আলোচনা চলছিল বায়ু সেনার প্রধানের। বছর তিনেকের মধ্যে এই 83 LCA Tejas চলে আসবে ভারতীয় বায়ু সেনার কাছে। ভারতীয় বায়ু সেনার কাছে এখন ৩০টি ফাইটার স্কোয়াড্রন রয়েছে। প্রয়োজন যেখানে ৪০টি ফাইটার স্কোয়াড্রন-এর। প্রতিটি স্কোয়াড্রনে ১৮টি করে যুদ্ধবিমান থাকে। দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি লাইট কমব্যাট এয়ারক্রাফট তেজস সেই ঘাটতি পূরণ করবে।
মিগ-২১ বিমানগুলির দুর্দশা নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠেছে। এবার মিগ-এর জায়গা নেবে তেজস। ২২২২ কিমি প্রতি ঘণ্টা সর্বোচ্চ গতি তুলতে পারে তেজস। মাঝ আকাশে জ্বালানিও ভরতে পারে এই বিশেষ বিমান। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং জানিয়েছেন, এই বিমান ভারতের সামরিক ক্ষেত্রে গেমচেঞ্জার হয়ে উঠতে পারে।
তেজস যুদ্ধবিমান বায়ু থেকে বায়ু, বায়ু থেকে স্থলেও ক্ষেপণাস্ত্র চালাতে পারে। এই যুদ্ধবিমানে অ্যান্টিশিপ ক্ষেপণাস্ত্র, বোমা ও রকেট যুক্ত করা যেতে পারে। তেজস যুদ্ধবিমান ৪২ শতাংশ কার্বন ফাইবার, ৪৩ শতাংশ অ্যালুমিনিয়াম খাদ এবং টাইটানিয়াম দিয়ে তৈরি। তেজস একটি দেশীয় ফোর্থ জেনারেশনের যুদ্ধ বিমান। এটি চতুর্থ প্রজন্মের সুপারসনিক যুদ্ধবিমান। একদিকে এটি যেমন হালকা, অন্যদিকে এটি সবচেয়ে ছোট। এরফলে এটি সহজেই যুদ্ধক্ষেত্রে মোকাবিলা করতে সক্ষম। তেজস ফাইটার জেট মোট ৫,৩০০ কেজির অস্ত্র বহনে সক্ষম।