
দিল্লিতে লাল কেল্লার সামনে যে বিস্ফোরণটি ঘটল, তা সম্ভবত ফিদায়েঁ হামলা। এবং এই ভয়াবহ আত্মঘাতী বিস্ফোরণের পিছনে চিকিত্সক মহম্মদ উমরের প্ল্যান রয়েছে বলে সূত্রের খবর।

ফরিদাবাদে যে জঙ্গি মডিউলের হদিশ মিলেছে, তার সঙ্গে লালকেল্লার সামনের এই বিস্ফোরণের যোগ থাকতে পারে বলে গোয়েন্দা সূত্রের খবর।

মুজাম্মিল গ্রেফতার হওয়ার পরেই তার মধ্যে একটি ভয় দেখা গিয়েছিল তার চোখেমুখে। ফরিদাবাদে সন্ত্রাস মডিউলের মূল অভিযুক্ত আরেক ডাক্তার মুজাম্মিল সাকিলেরও একই রকম আতঙ্ক চোখে পড়ে। ওদিকে ভয় পেয়ে গিয়েছিল উমরও।

গোয়েন্দাদের এক সূত্র জানিয়েছেন, উমর সম্ভবত ইচ্ছাকৃতভাবে বিস্ফোরক বোঝাই হুন্ডাই i20 গাড়িটি দিল্লির লালকেল্লা মেট্রো স্টেশনের গেট নম্বর ১-এর কাছে উড়িয়ে দেয়। ভয়াবহ ওই বিস্ফোরণে ১০ জনের বেশি মৃত্যু হয়েছে এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।

গোয়েন্দা সূত্রের খবর, গাড়িটি জনবহুল এলাকায় ঢোকার আগেই বিস্ফোরক বসানো হয়। সন্ধ্যা ৬টা ৫২ মিনিট নাগাদ গাড়িটি ভয়াবহ শব্দে বিস্ফোরিত হয়, আশপাশের যানবাহনেও আগুন ধরে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের তীব্রতায় রাস্তার আলো নিভে যায়, শিখা কয়েক ফুট উঁচুতে উঠে যায়।

তদন্তকারীদের দাবি, সন্দেহভাজন জঙ্গি মহম্মদ উমর সম্ভবত গাড়ির ভেতরেই ছিল। সিসিটিভি ফুটেজে তাকে বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টা আগেও গাড়ির মধ্যে দেখা গেছে। সূত্রের দাবি, বিস্ফোরণের সময় গাড়িতে উমর একাই ছিল।

গোয়েন্দা সূত্রের আরও দাবি, উমর এই হামলার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করে তার দুই সহযোগীর সঙ্গে। ফরিদাবাদ মডিউলের সদস্য মুজাম্মিল সাকিলের গ্রেফতারের পর উমর বুঝতে পারে, তার গোপন ঘাঁটি ফাঁস হয়ে গিয়েছে। এরপরই তিনি আত্মসমর্পণের বদলে আত্মঘাতী হামলার পথ বেছে নেয়।

তদন্তকারীদের ধারণা, গাড়িতে ANFO (অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ও ফুয়েল অয়েল মিশ্রণ) ব্যবহার করা হয়েছিল, যা সাধারণত বিস্ফোরণে ব্যবহৃত হয় এবং অত্যন্ত দাহ্য।

গাড়ির ভেতর থেকে যে দগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়েছে, সেটি উমরের কিনা তা নিশ্চিত করতে ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে। উমর গত কয়েক মাস ধরে পলাতক ছিল এবং উত্তর ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে জঙ্গি অর্থ জোগান ও অস্ত্র পাচার মামলায় অভিযুক্ত ছিল।

গোয়েন্দাদের মতে, লালকেল্লা বিস্ফোরণের পিছনে মূল সংগঠক ফরিদাবাদ মডিউল। পুলওয়ামার তারিক, যে গাড়িটি কিনেছিল, তার ভূমিকা নিয়েও তদন্ত চলছে।

পুলিশ জানতে পেরেছে, হামলার আগে গাড়িটি একাধিকবার মালিকানা বদল করে। প্রথমে ছিল মহম্মদ সলমনের নামে, পরে নাদিম, তারপর ফরিদাবাদের ‘রয়্যাল কার জোন’ নামে এক সেকেন্ড হ্যান্ড কার ডিলারের কাছে বিক্রি করা হয়। শেষ পর্যন্ত তা তারিকের মাধ্যমে উমরের হাতে পৌঁছয়।

তদন্তকারীদের মতে, এই মালিকানা বদলের শৃঙ্খল ছিল হামলার প্রকৃত ব্যবহার গোপন রাখার ছক।

বর্তমানে গোয়েন্দা সংস্থা বিস্ফোরণে ব্যবহৃত বিস্ফোরক, গাড়ির যাত্রাপথ ও সংশ্লিষ্ট যোগাযোগের ওপর নজর দিচ্ছে।

প্রাথমিক অনুমান, ফারিদাবাদ মডিউল থেকেই সরবরাহ করা হয়েছিল বিস্ফোরক ও ডেটোনেটর।