নাগাড়ে চলা বৃষ্টির জেরে দিল্লিতে বিপজ্জনক পরিস্থিতি। যমুনা নদীর জল মঙ্গলবার সকালে বিপদসীমা অতিক্রম করে গিয়েছে। এর ফলে বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে রাজধানীতে। অপেক্ষাকৃত নীচু এলাকায় বাড়ির ভিতর জল ঢুকে গিয়েছে। আগ্রার পরিস্থিতিও শোচনীয়। তাজমহলের সামনে জল থইথই অবস্থা দেখা গিয়েছে। অন্যদিকে, পঞ্জাবের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা। একাধিক মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে।
বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তর ভারত। জলের নীচে অধিকাংশ রাস্তা। রাজ্যে রাজ্যে জারি রেল অ্যালার্ট। একাধিক বাড়িঘর ভেসে গিয়েছে জলে। মৃত্যু হয়েছে অনেকের। উত্তরাখণ্ড, জম্মু-কাশ্মীরে বহু মানুষ এখনও নিখোঁজ।
মেঘ ভাঙা বৃষ্টি এবং হড়পা বানের জেরেই বিধ্বস্ত পরিস্থিতি উত্তর ভারতের রাজ্যগুলিতে। পঞ্জাবে ২৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয় হারিয়েছেন। দিল্লি এবং NCR এলাকাতেও একই পরিস্থিতি। মানুষের ঘরে ঢুকে গিয়েছে জল। বাধ থেকে নাগাড়ে জল ছাড়া হচ্ছে এর মধ্যেই। আগামী ৭ দিন অন্তত এইরকম আবহাওয়ার কোনও পরিবর্তন হবে না বলেই আশঙ্কারবাণী শুনিয়েছে মৌসম ভবন।
উত্তরপ্রদেশ, জম্মু-কাশ্মীর, গুরুগ্রাম, পঞ্জাব, চণ্ডিগড়ে মঙ্গলবার স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গুরুগ্রামে প্রবল বৃষ্টির জেরে সোমবার ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তায অসম্ভব যাবনজটের সৃষ্টি হয়েছিল। সে দৃশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। গুরুগ্রামের চাকরিজীবীদের ওয়ার্ক ফ্রম হোম করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দিল্লি-NCR এলাকার একাধিক গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা এবং জম্মু-কাশ্মীর ও উত্তরাখণ্ডের মধ্যে যাতায়াতের রাস্তা ব্লক হয়ে গিয়েছে বন্যার জন্য। রাস্তায় নেমেছে ধস, ভেঙে পড়েছে বোল্ডার।
বাধ থেকে জল ছাড়া এবং নাগাড়ে চলা বৃষ্টির জেরে পঞ্জাবের ১০টি জেলায় বন্যা হয়েছে। অগাস্টে পঞ্জাবে বৃষ্টি হয়েছিল ২৫৩.৭ মিলিমিটার। যা স্বাভাবিকের থেকে ৭৪ শতাংশ বেশি এবং গত ২৫ বছরের মধ্যে সর্বাধিক।
বাধ থেকে জল ছাড়া এবং নাগাড়ে চলা বৃষ্টির জেরে পঞ্জাবের ১০টি জেলায় বন্যা হয়েছে। অগাস্টে পঞ্জাবে বৃষ্টি হয়েছিল ২৫৩.৭ মিলিমিটার। যা স্বাভাবিকের থেকে ৭৪ শতাংশ বেশি এবং গত ২৫ বছরের মধ্যে সর্বাধিক।
গত কয়েকদিনের মধ্যে প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরে কেবলমাত্র জম্মু-কাশ্মীরেই ৫০ জনের বেশি মারা গিয়েছেন। গত ৮ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে জম্মু-শ্রীনগর জাতীয় সড়ক।
মাটি ধসে যাচ্ছে রাজৌরি, সাম্বা জেলায়। নাগাড়ে বৃষ্টির জেরে ১৯টি পরিবারকে এলাকা থেকে রাতারাতি সরানো হয়েছে। ডোডাতে ৫০০টি ঘর ভেঙে গিয়েছে প্রবল বৃষ্টিতে।
মেঘ ভাঙা বৃষ্টির জেরে উত্তরাখণ্ডে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। পার্বত্য এলাকা থেকে ৬৯ জন নিখোঁজ। অগাস্ট জুড়ে একের পর এক মেঘ ভাঙা বৃষ্টি হয়েছে উত্তরাখণ্ডে।
ধস এবং হড়পা বানের জেরে উত্তর ভারতের রাজ্যগুলিতে ভেসে গিয়েছে একাধিক বাড়িঘর। মানুষ এবং পশুপাখি ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে গিয়েছে। লাল সতর্কতা জারি করেছে মৌসম ভবন।
উত্তর ভারত জুড়ে চলতি সপ্তাহ জুড়ে বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে বলেই জানিয়েছে IMD। দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাব, উত্তরাখণ্ড, জম্মু-কাশ্মীর এবং হরিয়ানাতে প্রবল ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।
ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে জম্মু-কাশ্মীর, উত্তরাখণ্ড, দিল্লি, লাদাখ, হিমাচলপ্রদেশ, পঞ্জাব, হরিয়ানা, চণ্ডিগড়, রাজস্থান এবং উত্তরপ্রদেশে।