আধ খাওয়া খাবারগুলি ছড়িয়ে রয়েছে। চটি, জুতো, ব্যাগ। তারই মধ্যে চাপ রক্ত জমাট বাঁধা। দেহগুলি ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে। সব ছবি সৌজন্য: India Today
উল্টে যাওয়া বগির মধ্যে থেকে কোনও একটি হাত একটু নড়ছে। অপেক্ষা করছে, তাঁকে যদি কেউ উদ্ধার করে, বেঁচে যেতে পারেন।
দুর্ঘটনার অভিঘাতে ট্রেনে আগুন লেগে যাওয়ায় অনেকে জীবন্ত পুড়ে মারা গিয়েছেন ট্রেনেই। সেই ঝলসে যাওয়া দেহগুলিও পড়ে রয়েছে বগিগুলিতে।
দেশলাই বাক্সের মতো বগিগুলি একটার উপরে আরেকটা উঠে গিয়েছে। এখনও উল্টে যাওয়া বগিগুলিতে এমার্জেন্সি অ্যালার্ম বেজে চলেছে।
বাঁচার আশায় এমার্জেন্সি অ্যালার্ম বাজিয়েছিলেন অনেক যাত্রী। শুক্রবার সন্ধে ৬টা ৫১ মিনিটে দুর্ঘটনাটি ঘটে। বালেশ্বরে দুর্ঘটনা এলাকা মৃত্যুপুরী।
দুর্ঘটনাগ্রস্থ হয়েছে ১২৮৪১ শালিমার-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। সন্ধ্যা ৭টা বেজে ৮ মিনিট নাগাদ প্রথম এই দুর্ঘটনার খবর আসে।
জানা গিয়েছে, সকাল ৯টা বেজে ১৫ মিনিট নাগাদ ট্রেনটি শালিমার স্টেশন থেকে ছাড়ে। বালেশ্বরের কাছে বাহানাগা স্টেশনের কাছে এই ট্রেনটি দ্রুতগতিতে সামনে থেকে আসা একটি মালগাড়ির উপর উঠে পড়ে।
বালেশ্বরে ট্রেন দুর্ঘটনায় ইতিমধ্যেই প্রচুর পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দার মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। বাসন্তীর ৫ বাসিন্দার মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে।
এদের মধ্যে একই পরিবারের তিন সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। তিন ভাই হারান গায়েন, নিশিকান্ত গায়েন, দিবাকর গায়েনের মৃত্যু হয়েছে ট্রেন দুর্ঘটনায়।
এরা সকলেই পরিযায়ী শ্রমিক। অন্ধ্রপ্রদেশে ধান রোয়ার কাজে যাচ্ছিলেন। এর আগেও একাধিক বার গিয়েছিলেন। এ ছাড়াও এই বাসন্তীর ছরানেখালি গ্রামের আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের নাম বিকাশ হালদার, সঞ্জয় হালদার।
হাওড়ায় হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে। এক নজরে হেল্পলাইন নম্বর: 22933 ও BSNL No. 033-26413660। প্রথমে করমণ্ডল এক্সপ্রেসই তীব্র গতিতে গিয়ে ধাক্কা মারে একই লাইনে আগে আগে চলতে-থাকা একটি মালগাড়ির পিছনে। দুর্ঘটনার অভিঘাতে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনটি মালগাড়ির উপরে উঠে যায়।
২৩টি কামরার মধ্যে ১৫টি কামরা লাইন থেকে ছিটকে পড়ে পাশের ডাউন লাইনে ও নয়ানজুলিতে। সেই লাইন দিয়ে তখন আসছিল ডাউন বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের লাইনচ্যুত কামরাগুলি গিয়ে পড়ে ডাউন লাইনের উপর। বেঙ্গালুরু-হাওড়া ডাউন ট্রেনটি সেই বেলাইন কামরাগুলির উপর এসে পড়ে। হাওড়াগামী সেই ট্রেনটিরও দু’টি কামরা লাইনচ্যুত হয়।