স্বাধীন ভারতে প্রথম মহিলা হিসেবে ফাঁসি হতে পারে উত্তরপ্রদেশের শবনম আলির (৩৮)। যে প্রেমিকের সঙ্গে ২০০৮ সালে নিজের পরিবারের সদস্যদের খুনের ঘটনায় দণ্ডিত হয়েছে।
ইতিমধ্যে শবনমের প্রাণভিক্ষার আর্জি খারিজ করে দিয়েছেন রাজ্যপাল এবং রাষ্ট্রপতি। মৃত্যু পরোয়ানা জারির পরই সম্ভবত তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে।
আপাতত রামপুর জেলা সংশোধনাগারের আছেন শবনম। সংশোধনাগারের জেলার রাকেশ কুমার বর্মা জানিয়েছেন, ফাঁসির যাবতীয় প্রস্তুতি হয়ে গিয়েছে। মহিলাদের ফাঁসি দেওয়ার নিয়ম মোতাবেক শবনমকে মথুরা জেলা সংশোধনাগারে স্থানান্তরিত করার জন্য আমরোহা জেলা প্রশাসনকে আর্জি জানানো হয়েছে।
স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে প্রথম কোনও মহিলাকে ফাঁসি দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে ইতিমধ্যে । আমরোহার (Amroha) শবনমই (Shabnam) হল সেই মহিলা যার ফাঁসি হবে ৷
দেশে মহিলাদের ফাঁসির জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে উত্তরপ্রদেশের মথুরায়। সেখানে ইতিমধ্যে প্রস্তুতিও শুরু করা হয়েছে। নির্ভয়া মামলায় দোষীদের ফাঁসি দিয়েছিলেন মিরাটের পবন জল্লাদ ৷
ইতিমধ্যেই উত্তরপ্রদেশের মথুরার ফাঁসির জায়গাটি পরিদর্শন করেছেন৷ পবন জল্লাদ, তবে ফাঁসির দিনটি এখনও নির্ধারিত হয়নি।
শবনমের ফাঁসি নিয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন জল্লাদ। পাশাপাশি দড়ি পরীক্ষার মতো ফাঁসির বিভিন্ন নিয়ম মেনে প্রস্তুতিও সারছেন।
পবন এর আগে নির্ভয়ার চারজন দোষীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছিলেন। এবার শবনমের ফাঁসির দায়িত্ব তাঁর কাঁধেই থাকবে। শবনমের শাস্তি যথাযথ, এমনই জানিয়েছেন পবন।
পবন আরও জানিয়েছেন, লখনউ থেকে শবনমের ডেথ ওয়ারেন্ট এলেই তিনি ফাঁসির চূড়ান্ত প্রস্তুতি শুরু করে দেবেন।
দাদু কালু জহ্লাদের কাছে হাতেখড়ি পবনের। তিহাড় জেলে প্রশিক্ষণও নিয়েছিলেন তিনি। বংশপরম্পরায় পবনরা ফাঁসুড়ে। পবনের দাদু কালু একটা সময় ইন্দিরা গান্ধীর হত্যাকারী সতবন্ত সিং,কুখ্যাত রঙ্গা বিরলাদের ফাঁসি দিয়েছিলেন। কিন্তু পবনই প্রথম একসঙ্গে চারজনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছিলেন। আর এবারও পবন প্রথম যিনি স্বাধীন ভারতে প্রথম কোনও মহিলা অপরাধীর ফাঁসি দেবেন।
কী কারণে ফাঁসির মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হচ্ছে?
ইংরেজি এবং ভূগোলে স্নাতকোত্তর করে গ্রামের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াত শবনম। তারইমধ্যে সেলিমের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাতে আপত্তি ছিল শবনমের পরিবারের। ২০০৮ সালের ১৪ এপ্রিল প্রেমিকের সঙ্গে পরিকল্পনা করে নিজের বাবা, মা, দুই ভাই, দুই বৌদি এবং ১০ মাসের ভাইপোকে খুন করেছিল শবনম।
প্রাথমিকভাবে শবনম দাবি করেছিল, অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা হামলা চালিয়েছে। যদিও পরে স্বীকার করে, মাদকজাতীয় কোনও দ্রব্য মিশ্রিত দুধ খাইয়েছিল পরিবারের সদস্যদের। তারপর খুন করেছিল।