লাদাখের সিয়াচেনে তুষারঝড়ে শহিদ ৩ সেনা জওয়ান। টহলদারির সময় জওয়ানরা তুষারঝড়ের কবলে পড়েন। পৃথিবীর সবথেকে উঁচু যুদ্ধক্ষেত্র এই সিয়াচেন। ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ঠান্ডাতে থাকতে হয় জওয়ানদের। ফলে প্রবল ঝুঁকির মুখে পড়তে হয়।
শহিদ জওয়ানরা মাহার রেজিমেন্টের অংশ ছিলেন। তাঁরা গুজরাত, ঝাড়খণ্ড ও উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। টহল দেওয়ার সময় সেখানে তুষারঝড় শুরু হয়। তাতে আটকে পড়েন ৫ জন। তাঁদের মধ্যে একজন ক্যাপ্টেনও ছিলেন। তাঁকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এদিকে খবর পেয়ে উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। এই অঞ্চলে হাজারেরও বেশি জওয়ান শহিদ হয়েছেন। কারাকোরাম পর্বতমালায় ২০ হাজার ফুট উচ্চতায় অবস্থিত সিয়াচেন হিমবাহ। এবার যে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে সেটা বেস ক্যাম্পের কাছে ১২ হাজার ফুট উচ্চতায়।
এই অঞ্চলে জওয়ানদের কেবল শত্রুর বিরুদ্ধেই নয়, প্রকৃতির বিরুদ্ধেও লড়তে হয়। ১৯৮৪ সালে অপারেশন মেঘদূত শুরু হওয়ার পর থেকে ভারত সিয়াচেনের উপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে। সেনাবাহিনী সূত্রে খবর, বিশেষজ্ঞ তুষারধস উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। যাঁরা তুষারে চাপা পড়ে রয়েছেন, তাঁদের উদ্ধারের চেষ্টা জারি রয়েছে। আহতদের সরিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য চিতা এবং Mi-17 এর মতো সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, সিয়াচেনে এই ধরনের জরুরি অবস্থার জন্য সেনাবাহিনী সর্বদা প্রস্তুত থাকে। কিন্তু সেখানে অনবরত তুষারপাত হওয়ার কারণে উদ্ধারকার্যেও অনেক দেরি হয়।
সিয়াচেন: সিয়াচেন হিমবাহ ৭৬ কিলোমিটার দীর্ঘ। ১৯৪৯ সালের করাচি চুক্তিতে এর সীমানা স্পষ্ট ছিল না। ভারত ১৯৮৪ সালে অপারেশন মেঘদূত করে এর দখল নেয়। কৌশলগতভাবে জায়গাটি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, শাক্সগাম উপত্যকা (পাকিস্তান কর্তৃক চিনকে দেওয়া) এবং গিলগিট-বালতিস্তানের (পাকিস্তান কর্তৃক অধিকৃত) মধ্যে এটি পাঁচিলের মতো কাজ করে।
২০১৬ সালে ১০ জন জওয়ান এই সিয়াচেনে তুষারধসে চাপা পড়েছিলেন। যার মধ্যে ল্যান্স নায়েক হনুমানথাপ্পা কোপ্পাডকে ৬ দিন পর জীবিত উদ্ধার করা হয়। কিন্তু পরে তিনি মারা যান। ২০১৯ সালে চারজন সৈন্য এবং দুইজন পোর্টার তুষারধসে শহিদ হন।