ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু।-ফাইল ছবিকার্তিক পূর্ণিমার পবিত্র সকালে উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুর জেলার চুনার রেলওয়ে স্টেশনে ঘটে গেল এক ভয়াবহ দুর্ঘটনা। গঙ্গাস্নানের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া চার তীর্থযাত্রী ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ হারান। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, দুর্ঘটনাটি ঘটে সকাল প্রায় ৯টা ৩০ মিনিটে, যখন চোপন-প্রয়াগরাজ যাত্রীবাহী ট্রেন থেকে নামার পর যাত্রীরা তাড়াহুড়ো করে রেললাইন পার হওয়ার চেষ্টা করেন। সেই সময় বিপরীত দিক থেকে দ্রুতগতিতে আসা হাওড়া-কালকা নেতাজি এক্সপ্রেস (ট্রেন নং ১২৩১১) তাদের ধাক্কা মারে, এবং ঘটনাস্থলেই চারজনের মৃত্যু হয়।
দুর্ঘটনার অভিঘাতে চুনার স্টেশনে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। স্থানীয়রা জানান, সংঘর্ষ এতটাই প্রবল ছিল যে মৃতদেহগুলির অবস্থা ভয়াবহ হয়ে ওঠে। জিআরপি ও আরপিএফ কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ শুরু করেন। আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং মৃতদেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। রেল ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
রেল প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে প্ল্যাটফর্ম ও ফুটওভারব্রিজ ব্যবহার বাধ্যতামূলক। এমন দুর্ঘটনা রোধে স্টেশনে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা জোরদার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ দুর্ঘটনার খবর পেয়ে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান এবং আহতদের দ্রুত ও সর্বোত্তম চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে প্রশাসনকে নির্দেশ দেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'এই দুর্ঘটনা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। নিহতদের আত্মার শান্তি এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।'
চুনার রেলস্টেশনে কার্তিক পূর্ণিমা উপলক্ষে গঙ্গাস্নান করতে আসা হাজার হাজার ভক্তের ভিড় ছিল। প্রশাসন যাত্রীদের বারবার সতর্কবার্তা দেওয়া সত্ত্বেও অনেকেই শর্টকাট পথে রেললাইন পার হওয়ার চেষ্টা করছিলেন, যা এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার বিকেলেই ছত্তীসগঢ়ের বিলাসপুরে যাত্রিবাহী ট্রেনের সঙ্গে মালগাড়ির সংঘর্ষে ১১ জনের মৃত্যু হয়। আহত হন অন্তত ২০ জন।