Mobile Game Addiction: মোবাইলে বুঁদ-১২ ঘণ্টা করে পাবজি, শিরদাঁড়া বেঁকে গেল যুবকের

দিনভর মোবাইলের স্ক্রিনে চোখ, ধীরে ধীরে বেঁকে গেল শিরদাঁড়া। জটিল রোগে আক্রান্ত ১৯ বছরের যুবকের ভয়ঙ্কর পরিণতি।

Advertisement
মোবাইলে বুঁদ-১২ ঘণ্টা করে পাবজি, শিরদাঁড়া বেঁকে গেল যুবকেরMobile Game Addiction
হাইলাইটস
  • প্রতিদিন ১২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ঘরবন্দি হয়ে পাবজি
  • ধীরে ধীরে হারাতে শুরু করে শরীরের ভারসাম্য
  • যতক্ষণে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, অবস্থা হাতের বাইরে বেরিয়ে গিয়েছে

দিনভর মোবাইলে মুখ গুঁজে বসে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা চলছে পাবজি খেলা। আর তাতেই ভয়ঙ্কর পরিণতি হলো দিল্লির ১৯ বছরের যুবকের। আংশিক পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েন তিনি। অস্ত্রোপচার করতে হয় তাঁর শিরদাঁড়ায়। খবর প্রকাশ্যে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। 

জানা গিয়েছে, ১২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ঘরবন্দি হয়ে পাবজি খেলত ওই যুবক। এর জেরে তাঁর শিরদাঁড়া বেঁকে যায়। ধীরে ধীরে হারাতে শুরু করে শরীরের ভারসাম্য। যদিও বিষয়টি ধরা পড়েনি গত এক বছরে। ফলে চিকিৎসার অভাবে শিরদাঁড়ার চোট ক্রমশ গুরুতর হয়ে ওঠে।  হাঁটাচলা করতেও সমস্যা হচ্ছিল ছেলেটির। এমনকী, প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল প্রস্রাব। যতক্ষণে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, অবস্থা হাতের বাইরে বেরিয়ে গিয়েছে।

অবশেষে ছেলেটির চিকিৎসা শুরু হয় ইন্ডিয়ান স্পাইনাল ইনজুরিস সেন্টারে (ISIC)। পরীক্ষা নিরীক্ষার পর দেখা যায় ওই যুবকের শিরদাঁড়া বেঁকে গিয়ে ভয়ঙ্কর অবস্থায় পৌঁছে গিয়েছে। যেটিকে চিকিৎসা পরিভাষায় বলা হয় কাইপো-স্কোলিওসিস। অর্থাৎ শিরদাঁড়ার টিবি। এতে শিরদাঁড়ার আঘাত সামনে এবং শরীরের দু'পাশের ভারসাম্য নষ্ট করে। 

স্ক্যান রিপোর্টে দেখা যায়, শিরদাঁড়ার ডি১১ এবং ডি১২ হাড়গুলি সম্পূর্ণ নষ্ট হয়েছে। সেই অংশগুলিতে পুঁজ জমতেও শুরু করেছে। ISIC-র প্রধান ডা: বিকাশ টন্ডন বলেন, 'এই কেসটি অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং ছিল। স্পাইনাল টিবিতে আক্রান্ত ছিলেন ওই যুবক। যা অ্যাডভান্স পর্যায়ে ছিল। দীর্ঘদিন ধরে নাগাড়ে মোবাইল গেম খেলার পরিণতি ছিল সেটি।'

যুবককে বাঁচাতে ISIC-র মেডিক্যাল টিম স্পাইনাল নেভিগেশন টেকনোলজির ব্যবহার করেন। এই আধুনিক চিকিৎসা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ডাক্তাররা শিরদাঁড়ায় স্ক্রু দিয়ে সেটিকে পুনরায় সঠিক মাপে নিয়ে আসেন। ঠিক যেমন ভাবে GPS একটি গাড়ি চালককে পথ দেখায় তেমন ভাবেই এই চিকিৎসা প্রক্রিয়া ব্যবহার করা হয় যুবকের শরীরে। 

এই অস্ত্রোপচারের সাহায্যে যুবকের শিরদাঁড়া ডিকমপ্রেস করা হয়। শিরদাঁড়ার মাপ পুনরায় সঠিক জায়গায় ফিরিয়ে আনা হয় এবং সেটিকে স্থিতিশীল করা হয়। 

Advertisement

জানা গিয়েছে, জটিল এই অস্ত্রোপচারের কয়েক দিনের মধ্যেই সুস্থতার লক্ষণ দেখা গিয়েছে যুবকের। ধীরে ধীরে হাঁটাচলা শুরু করেছেন তিনি। শিরদাঁড়ায় চাপ অনুভব করাও কমেছে।

দিল্লির যুবকের এই ঘটনা ফের একবার প্রমাণ করল দীর্ঘক্ষণ মোবাইল স্ক্রিনে চোখ রাখা ভয়ঙ্কর বিপদ ডেকে আনতে পারে। ডা: বিকাশ টন্ডন বলেন,  'কিশোরদের মধ্যে হাড় খোয়ে যাওয়া, গাঁটে গাঁটে ব্যথার মতো সমস্যা দেখতে পাচ্ছি আমরা। ' অস্ত্রোপচারের পর আপাতত রিহ্যাবে রয়েছেন দিল্লির ওই যুবক। চলছে ফিজিওথেরাপি এবং কাউন্সেলিং। তাঁকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে মানসিক ভাবেও উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। ডা: টন্ডনের কথায়, 'শিশু-কিশোরদের মোবাইল আসক্তি নিয়ে মা-বাবার সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। সেই সঙ্গে নিয়মিত শরীরচর্চারও দরকার। গেমের প্রতি আসক্তি ভয়ঙ্কর রূপ নিতে পারে। স্পাইনাল টিবির মতো গুরুতর রোগে আক্রান্ত হলেও অনেক ক্ষেত্রে উপসর্গ চোখে দেখা যায় না। যার জেরে পরিস্থিতি ভয়ানক হয়ে উঠতে পারে। সময় থাকতে সন্তানের মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি অভিভাবকদের নজর দেওয়া উচিত।'

POST A COMMENT
Advertisement