ছত্তিসগঢ়ে সাংবাদিক মুকেশ চন্দ্রকর হত্যার রেশ এখনও কাটেনি। ঠিক সেই সময় আর এক সাংবাদিকের পুরো পরিবারকে খুন করা হল। শুক্রবার সুরজপুর জেলায় সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের জেরে আজ তকের জেলা সাংবাদিক সন্তোষ কুমার টোপোর পুরো পরিবারকে নির্মমভাবে হত্যা করল দুষ্কৃতীরা। এই হত্যাকাণ্ডের জেরে পুরো এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।
নিহতদের মধ্যে সন্তোষের বাবা-মা এবং ভাই রয়েছেন। জগন্নাথপুরের খারগোয়া এলাকায় দুপুর ১টায় সন্তোষের বাবা-মা মাঠে কাজ করছিলেন। তখন এই ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, সম্পত্তি নিয়ে সন্তোষের পরিবার এবং তাঁর আত্মীয়দের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। শনিবার মাঠে সাধারণ বিষয় নিয়ে শুরু হয় তর্কাতর্কি। তা পরিণত হয় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে। সন্তোষের কাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে বাবা-মাকে আক্রমণ করেন। এই হামলায় সন্তোষের বাবা-মা এবং ভাই ঘটনাস্থলেই মারা যান। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তরা তাঁকে কুড়ুল দিয়ে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে।
ঘটনার খবর পাওয়া মাত্রই খারগওয়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। মৃতদেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, সন্তোষের কাকা এবং অন্যান্য সন্দেহভাজন আত্মীয়দের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। খুনিদের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ।
বিবাদের কারণ কী ছিল?
জানা গিয়েছে, শুক্রবার জগন্নাথপুর গ্রামে পৈতৃক জমিতে চাষাবাদ নিয়ে একই পরিবারের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ বাধে। উমেশ টোপো, নরেশ টোপো (৩০ বছর) তাঁদের মা বাসন্তী টোপো (৫৫ বছর) এবং বাবা মাঘে টোপো (৫৭ বছর) বিতর্কিত জমিতে চাষ করতে এসেছিলেন। দুপুর ১টার দিকে মাঘে টোপোর ভাইয়ের পরিবারের ৬-৭ জনও সেখানে পৌঁছে যায়।
চাষ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। মাঘে টোপোর পরিবারের উপর কুড়ুল ও লাঠি দিয়ে আক্রমণ করে অন্যপক্ষ। মাথায় গুরুতর আঘাতের কারণে বাসন্তী টোপো এবং নরেশ টোপো ঘটনাস্থলেই মারা যান। মাঘে টোপো গুরুতর আহত হন। মাঘেকে অম্বিকাপুর মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। ঘটনার সময় মাঘের দ্বিতীয় ছেলে উমেশ টোপো পালিয়ে গিয়ে নিজের জীবন বাঁচায়।
ঘটনার পর অভিযুক্তরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। এই হত্যাকাণ্ডের পর প্রতাপপুরের পুলিশ কর্তারাও ঘটনাস্থলে পৌঁছন।ওই বিতর্কিত জমিটি জগন্নাথপুর কয়লা খনির সামনে।
আদালতের সিদ্ধান্তও মানেনি অভিযুক্তরা
জমি বিবাদের মামলাটি দীর্ঘদিন ধরে প্রতাপপুরের এসডিএম আদালতে বিচারাধীন ছিল। ওই মামলায় আজতকের সাংবাদিকের পক্ষে রায় দেন বিচারক। রায় ঘোষণার পর চাষ জমিতে গিয়েছিলেন তাঁরা। সেই সময় অভিযুক্তরা তাঁদের উপর চড়াও হয়। উল্লেখ্য, ৩ জানুয়ারি খুন হন ছত্তিসগঢ়ের সাংবাদিক মুকেশ চন্দ্রকর।