সন্ত্রাসবাদ বিরোধী লড়াই ও ভারতের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে দক্ষিণ কোরিয়ার সোলে পৌঁছেছেন সর্বদলীয় ভারতীয় প্রতিনিধি দলের সদস্য ও তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সিওলের এক গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে তিনি তাঁর বক্তৃতায় কোরিয়া-ভারতের গভীর সাংস্কৃতিক সম্পর্কের উল্লেখ করেন, আর সেই সূত্রেই উঠে আসে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথা।
অভিষেক জানান, কোরিয়ানদের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আত্মিক যোগ বহু পুরনো। তাঁর লেখা ‘দ্য ল্যাম্প অব দ্য ইস্ট’ কবিতা এখনও কোরিয়ান শিক্ষার্থীদের পাঠ্যক্রমে পড়ানো হয়। এ প্রসঙ্গে অভিষেক বলেন, 'এই কবিতা দুই দেশের সভ্যতা ও মূল্যবোধের সেতুবন্ধন তৈরি করেছে। এটি আমাদের জাতীয় গর্ব।'
এক্স হ্যান্ডেলে অভিষেক লেখেন, 'রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কোরিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা এবং তাঁদের সঙ্গে ভারতের ঐতিহাসিক সম্পর্ক আমার বক্তব্যের মূল অংশ ছিল। এমন একটি মুহূর্তে এই প্রসঙ্গ তোলা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ, যখন আমরা সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলার প্রশ্নে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার কথা বলছি।'
As part of India’s All-Party Parliamentary Delegation, we began the first day of our outreach in Seoul with a detailed exchange with Ambassador @KumarAmitMEA, who outlined the roadmap for our Korea engagements and underscored India’s unflinching commitment to combat terrorism… pic.twitter.com/EdBCNXLwfY
— Abhishek Banerjee (@abhishekaitc) May 25, 2025
শুধু সাংস্কৃতিক বন্ধন নয়, অভিষেক তাঁর বক্তব্যে জোর দেন সন্ত্রাসবাদ দমনে ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়ার দৃঢ় অঙ্গীকারের উপর। তিনি বলেন, 'এশিয়ার দুই প্রভাবশালী দেশ হিসেবে আন্তর্জাতিক স্তরে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে একসঙ্গে কাজ করা আমাদের দায়িত্ব।' সোলের ওই আলোচনায় দক্ষিণ কোরিয়ার প্রাক্তন ভাইস মিনিস্টার, রাষ্ট্রদূত ও থিঙ্ক ট্যাঙ্ক প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।
তৃণমূল সাংসদের কথায়, ‘ভারতের প্রত্যাঘাতে নিহত জঙ্গিদের শেষ কৃত্যে যাদের দেখা গেল, তারা কেউ সামান্য পাক জওয়ান নয়। সেনা প্রধান ও সেনার নানা বিভাগের কর্তা। পাকিস্তান যে সন্ত্রাসে সরাসরি মদত জোগায়, এই ঘটনার পর তা কার্যত স্পষ্ট।’
অভিষেকের সংযোজন, ‘পহেলগাঁও হামলার ২৪ ঘণ্টা পর TRF হামলার দায় স্বীকার করে। এই TRF কারা? এরা হল লস্কর-ই-তৈবার ছায়া সংগঠন। আর সেই লস্কর-জইশদের যখন ভারত মারল, তখন ওদেরই শেষ কৃত্যে গিয়ে হাজির হল পাক সেনাকর্তা ও প্রধানরা।’
এর আগে অভিষেক জাপান সফরেও প্রতিনিধি দলের অংশ ছিলেন। সেখানেও তিনি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দেন এবং ভারতীয় বিপ্লবীদের স্মরণে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন। এবার দক্ষিণ কোরিয়ার পর তাঁর সফরসূচিতে রয়েছে সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া। এই ধারাবাহিক সফরের মূল উদ্দেশ্য— ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, সন্ত্রাসবাদ দমন ও ভারতীয় সংস্কৃতির আন্তর্জাতিক প্রচার।