কলি পুরী, ইন্ডিয়া টুডে গোষ্ঠীর ভাইস চেয়ারপার্সনদেশের রাজধানী দিল্লিতে শুরু হয়ে গিয়েছে ভারতের সবচেয়ে বড় নিউজ সামিট 'অ্যাজেন্ডা আজতক ২০২৫'। দুদিনের এই সামিটের উদ্বোধন করলেন ইন্ডিয়া টুডে গোষ্ঠীর ভাইস চেয়ার পার্সন ও এগজিকিউটিভ এডিটর ইন চিফ কলি পুরী। গৌরবময় সেই মুহূর্তে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের এক্সক্লুসিভ সাক্ষাত্কারের প্রসঙ্গে কলি পুরী বললেন, 'প্রেসিডেন্ট পুতিনের এই ইন্টারভিউ শুধু আজতক-এর জন্যই নয় গোটা দেশের কাছে সম্মানের।'
কলি পুরীর কথায়, 'আমরা সদ্য একটি বিশেষ ইন্টারভিউ করেছি, মস্কোতে প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে। এই ইন্টারভিউ নিয়ে দুনিয়াজুড়ে ব্যাপক চর্চা হয়েছে। আমি এটাকে এক বড় উদাহরণ হিসেবেই তুলে ধরছি।' কলি পুরী জানান, পুতিনের ইন্টারভিউয়ের জন্য ভারতের বিভিন্ন নিউজ চ্যানেলের মধ্যে খোঁজখবর নিয়ে শেষ পর্যন্ত ‘আজতক’-কেই নির্বাচিত করে রুশ প্রেসিডেন্টের টিম। তাঁরা ‘আজতক’-এর ছোট নবীন দলটির পেশাদারিত্ব ও দক্ষতার প্রশংসা করেন। এই ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে একটি ভারতীয় নিউজ চ্যানেলের খবর পৃথিবীর বহু বড় বড় সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম হয়ে যায়।
'পুতিন ইন্টারভিউ আমাদের কাছে শুধু ইন্টারভিউ নয়, মিশন ছিল'
তিনি বলেন, 'রাশিয়ার টিম মাসের পর মাস ধরে খোঁজ নিয়েছে। তারা ডেটা, রেটিং, ইমপ্যাক্ট ও বিশ্বাসযোগ্যতা, সব দেখে ‘আজতক’-কেই বেছে নেয়। এটা শুধুমাত্র আমাদের নয়, গোটা দেশেরই সম্মান। আমরাও ঠিক করে নিয়েছিলাম, এটা শুধুই ইন্টারভিউ নয়, একটা মিশন এবং আমাদের লক্ষ্য ছিল বিশ্বের সব বড় চ্যানেলকে ছাপিয়ে যাওয়া।'
ক্রেমলিনে ভারতীয় দলের সূক্ষ্ম প্রস্তুতিতে অবাক রুশরা
কলি পুরী বলেন, 'ক্রেমলিনের হলঘরে ঢোকার পর আমাদের টিম আলো-সাজসজ্জায় কিছু পরিবর্তনের অনুরোধ করেছিল। রুশ টিম অবাক হয়েছিল, এত ছোট ইন্ডিয়ান টিম এত সূক্ষ্ম বিষয়েও বদল চাইছে দেখে। কোনও গ্লোবাল টিম এমন দাবি করেনি। তারা সহযোগিতা করেছে, আর রেজাল্ট দেখে তাদেরও বুঝতে হয়েছে ভারতীয় টিম কাজের জায়গায় কতটা দক্ষ।'
অঞ্জনা–গীতা জুটির প্রশংসা
তিনি জানান, ইন্টারভিউ শেষে রুশ টিম অঞ্জনা ওম কাশ্যপ এবং গীতা মোহনের প্রশ্নের ধরন ও পারস্পরিক সমন্বয়ের প্রশংসা করেছে। পুতিন প্রথমে ৬০ মিনিট সময় দিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু আলাপ জমে উঠতে থাকায় তা বেড়ে ১০০ মিনিটে পৌঁছয়। এই অভিজ্ঞতা রুশ দলের কাছেও ছিল বিশেষ, এবং এই সাফল্য শুধু ‘আজতক’-এর নয়, ভারতেরও।
বিশ্বের প্রধান সংবাদমাধ্যমে ‘আজতক’-এর ইন্টারভিউ
কলি পুরী বলেন, 'একটি ভারতীয় নিউজ চ্যানেল বিশ্বমঞ্চে হেডলাইন করেছে, এটাই সবচেয়ে বড় বিষয়। নিউ ইয়র্ক টাইমস, ওয়াশিংটন পোস্ট, বিবিসি, সিএনএন, ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস, দ্য গার্ডিয়ান, রাশিয়া টিভি, বিশ্বের শক্তিশালী মিডিয়া ব্র্যান্ডগুলি এই ইন্টারভিউ তুলে ধরে আলোচনা করেছে, খবর করেছে। আমরা সেই প্রশ্ন করেছি, যা পশ্চিমি মিডিয়া করেনি। আমরা সেই ধারণা ভেঙেছি যে ভারতীয় মিডিয়া নাকি বিশ্বরাজনীতি নিয়ে কথা বলতে পারে না। সেদিন ভারতের কণ্ঠস্বর বিশ্বের বড় বড় প্ল্যাটফর্মে প্রতিধ্বনিত হয়েছে।”
মানুষের সমস্যাকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করা, এটাই আমাদের ধর্ম
কলি পুরী গত বছর যেমন তিনি রিপোর্ট কার্ড তুলে ধরেছিলেন, এ বছরও সেই অভ্যাস বজায় আছে। চাকরি, পরীক্ষা–ফল, নকল ওষুধ, দূষণ, অবৈধ রেস্তোরাঁ–ক্লাব, না পাওয়া ক্ষতিপূরণ, ভাঙা সেতু, কিংবা সাম্প্রতিক বিমান–টিকিট সমস্যা, ‘আজতক’ সব ক্ষেত্রেই মানুষের কণ্ঠকে জোরালো করার চেষ্টা করেছে।
রেটিং–অ্যাওয়ার্ড নয়, আসল পুরস্কার আপনাদের বিশ্বাস
তিনি বলেন, 'কাজই ইন্ডিয়া টুডে গ্রুপের ধর্ম। আমাদের সব রিপোর্টার এই কাজকে দায়িত্ব ও সাধনার মতো দেখেন।' তিনি ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর উল্লেখ করে বলেন, যে ভেঙে যাওয়া ঘরগুলোর পুনর্নির্মাণে ‘আজতক’ উদ্যোগ নিয়েছিল, সেনাবাহিনী জানিয়েছে সেগুলি ঠান্ডা পড়ে যাওয়ার আগেই তৈরি হয়ে গেছে। কলি পুরী বললেন, 'ঘর তৈরি হয়েছে, কিন্তু ভাঙা মন জোড়া লাগাতে সময় লাগবে, আর আমরা সেই কাজও চালিয়ে যাব।'
‘আজতক’ দর্শকের কঠিন সময়ে পাশে থাকা সঙ্গী
শেষে কলি পুরী বলেন, জীবনে হঠাৎ অনেক কঠিন সময় আসে। তখন সবচেয়ে জরুরি হয় এমন একজন সঙ্গী, যার ওপর ভরসা করা যায়। ‘আজতক’ সেই নির্ভরযোগ্য সঙ্গী, যে সত্য আপনাদের কাছে পৌঁছে দেয় এবং মনে করিয়ে দেয়, বিশ্বের সমস্যার মাঝেও ভারতের কণ্ঠস্বর দৃঢ়। এটাই আপনাদের নিজের ‘আজতক’, এটাই আপনাদের কণ্ঠ। আসুন, আমরা একসঙ্গে দেশের এজেন্ডা ঠিক করি। ধন্যবাদ।