উত্তরপ্রদেশের সম্ভলের জামা মসজিদ বিতর্ক চলছে। তার মধ্যেই রাজস্থানের আজমির দরগাকে হিন্দু মন্দির ঘোষণার আবেদন গ্রহণ করল সেখানকার নিম্ন আদালত। আদালতের তরফে সব পক্ষকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী শুনানির দিন ২০ ডিসেম্বর।
আজমিরে খাজা মইনুদ্দিন চিশতির দরগাকে হিন্দুদের উপাসনালয় হিসেবে ঘোষণা করার জন্য হিন্দু সেনার বিষ্ণু গুপ্ত আদালতে আবেদন করেন। বুধবার আজমিরের কোর্টে মনমোহন চন্দেলের আদালতে এই আবেদনের শুনানি হয়। বিচারক এই মামলায় দরগা কমিটি, সংখ্যালঘু বিষয়ক এবং এএসআইকে পক্ষ করার নির্দেশ দেন। মামলার পরবর্তী শুনানির দিন সব পক্ষকে কোর্টে হাজিরার নির্দেশও দেওয়া হয়।
আজমির দরগা আদতে মন্দির- হিন্দু সংগঠনগুলো বহুদিন ধরেই এই দাবি করে আসছে। ২০২২ সালে, হিন্দু সংগঠন মহারানা প্রতাপ সেনা এই দরগাকে মন্দির বলে দাবি করে রাজস্থানের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠিও দেয়। সেই সংগঠনের তরফে যে চিঠি দেওয়া হয়েছিল সেখানে দাবি করা হয়েছিল, আজমির দরগার জানালায় স্বস্তিক চিহ্ন রয়েছে। সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা রাজবর্ধন সিং পারমার দাবি করেছিলেন, আজমির দরগা শিব মন্দির ছিল। পরে তা দরগায় রূপান্তরিত করা হয়।
প্রসঙ্গত, উত্তরপ্রদেশের সম্ভলের জামা মসজিদ কি হরিহর মন্দির? এই বিতর্ক এখন দানা বেঁধেছে। রবিবার মসজিদের সমীক্ষাকে কেন্দ্র করে ছড়িয়ে পড়ে অশান্তি। ঘটনার পর প্রশ্ন উঠছে, আদৌ কি ওই মসজিদ মন্দির ছিল কোনওকালে? জামা মসজিদ কি সত্যিই অতীতে প্রাচীন হিন্দু মন্দির ভেঙে তৈরি করা হয়েছিল? গোটা বিষয়টি নিয়ে ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক তদন্ত করেছে Aaj Tak। তাতে উঠে এসেছে চমকপ্রদ তথ্য। কী রকম? ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণ বিভাগের (ASI) ১৮৭৫ সালের রিপোর্ট সামনে এসেছে। ওই রিপোর্টটি প্রকাশিত হয়েছিল 'Tours in the Central Doab and Gorakhpur 1874–1875 and 1875–1876' নামে।
'Tours in the Central Doab and Gorakhpur 1874-1875 and 1875-1876' নামাঙ্কিত রিপোর্টটি তৈরি করেছেন ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণ বিভাগের তৎকালীন কর্তা এসিএল কার্লাইল (A. C. L. Carlleyle)। সেই রিপোর্টে উল্লেখ, মসজিদের ভিতরে ও বাইরের স্তম্ভগুলি প্রাচীন হিন্দু মন্দিরের। সেগুলি প্লাস্টার দিয়ে লুকোনোর চেষ্টা করা হয়েছিল। মসজিদের স্তম্ভগুলির একটি থেকে প্লাস্টার সরানো হলে প্রাচীন লাল রঙের হিন্দু মন্দিরের নকশা বেরিয়ে আসবে। মসজিদে এমন অনেক নিদর্শন রয়েছে যাতে স্পষ্ট এটি এককালে প্রাচীন মন্দির ছিল। অতিসম্প্রতি ওই মসজিদে সমীক্ষার নির্দেশ দিয়েছিল স্থানীয় আদালত। যে সমীক্ষা রিপোর্ট জমা পড়বে ২৯ নভেম্বর।