ফরিদাবাদের সেই বিশ্ববিদ্যালয়।-ফাইল ছবিদিল্লির লালকেল্লা মেট্রো স্টেশনের কাছে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনার পর হরিয়ানার ফরিদাবাদের আল-ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয় এখন তদন্তের মুখে। পুলিশের দাবি, পাকিস্তান-সমর্থিত জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ৩ ডাক্তার সহ একাধিক শিক্ষিত ব্যক্তির জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে। এই ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়টির ৭৬ একরের ক্যাম্পাসে তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
তদন্তকারীদের মতে, এই শিক্ষিত ব্যক্তিরা 'হোয়াইট-কলার জঙ্গি মডিউল'-এর অংশ হিসেবে কাজ করছিলেন।
তারা পাকিস্তান-সমর্থিত হ্যান্ডলারদের নির্দেশে কাজ করতেন বলে প্রাথমিক প্রমাণে উঠে এসেছে। পুলিশ এখন খতিয়ে দেখছে কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয়টি এমন কার্যকলাপের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হয়ে উঠল।
আল-ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৯৭ সালে একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ হিসেবে যাত্রা শুরু করে এবং ২০১৪ সালে এটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা পায়। বর্তমানে এখানে তিনটি কলেজ কার্যরত, আল-ফালাহ স্কুল অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি, ব্রাউন হিল কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি, এবং আল-ফালাহ স্কুল অফ এডুকেশন অ্যান্ড ট্রেনিং। পাশাপাশি ৬৫০ শয্যা বিশিষ্ট একটি হাসপাতালও রয়েছে, যেখানে শিক্ষকেরা ও ছাত্রছাত্রীরা সমাজসেবামূলক চিকিৎসা কর্মসূচিতে অংশ নেন।
বিশ্ববিদ্যালয়টি পরিচালনা করে আল-ফালাহ চ্যারিটেবল ট্রাস্ট। চেয়ারম্যান জাওয়াদ আহমেদ সিদ্দিকী। ভাইস-চেয়ারম্যান মুফতি আবদুল্লাহ কাসিমি। এবং সেক্রেটারি মোহাম্মদ ওয়াজিদ। বর্তমানে ভাইস-চ্যান্সেলর ড. ভূপিন্দর কৌর আনন্দ এবং রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মহম্মদ পারভেজ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার দিনভর বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর তল্লাশি করা হয়। এবং শিক্ষক ও প্রশাসনিক কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। গ্রেফতার হওয়া তিনজনের মধ্যে অন্যতম ড. মুজাম্মিল গণাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। বিস্ফোরণে জড়িত সন্দেহভাজন হুন্ডাই আই২০ গাড়ির চালক ড. মোহাম্মদ উমর নবী ছিল এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক।
সোমবার সন্ধেয় ঘটে যাওয়া এই বিস্ফোরণে ১২ জন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হন। তারপরেই নিরাপত্তা সংস্থাগুলি কাশ্মীর, হরিয়ানা ও উত্তর প্রদেশে অভিযান চালিয়ে আল-ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে তিনজন ডাক্তারসহ আটজনকে গ্রেফতার করে। তদন্তকারীরা তদন্ত করছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে জৈশ-ই-মোহাম্মদ ও আনসার গাজওয়াত-উল-হিন্দের মত জঙ্গি সংগঠনের সম্পর্ক কতটা গভীর।
সরকারি মহল জানিয়েছে, এই তদন্ত শুধুমাত্র অপরাধীদের বিরুদ্ধে নয়, বরং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা কাঠামো কতটা দুর্বল, সেটাও পরীক্ষা করা হবে। দিল্লি পুলিশ ও কেন্দ্রীয় সংস্থার যৌথ তদন্তে এখন দেশের অন্যতম আলোচিত বিশ্ববিদ্যালয়টির ভবিষ্যৎ কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।