আল কায়েদা জঙ্গি নেটওয়ার্ককে ঘিরে বড়সড় সাফল্য পেল গুজরাটের অ্যান্টি টেররিজম স্কোয়াড (এটিএস)। বেঙ্গালুরু থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে শামা পারভিন নামে এক মহিলা জঙ্গিকে, যিনি আল কায়েদা ইন ইন্ডিয়ান সাবকনটিনেন্ট (AQIS)-এর সক্রিয় সদস্য এবং একাধিক জঙ্গি কার্যকলাপের মূল সংগঠক বলে জানা গিয়েছে।
গুজরাট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হর্ষ সাংভি এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, শামা পারভিন অনলাইন জিহাদি প্রোপাগান্ডা এবং জঙ্গি কার্যকলাপ ছড়ানোর মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মকে উস্কে দেওয়ার কাজ করছিলেন। তাঁর দাবি, “গুজরাট পুলিশ ও এটিএস একটি অনলাইন জঙ্গি নেটওয়ার্ককে চিহ্নিত করে ভেঙে দিতে সক্ষম হয়েছে। এর ফলে ভারতে বড় ধরনের জঙ্গি হামলার ছক বানচাল হয়েছে।”
৩০ বছর বয়সী শামা পারভিন মূলত ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা হলেও বর্তমানে বেঙ্গালুরুর একটি এলাকায় বসবাস করছিলেন। তার একাধিক সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট গোপনে নজরদারিতে ছিল। সেখান থেকেই উঠে আসে তার সঙ্গে আল কায়েদার সম্পর্ক এবং পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠনগুলির সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের প্রমাণ।
এই গ্রেফতারের আগে গুজরাট এটিএস আরও চারজনকে আল কায়েদার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করে। তাদের মধ্যে রয়েছেন দিল্লির মোহাম্মদ ফয়েক, আহমেদাবাদের মোহাম্মদ ফারদিন, মোদাসার সাইফুল্লাহ কুরেশি এবং নয়ডার জিশান। প্রত্যেকেই সাধারণ পরিবারের সদস্য এবং দোকান, রেস্তোরাঁ, আসবাবপত্রের ব্যবসায় যুক্ত ছিলেন।
তদন্তকারীদের মতে, এই জঙ্গি মডিউলটি আগে চিহ্নিত নেটওয়ার্কগুলির থেকে আলাদা। এদের কোনও নির্দিষ্ট হামলার পরিকল্পনা বা সময়সীমা ছিল না, বরং অনলাইনে প্রোপাগান্ডার মাধ্যমে তরুণদের মগজধোলাই করে জিহাদি আদর্শে উদ্বুদ্ধ করাই ছিল মূল লক্ষ্য।
তারা ইনস্টাগ্রামে পাঁচটি অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে ভিডিও ও পোস্টের মাধ্যমে দাবি করত—“জিহাদের জন্য বোমা নয়, একটা ধারালো ছুরিই যথেষ্ট।” এই মডিউল মূলত দেখাতে চেয়েছিল যে খুব সাধারণ অস্ত্র দিয়েও সহিংসতা ঘটানো সম্ভব এবং সন্ত্রাস ছড়ানো যায়।
গুজরাট এটিএসের এই পদক্ষেপে বড় ধরনের জঙ্গি পরিকল্পনা আগেভাগেই নস্যাৎ করা গেছে বলে মনে করছে গোয়েন্দা সংস্থা। শামা পারভিনকে এখন জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, তাঁর সঙ্গে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে থাকা অন্য কোন কোন সদস্য জড়িত, তাও জানার চেষ্টা চলছে। তদন্ত চলছে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদে তাঁর যোগসূত্র নিয়েও।