সম্পত্তি ও খোরপোশ নিয়ে দীর্ঘ ৬ বছরের আইনি লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়েছেন ৮০ বছর বয়সী মুনেশকুমার গুপ্ত এবং তাঁর ৭৫ বছর বয়সী স্ত্রী। বহুদিন ধরে আলাদা থাকছেন এই বৃদ্ধ দম্পতি। তবে সম্পত্তি ও মাসিক খোরপোশের বিষয়টি তাঁদের দ্বন্দ্বকে নতুন মাত্রা দিয়েছে। এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি সৌরভশ্যাম শামশেরি এই মামলার শুনানির সময় আশ্চর্য হয়ে বলেন, "এ তো ঘোর কলি যুগ। এমন আইনি লড়াই সত্যিই চিন্তার।"
মুনেশকুমার গুপ্ত, যিনি একসময় সরকারি চাকরি করতেন, অবসরের পর তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে সম্পত্তি নিয়ে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন। ২০১৮ সাল থেকে তাঁদের এই ঝগড়া শুরু হয়। প্রথমে পুলিশ এবং পরে পরিবার আদালতের দ্বারস্থ হন তাঁরা। সম্পত্তি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে এতটাই তিক্ততা বেড়ে যায় যে, স্বামী-স্ত্রী একই ছাদের নিচে থাকেন না। দীর্ঘদিনের এই আইনি লড়াইয়ের মীমাংসা এখনও হয়নি।
সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের মধ্যে বৃদ্ধা স্ত্রী মাসিক ১৫ হাজার টাকা খোরপোশের দাবি তুলে আদালতে মামলা করেন। তাঁর অভিযোগ, স্বামী মুনেশকুমার গুপ্ত প্রতি মাসে ৩৫ হাজার টাকা পেনশন পান এবং সেই পেনশন থেকে তাঁকে খোরপোশ দিতে হবে। পরিবার আদালত শেষ পর্যন্ত মুনেশকে নির্দেশ দেয়, তিনি স্ত্রীর খোরপোশ বাবদ প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা দেবেন।
এই নির্দেশ মানতে রাজি হননি মুনেশকুমার গুপ্ত। তিনি এলাহাবাদ হাইকোর্টে মামলার আবেদন করেন। বিচারপতি শামশেরি এই মামলার শুনানিতে বিস্ময় প্রকাশ করেন এবং বলেন, "এই বয়সে এসে এমন আইনি লড়াই দেখা খুবই দুঃখের।" তবে হাইকোর্টের পক্ষ থেকে বৃদ্ধার কাছে নোটিস পাঠানো হয়েছে। পরবর্তী শুনানিতে এই মামলার নিষ্পত্তি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
এই ঘটনা কেবল একটি ব্যক্তিগত মামলার উদাহরণ নয়, বরং সমাজে বৃদ্ধ বয়সে সম্পত্তি এবং পারিবারিক সম্পর্কের সংকটের প্রতিচ্ছবি। মুনেশকুমার ও তাঁর স্ত্রীর এই লড়াই কলিযুগের সংকটকে নতুনভাবে উপস্থাপন করেছে বলে মনে করছেন অনেকে। এখন দেখা যাক, পরবর্তী শুনানিতে এই বৃদ্ধ দম্পতির আইনি লড়াইয়ের সমাধান কবে হয়।