মুসলিমদের পার্সোনাল ল নিয়ে কংগ্রেসকে বিঁধলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। মঙ্গলবার রাজ্যসভায় 'ভারতের সংবিধানের গৌরবময় যাত্রার ৭৫ বছর' আলোচনায় অংশ নেন তিনি। সেখানে মুসলিম পার্সোনাল ল-এর পাশাপাশি সংরক্ষণ নিয়েও কংগ্রেসের এক সময়ের অবস্থানকে কটাক্ষ করেন।
কংগ্রেসকে আক্রমণ করে শাহ বলেন, 'এখন কিছু নেতা সংরক্ষণে নির্বাচনে জেতার ফর্মুলা দেখেছেন। সংরক্ষণ কোনও আধুনিক ফ্যান্টাসি নয়। এটা আমাদের সংবিধান প্রণেতারা করেছেন। অনুচ্ছেদ ১৫ এবং ১৬-তে SC-ST এবং OBC-এর জন্য সংরক্ষণের বিধান রয়েছে। কংগ্রেস সংরক্ষণ বিরোধী দল।'
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'ওবিসিদের সংরক্ষণ দিতে ১৯৫৫ সালে কাকা সাহেব কালেলকর কমিশন গঠন করা হয়েছিল। তার রিপোর্ট কোথায়? রাজ্যসভা ও লোকসভায় খোঁজ নিয়ে দেখি, কোথাও নেই। যে কোনও রিপোর্ট আসবে তা মন্ত্রিসভায় রাখতে হবে। সংসদে না এনে লাইব্রেরিতে রেখেছিলেন।'
তাঁর সংযোজন, ' যদি কাকা সাহেব কালেলকর কমিশনের রিপোর্ট মেনে নিতেন, তাহলে ১৯৮০ সালে মণ্ডল কমিশনের রিপোর্টের প্রয়োজন হত না। কাকা সাহেব কালেলকর কমিশনের রিপোর্ট গ্রহণ না করায় মণ্ডল কমিশন গঠিত হয়। ১৯৮০ সালে মণ্ডল কমিশনের রিপোর্টও এসেছিল, কিন্তু কেউ তা বাস্তবায়ন করেনি। ৯০ সালে তাদের সরকার চলে গেলে বাস্তবায়ন হয়েছিল। মণ্ডল কমিশনের রিপোর্ট যখন গৃহীত হয়েছিল, তখন রাজীব গান্ধী লোকসভায় বিরোধী দলের নেতা ছিলেন। আমি রাজীব গান্ধীর সমস্ত বক্তৃতা অনুসন্ধান করেছি। মণ্ডল কমিশন রিপোর্টের প্রতিবাদে তিনি দীর্ঘতম ভাষণ দেন। তিনি বলেন, অনগ্রসর শ্রেণীকে সংরক্ষণ দিলে এদেশে মেধার অভাব হবে। নরেন্দ্র মোদী ওবিসি কমিশনকে স্বীকৃতি দিয়েছেন। NEET, JEE-তে OBC সংরক্ষণ কার্যকর করা হয়েছে।'
অমিত শাহর আরও অভিযোগ, 'কংগ্রেস ৫০ শতাংশের বেশি সংরক্ষণ দেওয়ার কথা বলেছিল। দেশের দুটি রাজ্যে ধর্মের ভিত্তিতে সংরক্ষণ রয়েছে। এটা অসাংবিধানিক। গণপরিষদের বিতর্কে এটা স্পষ্ট করা হয়েছে যে ধর্মের ভিত্তিতে কোনও সংরক্ষণ করা যাবে না। কিন্তু কংগ্রেস যখন দুই রাজ্যে ক্ষমতায় ছিল তখন ধর্মের ভিত্তিতে সংরক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। কংগ্রেস ওবিসিদের কল্যাণ চান না। ৫০ শতাংশের সীমা বাড়িয়ে মুসলমানদের রিজার্ভেশন দিতে চাই। ধর্মের ভিত্তিতে রিজার্ভেশন দিতে চাই। যতক্ষণ পর্যন্ত উভয় কক্ষে বিজেপির একজন সদস্যও থাকবেন, আমরা ধর্মের ভিত্তিতে সংরক্ষণের অনুমতি দেব না। এটা সংবিধান বিরোধী।'
মুসলিম পার্সোনাল ল নিয়ে অমিত শাহ বলেন, 'এরা বলে যে, মুসলিমরা পার্সোনাল ল-এর অধিকার পেলে আপত্তি নেই। তাহলে পূর্ণাঙ্গ শরিয়ত বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না কেন? কেউ চুরি করলে হাত কেটে ফেলবে, নারীর সঙ্গে জঘন্য অপরাধ করলে কাউকে পাথর মেরে হত্যা করবে, বিশ্বাসঘাতককে রাস্তায় ক্রুশবিদ্ধ করবে-এটাই তো আছে শরিয়তে। তাহলে বিয়ের জন্য পার্সোনাল ল, ফৌজদারি ক্ষেত্রে শরিয়ত কেন নয়? যদি দিতেই হতো, পুরোটাই দিতেন।'