মহাকাশে পৌঁছনো প্রথম মানুষ কে? BJP সাংসদ অনুরাগ ঠাকুরের করা এই সাধারণ জ্ঞানের প্রশ্নের উত্তরে একঝাঁক কচিকাচা সমবেত স্বরে বলে ওঠে 'নিল আমস্ট্রং'। পাল্টা অনুরাগ ঠাকুর বলেন, 'আমার মনে হয় হনুমানজি।' তবে জানেন কি, দু'টি উত্তরই ভুল। তাহলে সঠিক উত্তর কী?
হিমাচলপ্রদেশের উনাতে স্কুল ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায় অনুরাগ ঠাকুরকে। সেই কথোপকথনের ভিডিও তিনি পোস্ট করে নিজের এক্স হ্যান্ডলে।
সঠিক উত্তর কী?
মহাকাশে পৌঁছনো প্রথম মানুষের নাম ইউরি গ্যাগারিন। তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের এই নভোচর ১৯৬১ সালে মহাকাশে পৃথিবীর চারপাশে চক্কর কেটেছিলেন। চাঁদের মাটিতে প্রথম পা ফেলা মানুষের নাম নিল আমস্ট্রং। মার্কিন এই মহাকাশচারী ১৯৬৯ সালে চাঁদে পাড়ি দিয়েছিলেন।
দুর্ভাগ্যবশত ছাত্রছাত্রীরা ভুল উত্তর দিল। তবে সঠিক উত্তর দিতে পারেননি সাংসদও। অনুরাগ ঠাকুর মনে করেন, মহাকাশে প্রথম পৌঁছেছিলেন পৌরাণিক চরিত্র হনুমান। ভারতীয় সংবিধানের ৫১(এ) ধারা অনুযায়ী, রাষ্ট্রকে বৈজ্ঞানিক ধ্যানধারণা প্রোমোট করতে হবে শিশুদের মধ্যে। এক্ষেত্রে অবশ্য দেখা গেল অনুরাগ ঠাকুর প্রোমোট করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর 'পঞ্চ-প্রাণ'। যেখানে তিনি ব্রিটিশ ধ্যানধারণা থেকে মুক্ত হয়ে সকলকে মুক্তচিন্তা করতে উপদেশ দিয়েছেন। সঙ্গে ভারতের সনাতন আদর্শের ঐতিহ্যও স্মরণে রাখতে পরামর্শ দিয়েছেন।
'নিল আমস্ট্রং' বলে পড়ুয়ারা সমবেত ভাবে চিৎকার করে উঠতেই অনুরাগ ঠাকুর তাদের বলেন, 'আমার মনে হয় হনুমানজি প্রথম যিনি মহাকাশে পাড়ি দিয়েছিলেন। এটাই প্রমাণ করে আমাদের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, জ্ঞান হাজার হাজার বছর পুরনো এবং ততটাই গুরুত্বপূর্ণ। নিজেদের বিষয়গুলি না শিখলে কেবলমাত্র ব্রিটিশদের শিক্ষা নিয়েই থেকে যেতে হবে।' ৫০ বছরের এই সাংসদ আরও বলেন, 'প্রিন্সিপাল সহ তোমাদের সকলের কাছে আমার অনুরোধ, পুঁথিগত বিদ্যার বাইরে গিয়ে ভাবনাচিন্তা করো। অনেক কিছু দেখতে পারবে, জানতে পারবে।' তবে এসবের মাঝে তিনি একমাত্র পড়ুয়াদের ভুল ধরিয়ে দিয়ে জানাননি, নীল আমস্ট্রং নয়, সঠিক উত্তর হবে ইউরি গ্যাগারিন। যিনি আমস্ট্রংয়ের ৮ বছর আগেই মহাকাশে পাড়ি দিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, অনুরাগ ঠাকুরের এই ভিডিওতে কমিউনিটি নোটও এসেছে। যেখানে সোশ্যাল মিডিয়া তাঁকে জানাচ্ছে, সঠিক উত্তর হবে ইউরি গ্যাগারিন। সাধারণত সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা কোনও ভুল তথ্যকে যাচাই করে সঠিকটা বাতলে দেওয়াই হল কমিউনিটি নোট।
কী বলছে ওয়াকিবহাল মহল?
অনুরাগ ঠাকুরের এই হনুমানজি তত্ত্ব নিয়ে সমালোচকদের বক্তব্য, ইতিহাসের মোড়কে শিশুদের পূরাণ শেখানো ভুল। পূরাণ এবং ইতিহাসের মধ্যে পার্থক্য করার জ্ঞানটুক থাকা উচিত পড়ুয়াদের। পূরাণকে পূরাণের মতোই পড়ানো উচিত। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, একজন সাংসদের উচিত পূরাণের থেকেও সঠিত শিক্ষায় বেশি জোর দেওয়া। এমনটাই জানাচ্ছে ওয়াকিবহাল মহল।