Operation Sindoor: কীভাবে 'অপারেশন সিঁদুর'-এর মাস্টার প্ল্যান তৈরি হয়েছিল? সব ফাঁস করলেন সেনাপ্রধান

কীভাবে তৈরি হয়েছিল মাস্টার প্ল্যান? পহেলগাঁও হামলার পরদিন রুদ্ধদ্বার বৈঠকে কী বলেছিলেন রাজনাথ সিং? সোশ্যাল মিডিয়াকেই বা কীভাবে ব্যবহার করা হয়েছিল? পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের এই অভিযানের বিহাইন্ড স্টোরি জানালেন ভারতের সেনাপ্রধান উপেন্দ্র দ্বিবেদী।

Advertisement
কীভাবে 'অপারেশন সিঁদুর'-এর মাস্টার প্ল্যান তৈরি হয়েছিল? সব ফাঁস করলেন সেনাপ্রধানজেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী
হাইলাইটস
  • কীভাবে কষা হয়েছিল 'অপারেশন সিঁদুর'-এর ছক
  • মাস্টার প্ল্যানিং করেছিলেন কে?
  • রুদ্ধদ্বার বৈঠকে কী বলেছিলেন রাজনাথ?

'অপারেশন সিঁদুর' নিয়ে বড়সড় তথ্য ফাঁস করলেন ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী। ২২ এপ্রিল পহেলগাঁও হামলা নাড়িয়ে দিয়েছিল গোটা দেশকে। ঠিক তার পরদিন অর্থাৎ ২৩ এপ্রিলই শীর্ষ সেনা আধিকারিকদের একটি গুরুত্বপূর্ণ রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয়। জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী বলেন, 'প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং সেনাপ্রধানদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন। এই প্রথমবার খুব স্পষ্ট ভাষায় তিনি জানিয়েছিলেন, অনেক হয়েছে, আর নয়।'

কী হয়েছিল রুদ্ধদ্বার বৈঠকে?
জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী রাজনাথ সিংয়ের সেই রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা দিয়েছেন। দেশবাসীর সামনে সমস্ত তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, '২৩ এপ্রিল আমরা বৈঠকে বসেছিলাম। ৩ সেনার প্রধানরাই একমত ছিলেন, কিছু একটা বড়সড় জবাব দেওয়ার প্রয়োজন পাকিস্তানকে। আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছিল। আমাদের বলা হয়েছিল, যা করার করুন। সেই ভরসা, স্পষ্ট দিশার উপর ভর করে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। এমনটা আগে কখনও হয়নি।'

এই ধরনের স্পষ্ট রাজনৈতিক সমর্থনেই সেনার মনোবল বাড়ে বলে মনে করছেন জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী। তাঁর মতে, 'এই ভরসা এবং স্পষ্ট বক্তব্যের কারণেই আমাদের আর্মি কমান্ডাররা গ্রাউন্ডে গিয়ে নিজেদের মতো করে উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছিলেন।'

নর্দান কমান্ড থেকে অপারেশন সিঁদুরের রণনীতি
২৫ এপ্রিল নর্দান কমান্ড পৌঁছন তিন সেনার প্রধান। সেখানেই পরিকল্পনা তৈরি হয়। কনসেপ্ট স্পষ্ট করা হয় এবং তারপর উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হয়। এমনটাই জানান ভারতীয় সেনাপ্রধান। ৯ মে ৭টি টার্গেট ধ্বংস করা হয় এবং অংসখ্য জঙ্গিকে নিকেশ করা হয়।

জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী বলেন, '২৯ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের প্রথমবার দেখা হয়। একটি ছোট নাম, অপারেশন সিঁদুর গোটা দেশকে একজোট করে তুলেছিল। নামটি শোনার পর আমি ভেবেছিলাম সিন্ধু নদীর কথা বলা হচ্ছে। বলেছিলাম, সিন্ধু জলচুক্তি তো ইতিমধ্যেই বাতিল হয়ে গিয়েছে। তারপর বুঝলাম ভুল শুনেছি। ওটা সিঁদুর।'

সেনার আবেগ
জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী বলেন, 'এখন মানুষ বলছেন, সিন্ধু থেকে সিঁদুর পর্যন্ত সমস্তটাই ভারত সামলে নিয়েছে। গ্রাউন্ডে গিয়ে আমি জওয়ানদের বলেছিলাম, মা-বোনেরা এবার থেকে সিঁদুর পরার সময়ে দেশের সেনাকে স্মরণ করবে। আর সে কারণেই গোটা দেশ প্রশ্ন তুলেছিল, এই অভিযান কেন বন্ধ করে দেওয়া হল? তবে এর জবাবও দেওয়া হয়েছে ইতিমধ্যেই।'

Advertisement

IIT মাদ্রাজের একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে সেনাপ্রধান 'অপরেশন সিঁদুর'-এর সঙ্গে দাবার তুলনা করেন। তিনি বলেন, 'আমরা জানতাম না শত্রুর পরের চাল কী। সেটাকেই গ্রে জোন বলা হয়। অর্থাৎ আমরা পরম্পরা মেনে অভিযানে যাচ্ছি না। বরং এমন পদক্ষেপ করছি যা শত্রুপক্ষের থেকে কম। পরম্পরা মেনে অভিযানের অর্থ সম্পূর্ণ শক্তি নিয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়া। যা যা হাতিয়ার রয়েছে, সমস্ত ব্যবহার রা এবং যদি ফেরত আসেন তো ভাল না হলে যুদ্ধক্ষেত্রেই শেষ দম পর্যন্ত টিকে থাকুন। তবে গ্রে জোন এমনই একটি পরিস্থিতি যেখানে প্রতিটি ডোমেনেই নানা গতিবিধি চলতে থাকে। আমরা এক্ষেত্রে অত্যন্ত সুস্পষ্ট এবং সুপরিকল্পিত ভাবে রণনীতি ঠিক করে পদক্ষেপ করেছি। আমরাও দাবার চাল চালছিলাম আর শত্রুপক্ষও। কখনও চেকমেট দিচ্ছিলাম আবার কখনও প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে লড়ছিলাম।'

ন্যারেটিভ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম
জেনারেল দ্বিবেদীর মতে, আসল জয় হয় মানুষের মস্তিষ্কের ভিতর। তিনি বলেন, 'এখন যদি কোনও পাকিস্তানিকে প্রশ্ন করেন, জিতেছেন না হেরেছেন, সে বলবে, আমরা নিশ্চয়ই জিতেছি। এভাবেই ওরা মানুষের মনে প্রভাব ফেলে।'

কীভাবে সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে রণনীতি মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল, তা-ও ব্যাখ্যা করেন সেনাপ্রধান। প্রথম বার্তা ছিল, 'ন্যায়বিচার পাওয়া গিয়েছে। অপারেশন সিঁদুর।' সেই পোস্ট সবচেয়ে বেশি হিট হয়েছিল। একটি সাধারণ বার্তা মানুষের মধ্যে কতটা প্রভাব বিস্তার করেছিল, সে কথাই জানান জেনারেল। 
 

 

POST A COMMENT
Advertisement