প্রবল বৃ্ষ্টির কারণে অসমে বন্যা। রাজ্যের ২৮টি জেলার প্রায় আড়াই হাজার গ্রাম জলমগ্ন। ১১.৩৪ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। প্রতি বছরের মতো এবারও ব্রহ্মপুত্র নদের বন্যার মুখে পড়েছে উত্তর-পূর্বের এই রাজ্য। এখনও পর্যন্ত প্রায় ৪৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রায় ৩০৫৭ জন মানুষ এবং ৪১৯ জন প্রাণীকে উদ্ধার করা হয়েছে। এটা শুধু এখানেই নয়। অরুণাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড, মেঘালয়, মণিপুর এবং মিজোরামেও উচ্চ সতর্কতা রয়েছে।
আসামে ৩৩টি জেলা রয়েছে, যার মধ্যে ২৮টি বন্যায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যার হাত থেকে মানুষকে বাঁচাতে এনডিআরএফ, এসডিআরএফ এবং সেনাবাহিনীকে মোতায়েন করতে হয়েছে।
অসমের এই জেলাগুলি খারাপভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে
বরপেটা, বিশ্বনাথ, কাছাড়, চরাইদেও, চিরাং, দারং, ধেমাজি, ডিব্রুগড়, গোলাঘাট, যোরহাট, কামরুপ মেট্রোপলিটন, কার্বি আংলং, করিমগঞ্জ, লখিমপুর, মাজুলি, মরিগাঁও, নগাঁও, নলবাড়ি, শিবসাগর, সোনিতপুর, তামুলকিয়াপুর এবং উদালিনপুর।
সবচেয়ে খারাপ অবস্থা লখিমপুর জেলায়
সবচেয়ে খারাপ অবস্থা লখিমপুর জেলায়। এখানে সমস্যায় পড়েছেন ১ লাখ ৬৫ হাজারের বেশি মানুষ। দারংয়ে ১.৪৭ লক্ষ মানুষ এবং গোলাঘাটে ১.০৭ লক্ষ মানুষ বন্যায় আক্রান্ত। এখনও পর্যন্ত ৪৯০টি ত্রাণ শিবির স্থাপন করা হয়েছে। প্রায় ২.৮৬ লক্ষ মানুষ বসবাস করছেন। প্রায় ৪২,৫০০ হেক্টর কৃষি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৮.৩২ লাখ গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নিমাতিঘাট, তেজপুর, গুয়াহাটি, ধুবড়িতে ব্রহ্মপুত্র নদ বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। আগে আসামে ৪-৫ বছরে একবার বন্যা হতো, কিন্তু এখন প্রতি বছর ৩ থেকে ৪ বার বন্যা হচ্ছে।
অসমে এত বন্যা কেন?
এটা বোঝার আগে এর ভূগোল দেখে নেওয়া জরুরি। আসলে, সমের ভৌগোলিক অবস্থান একটি বাটির মতো, যেখানে জল জমা হয়। অসম একটি রাজ্য যা সম্পূর্ণরূপে নদী উপত্যকায় অবস্থিত।
এখানকার মোট আয়তন ৭৮,৪৩৮ বর্গ কিমি। ব্রহ্মপুত্র নদের উপত্যকায় ৫৬,১৯৪ বর্গ কিলোমিটার এলাকা অবস্থিত। বাকি ২২,৪৪৪ বর্গ কিমি বরাক নদীর উপত্যকায় অবস্থিত। প্রতি বছর অসনের মোট এলাকার প্রায় ৪০ শতাংশ বন্যায় তলিয়ে যায়।
সামগ্রিকভাবে, দেশের বন্যা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার প্রায় ১০% আসামে। অসমে দুটি প্রধান নদী রয়েছে। প্রথমটি ব্রহ্মপুত্র এবং দ্বিতীয়টি বরাক। এ দুটি ছাড়াও ছোট ও উপনদী রয়েছে ৪৮টি। এ কারণে এখানে বন্যার ঝুঁকি বেশি। সামান্য বৃষ্টিতেই এখানে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।