অসম-মিজোরাম সীমানায় পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল থেকে জটিলতর আকার ধারণ করছে। দুই রাজ্যের সীমানায় অসমের নিরাপত্তা বাহিনী ও মিজোরামের বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ বেঁধে যায়। সংঘর্ষের জেরে ইতিমধ্যেই অসম পুলিশের ৬ জওয়ানের মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। ঘটনায় হস্তক্ষেপের জন্য ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর দফতরে আবেদন জানিয়েছেন দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। এর আগে দুই মুখ্যমন্ত্রীর তরফে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছেও বিষয়টিতে হস্তক্ষেপের আবেদন জানান হয়। সোমবার দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথাও বলেন অমিত শাহ। দুই রাজ্যের মধ্যে বিবাদ মিটিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। তার প্রেক্ষিতে দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর তরফেই বিষয়টি দ্রুত মিটিয়ে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে জওয়ানদের মৃত্যুতে দুঃখপ্রকাশ করেছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী।
I am deeply pained to inform that six brave jawans of @assampolice have sacrificed their lives while defending constitutional boundary of our state at the Assam-Mizoram border.
— Himanta Biswa Sarma (@himantabiswa) July 26, 2021
My heartfelt condolences to the bereaved families.
মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী জোরামথঙ্গা এদিন সংঘর্ষের একটি ভিডিও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ট্যাগ করে ট্যুইট করেন এবং বিষয়টিতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানান। তিনি যে ভিডিওটি পোস্ট করেছেন তাতে একটি গাড়ির কাঁচ ভাঙ্গা অবস্থায় দেখা যাচ্ছে। পালটা অসম পুলিশের তরফেও একটি ট্যুইট করা হয়েছে। ট্যুইটে লেখা হয়েছ, 'মিজোরামের কিছু অসামাজিক ব্যক্তি অসমের সরকারি আধিকারিকদের লক্ষ্য করে পাথর ছুঁড়েছে। ওই সরকারি আধিকারিকেরা লোলাপুরে অসমের জমি দখল হওয়া থেকে আটকানোর কাজে মোতায়েন ছিলেন।'
এই প্রসঙ্গে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ট্যুইটে লেখেন, 'মাননীয় জোরামথঙ্গা মহাশয়, কোলাসিব (মিজোরাম)-এর এসপি বলেছেন, যতক্ষণ না আমরা আমাদের পোস্ট ছেড়ে পিছু হটব, ততক্ষণ তাঁদের নাগরিকের কথা শুনবেন না ও হিংসা থামবে না। এই পরিস্থিতিতে সরকার কী ভাবে চালান সম্ভব?' এরপরেই অমিত শাহ ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ট্যাগ করে তিনি লেখেন,'আশা করছি দ্রুত আপনারা বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করবেন।'
এই ট্যুইটের জবাবে হিমন্ত বিশ্ব শর্মার উদ্দেশ্যে জোরামথঙ্গা পালটা ট্যুইটে লেখেন, 'মাননীয় অমিত শাহ দুই মুখ্যমন্ত্রীকে সৌহার্দ্যপূর্ণ বৈঠক করিয়েছিলেন। কিন্তু তার পরেও আশ্চর্যজনভাবে আজ মিজোরামের ভেরিংটে অটো রিক্সা স্ট্যান্ডে দুই অসম পুলিশের দুই কোম্পানি জওয়ান নাগরিকদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় এবং লাঠি চার্জ করে। সিআরপিএফ এবং মিজোরাম পুলিশের জওয়ানদেরও সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।'
এদিন আরও একটি ট্যুইট করেন হিমন্তে বিশ্ব শর্মা। তাতে তিনি লেখেন, 'মুখ্যমন্ত্রী জোরমথঙ্গার সঙ্গে কথা হয়েছে। আমি পুনরায় উল্লেখ করেছি অসম সীমান্তে স্থিতাবস্থা বজায় রাখব। যাতে শান্তি বজায় থাকে।' একইসঙ্গে মিলিত আলোচনার কথাও বলেন তিনি। সূত্রের খবর, আপাতত এলাকায় সিআরপিএফ জওয়ানদের মোতায়েন করার পর পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। প্রসঙ্গত দিন দুয়েক আগেই উত্তরপূর্বের সমস্ত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে সাক্ষাত করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।