ভারতীয় পাসপোর্ট ব্যবহার করে ৬ বছর ধরে কুয়েতে কাজ করা এক বাংলাদেশি মহিলাকে মুম্বাই বিমানবন্দরে আটক করেছে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ। ওই মহিলার নাম মারিয়াখাতুন মোহাম্মদ মনসুর আলী, যিনি গত ৩৩ বছর ধরে মুম্বাইতে অবৈধভাবে বসবাস করছিলেন বলে জানা গেছে।
গত ২৫ মে রাতে কুয়েত থেকে মুম্বাই ফেরার সময়, ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন কাউন্টারে তার নথিপত্রে অসঙ্গতি ধরা পড়ে। কর্তব্যরত অফিসার সমীর গাইবু পাঠান তার পাসপোর্ট যাচাই করে সন্দেহজনক তথ্য পান এবং মারিয়াখাতুনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন।
জিজ্ঞাসাবাদের সময় মারিয়াখাতুন স্বীকার করেন যে তিনি বাংলাদেশি নাগরিক এবং মাত্র ১৫ বছর বয়সে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে বাংলাদেশ থেকে ভারতে অবৈধভাবে প্রবেশ করেছিলেন। ১৯৯২ সালে ভারতে আসার পর, তিনি মুম্বাইয়ে অরবিন্দকুমার হীরালাল নামে এক ভারতীয় নাগরিককে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তার পরিচয় ব্যবহার করে ভারতীয় নাগরিকত্ব দাবির জন্য জাল নথি তৈরি করেন এবং ২০১৬ সালে একটি ভারতীয় পাসপোর্ট সংগ্রহ করেন।
তদন্তে আরও জানা গেছে, এই পাসপোর্ট তিনি পরবর্তীতে দু’বার নবায়ন করেছেন এবং তা ব্যবহার করে ২০১৯ সালে কুয়েতে কর্মসংস্থানে যান। সেখানে তিনি ছয় বছর ধরে কাজ করেন এবং একাধিক দেশে ভ্রমণ করেন।
ইমিগ্রেশন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মারিয়াখাতুনের বিরুদ্ধে ভারতীয় পাসপোর্ট সংগ্রহের জন্য মিথ্যা তথ্য ও জাল নথি ব্যবহার এবং বিদেশ ভ্রমণের অভিযোগে মামলা রুজু করা হয়েছে। সাহার থানার পুলিশ তাকে হেফাজতে নিয়েছে এবং তদন্ত শুরু হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ভারতীয় নাগরিকত্ব এবং পাসপোর্ট প্রাপ্তির প্রক্রিয়ায় যদি অন্য কেউ সহায়তা করে থাকে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই ঘটনায় পাসপোর্ট বিভাগের দিক থেকেও একটি আলাদা তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।