ভারতের নৌবাহিনী একটি বড় উপহার পেতে চলেছে। ভাবা পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র (BARC) একটি নতুন ২০০ মেগাওয়াট (MWe) পরমাণু চুল্লি তৈরি করেছে। এই চুল্লিটি S5-ক্লাসের পরমাণু সাবমেরিন এবং পরমাণু অ্যাটাক সাবমেরিনে (প্রকল্প ৭৭) স্থাপন করা হবে। এটি সাবমেরিনের জলের নীচে থাকার সময় দ্বিগুণ করবে।
পুরনো সাবমেরিনের সমস্যা: কম শক্তি, কম সহনশীলতা
বর্তমানে, ভারতের দুটি পারমাণবিক সাবমেরিন, INS অরিহন্ত এবং INS অরিঘাটে ৮৩ মেগাওয়াট পরমাণু চুল্লি রয়েছে। তৃতীয় INS অরিধামান ট্রায়ালে আছে। এই চুল্লিগুলি ছোট, তাই সাবমেরিনগুলি দীর্ঘ সময়ের জন্য জলে নীচে থাকতে পারে না। এই সহনশীলতা হ্রাসের ফলে মিশনগুলি ছোট হয়। তবে, নতুন ২০০ মেগাওয়াট পরমাণু চুল্লি দ্বিগুণ শক্তি সরবরাহ করবে। এর ফলে সাবমেরিনটি দীর্ঘ সময়ের জন্য ডুবে থাকতে পারবে, যার ফলে দীর্ঘ মিশন হবে।
S5-ক্লাসের সাবমেরিন: ভারতের নতুন শক্তি
S5-ক্লাস হল ভারতের পরবর্তী প্রজন্মের ব্যালিস্টিক মিসাইল সাবমেরিন (SSBN)। এটি অরিহন্ত ক্লাসের (১৩,০০০ টন) চেয়ে দ্বিগুণ বড় হবে। এটি ১২-১৬টি আইসিবিএম মিসাইল বহন করবে (কে-৫ এসএলবিএম, ৫,০০০ কিমি পাল্লা)। প্রজেক্ট ৭৭ অ্যাটাক সাবমেরিন (এসএসএন) শত্রু জাহাজকে লক্ষ্যবস্তু করবে। নতুন চুল্লি লাগানো হলে সাবমেরিনগুলির গতি বাড়বে, অনেক দূর পর্যন্ত যেতে পারবে। বিজ্ঞানীরা বলেছেন যে এই আপগ্রেড ভারতকে চিনের সঙ্গে পাল্লা দিতে সাহায্য করবে। কারণ চিনের সাবমেরিনগুলির ক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে। তাই ভারতেরও শক্তিশালী অস্ত্রের প্রয়োজন।
সাবমেরিনগুলি কেন গুরুত্বপূর্ণ?
যুদ্ধের ক্ষেত্রে সাবমেরিন তুলনামূলক ভাবে সবচেয়ে নিরাপদ, কারণ তারা গভীর সমুদ্রে লুকিয়ে থাকা অবস্থায় আক্রমণ চালাতে পারে। শত্রু সহজেই তাদের শনাক্ত করতে ও ধ্বংস করতে পারে না। ভারতের পরমাণু ক্ষমতা শক্তিশালী করার জন্য সরকার এস৫ এবং প্রজেক্ট ৭৭-এর উপর গুরুত্ব দিচ্ছে।
BARC-এর অন্যান্য পরিকল্পনা
BARC-এর চেয়ারম্যান এ কে মোহান্তি ভিয়েনায় IAEA সম্মেলনে (২০২৫) জানান যে BARC ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার হালকা জল-ভিত্তিক স্মল মডুলার চুল্লি (SMR) ডিজাইন করছে। উপরন্তু, এটি ৫৫৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি SMR এবং একটি উচ্চ-তাপমাত্রার গ্যাস-শীতল চুল্লি (পরিষ্কার হাইড্রোজেন উৎপাদনের জন্য) তৈরি করবে। এগুলি বেসামরিক শক্তির জন্য, যা ভারতকে শক্তি-সবল করে তুলবে। ভারতের পারমাণবিক শক্তি বৃদ্ধি পাবে।
২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার চুল্লি
S5 সাবমেরিনকে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সাবমেরিনে রূপান্তরিত করবে। এটি আত্মনির্ভর ভারতের অংশ - BARC এটি দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করেছে। চিনা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এটি অপরিহার্য। ভারতের নৌবাহিনী শীঘ্রই সমুদ্রে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে।