পহেলগাঁও বেড়াতে গিয়েছিলেন অসমের হিন্দু বাঙালি দেবাশিস ভট্টাচার্য। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রী ও ছেলে। তবে বুদ্ধিমত্তার জেরে প্রাণে বাঁচেন দেবাশিস। অসমের শ্রীভূমি শহরের ওই বাসিন্দা এখনও আতঙ্কিত। তাঁর চোখে মুখে সেই প্রভাব স্পষ্ট। এখন পরিবারের সঙ্গে শ্রীনগরের নিরাপদ জায়গায় রয়েছেন তিনি। ঠিক কী হয়েছিল জঙ্গি হামলার সময়, তা জানিয়েছেন ওই ব্যক্তি।
দেবাশিস ভট্টাচার্য জানান, তিনি এবং তাঁর স্ত্রী অসম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে কর্মরত। স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে কাশ্মীর এসেছিলেন। যখন জঙ্গিরা হামলা চালায় তখন তিনি পহেলগাঁওয়ে ছিলেন। তাঁর চোখের সামনেই জঙ্গিরা হত্যাকাণ্ড চালায়।
দেবাশিস আজতককে জানান, 'আমরা গাছের নিচে লুকিয়ে ছিলাম। আশপাশে কয়েকজন কলমা পাঠ করছিলেন। আমি তা দেখতে পেয়ে সেখানে চলে যায়। তাদের সঙ্গে বসে পড়ি। তখন একজন সন্ত্রাসবাদী আমার কাছে আসে। আমার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে, কী করছ? কী বলছ? রামনাম করছ? তখন আমি জোরে জোরে কলমা পড়তে লাগলাম। যদিও আমাকে ওরা কলমা পাঠ করতে বলেনি। তবে মনে হল এটাই বাঁচার রাস্তা। আমি কলমা পাঠ করতে থাকলাম। কিছুক্ষণ পর জঙ্গিরা সেখান থেকে চলে যায়।'
এদিকে দেবাশিষের স্ত্রী মধুমিতা দাস ভট্টাচার্য তাঁর ভাই নবেন্দু দাসকে পুরো ঘটনার কথা জানান। নবেন্দু আজতককে বলেন, 'সৌভাগ্যক্রমে জঙ্গিরা জামাইবাবুতে চিনতে পারেনি। দেবাশিষের দাড়ি রয়েছে। ও উপস্থিত বুদ্ধির পরিচয় দিয়েছিল। তাই হয়তো বেঁচেছে।'
পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসবাদী হামলার নিন্দা করেছেন বিশ্বের তাবড় তাবড় নেতারা। তাঁরা ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছেন। হামলার পর প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং জানান, এসব হামলা করে ভারতকে ভয় দেখানো যাবে না। এই ধরনের কর্মকাণ্ড বরদাস্ত করা হবে না। দোষীদের শাস্তি দেওয়া হবে। তিনি বলেন, 'জঙ্গিদের এমন জবাব দেওয়া হবে যা বিশ্ব দেখবে। আমরা কঠোর জবাব দেব এবং কোনও অপরাধীকে রেহাই দেব না। যারা প্রিয়জনকে হারিয়েছে তাদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।'