ভারতে ক্যান্সারের ঝুঁকি দ্রুত বাড়ছে। শুধু আক্রান্তের সংখ্যা নয়, ক্যান্সারের ধরণ ও এর ভৌগোলিক বিস্তার নিয়েও উঠে এসেছে উদ্বেগজনক তথ্য। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ (ICMR)-এর সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী, মহিলাদের মধ্যে ক্যান্সারের সবচেয়ে বেশি ঘটনা বর্তমানে কর্নাটকের রাজধানী বেঙ্গালুরুতে নথিভুক্ত হয়েছে।
মহিলাদের ক্যান্সারের বাড়বাড়ন্ত
২০১৫ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে সংগৃহীত ৪৩টি ক্যান্সার রেজিস্ট্রির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বেঙ্গালুরুর প্রতি ১ লক্ষ মহিলার মধ্যে গড়ে ১৪০ জন ক্যান্সারে আক্রান্ত। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি নথিভুক্ত হয়েছে স্তন ক্যান্সার, এরপর রয়েছে জরায়ুমুখ এবং মুখের ক্যান্সার। ফলে, সারাদেশের ক্যান্সার আক্রান্ত মহিলাদের মধ্যে বেঙ্গালুরু ষষ্ঠ স্থানে উঠে এসেছে।
পুরুষদের ক্যান্সারের চিত্র
মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের মধ্যে ক্যান্সারের ধরণ আলাদা। রিপোর্ট বলছে, পুরুষদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ফুসফুস ক্যান্সার নথিভুক্ত হয়েছে। পাশাপাশি প্রোস্টেট ও পাকস্থলীর ক্যান্সারের হারও বেড়েছে। বিশেষ করে দিল্লি, চেন্নাই ও তিরুবনন্তপুরমে ফুসফুস ক্যান্সারের প্রবণতা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বর্তমান পরিসংখ্যান ভয়াবহ
২০২৪ সালে ভারতে প্রায় ১৫.৬২ লক্ষ নতুন ক্যান্সার রোগী শনাক্ত হয়েছেন।
এর মধ্যে ৮.৭৪ লক্ষেরও বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
উত্তর-পূর্ব ভারতের আইজল, পূর্ব খাসি পাহাড়, কামরূপ আরবান ও পাপুম্পারে খাদ্যনালীর ক্যান্সারের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি। আহমেদাবাদে মুখের ক্যান্সারের হার দ্রুত বেড়েছে, যা মূলত তামাক, গুটখা ও পানমশলার অভ্যাসের সঙ্গে জড়িত।
ভবিষ্যতের আশঙ্কা
গ্লোবাল ক্যান্সার অবজারভেটরির অনুমান, ২০৪৫ সালের মধ্যে ভারতে প্রতি বছর প্রায় ২৫ লক্ষ নতুন ক্যান্সার রোগী শনাক্ত হতে পারেন। অর্থাৎ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা না নিলে আগামী দুই দশকের মধ্যে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে।
প্রতিরোধ ও সচেতনতার বার্তা
বিশেষজ্ঞদের মতে, মহিলাদের জন্য স্তন ও জরায়ুমুখ ক্যান্সারের নিয়মিত স্ক্রিনিং সহজলভ্য করতে হবে। এইচপিভি টিকা দেওয়া বাড়াতে হবে। ধূমপান, তামাক ও অ্যালকোহল এড়িয়ে চলা, সুষম খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত ব্যায়াম ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। প্রাথমিক উপসর্গে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।