দেশজুড়ে চলছে ‘ভারত বনধ’। কলকাতা সহ পশ্চিমবঙ্গেও প্রভাব পড়েছে। জেলায় জেলায় রাস্তা অবরোধ, ট্রেন অবরোধ চলছে। বাসচালকরা হেলমেট পরে বাস চালাচ্ছেন, যাতে বনধ সমর্থকদের থেকে রক্ষা পান। এই বনধ ডেকেছে দেশের ১০টি বড় ট্রেড ইউনিয়ন। তাদের সঙ্গে কৃষক সংগঠন এবং গ্রামের শ্রমিক ইউনিয়নগুলিও একজোট হয়েছে। এই বনধে ২৫ কোটিরও বেশি মানুষ অংশ নিচ্ছেন বলে দাবি করা হয়েছে। দেশের বহু জায়গায় হরতালের ডাক মেনে মানুষ রাস্তায় নেমেছেন।
কেন হঠাত্ ভারত বনধ?
এই বনধের পেছনে একটাই মূল অভিযোগ, কেন্দ্র সরকার শ্রমিক ও কৃষকদের কথা শুনছে না। তাদের অভিযোগ, নতুন শ্রম আইন (Labour Codes) শ্রমিকদের বিপদে ফেলছে, কাজের সময় বেড়ে যাচ্ছে, চাকরি নিরাপদ থাকছে না, কম বেতন দেওয়া হচ্ছে, বড় বড় কোম্পানিদের সুবিধা করে দিচ্ছে সরকার। শ্রমিক নেতারা বলছেন, সরকার গত ১০ বছরে কোনও জাতীয় শ্রম সম্মেলন পর্যন্ত ডাকেনি।
কোথায় কোথায় প্রভাব পড়েছে?
এই বনধের ফলে বেশ কিছু জরুরি পরিষেবায় প্রভাব পড়তে পারে। যেমন:
ব্যাঙ্কিং এবং বিমা পরিষেবা
ডাকঘর
কয়লার খনন এবং ফ্যাক্টরির কাজ
রাজ্য পরিবহণ
বিদ্যুৎ সরবরাহ
সরকারি অফিস এবং রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা
গ্রামাঞ্চলে কৃষক ও শ্রমিকদের র্যালি
#WATCH | West Bengal | Drivers of state-run buses in Siliguri wear helmets as a measure of precaution, as 10 central trade unions have called for 'Bharat Bandh' against the central government's policies pic.twitter.com/pTqOnRPRSg
— ANI (@ANI) July 9, 2025
অনেক জায়গায় বাস ও ট্রেন পরিষেবা আংশিক ব্যাহত হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত বড় কোনও সংঘর্ষের খবর নেই।
কী কী খোলা রয়েছে?
এই বনধে অংশ নেয়নি সব সংস্থা বা মানুষ।
যা খোলা রয়েছে:
স্কুল ও কলেজ
#WATCH | West Bengal | Kolkata Police tries to douse a fire as left parties' unions participate in the 'Bharat Bandh' called by 10 central trade unions, alleging that the central government is pushing economic reforms that weaken workers' rights. pic.twitter.com/4MqDBOu4VJ
— ANI (@ANI) July 9, 2025
প্রাইভেট অফিস
দোকানপাট (বেশিরভাগ)
ট্রেন চললেও কিছু জায়গায় দেরি হচ্ছে
ব্যাঙ্ক বন্ধ না থাকলেও অনেক জায়গায় পরিষেবা বন্ধ বা সীমিত। এটিএমেও টাকা না থাকার সমস্যা হচ্ছে।
বিদ্যুৎ পরিষেবায় প্রভাব?
দেশজুড়ে প্রায় ২৭ লক্ষ বিদ্যুৎ দফতরের কর্মী আজ বনধে অংশ নিতে পারেন। তাই কিছু জায়গায় লোডশেডিং বা বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দিয়েছে।
রেল পরিষেবা কেমন চলছে?
রেল কর্তৃপক্ষ বনধের বিষয়ে কোনও বিজ্ঞপ্তি দেয়নি। তবে কিছু জায়গায় ট্রেন দেরিতে চলছে বা আটকে আছে। বনধকারীরা লাইনে নেমে বিক্ষোভ করছেন, এমন খবরও এসেছে।
কারা এই বনধে অংশ নিচ্ছে?
AITUC (অল ইন্ডিয়া ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস)
CITU (সেন্টার অফ ইন্ডিয়ান ট্রেড ইউনিয়ন)
INTUC
হিন্দ মজদুর সভা
SEWA (স্বনিযুক্ত মহিলা সংগঠন)
বহু সরকারি কর্মচারী সংগঠন
সংযুক্ত কৃষক মোর্চা
রেল, স্টিল প্লান্ট, কয়লাখনি, ডাক বিভাগের কর্মীরা
সাধারণ মানুষের সমস্যা কোথায়?
ব্যাঙ্ক বন্ধ থাকায় টাকা জমা/তোলা করতে পারছেন না অনেকে
ডাকঘর বন্ধ
কিছু জায়গায় বাস বা অটো চলছে না
দোকান খোলা থাকলেও, বাজারে ক্রেতা কম
ট্রেনের সময়সূচি এলোমেলো
তবে কিছু রাজ্যে বনধে প্রভাব খুবই সামান্য। কিছু ব্যবসায়ী সংগঠন বলছে, এই বনধে রোজকার কাজকর্ম খুব একটা আটকে যায়নি।