জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে বলতে গিয়ে বিধানসভায় বেফাঁস মন্তব্য করে ফেলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। আর মন্তব্যের পরেই দেশজুড়ে শুরু হয় তীব্র বিতর্ক। নীতীশ কুমারকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানায় জাতীয় মহিলা কমিশন। ঘরে-বাইরে চাপের মুখে পড়ে শেষে ক্ষমা চাইলেন নীতিশ। তিনি বলেছেন, 'আমার বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। আমি নারী শিক্ষার কথা বলেছি। আমি আমার কথা ফিরিয়ে নিচ্ছি। আমার বক্তব্যে কারও আঘাত লাগলে তার জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী।'
গতকাল বিহার বিধানসভায় জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ইস্যুতে ডিবেটে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার মহিলাদের নিয়ে একটি বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। তাঁর দাবি, মহিলারা লেখাপড়া করলে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। তাঁর কথায়, ' 'মেয়েরা যখন শিক্ষিত হবে... আর যখন বিয়ে হবে... যে পুরুষ হয়, সে তো রাতে বউয়ের সঙ্গে করে না... তো তাতেই আরও সন্তানের জন্ম হয়ে যায়। আর যদি মেয়েরা পড়াশোনা করে থাকে, তাহলে সে জানবে যে... ঠিক আছে স্বামী করবে... কিন্তু শেষে ভিতরে না, ওটা বাইরে করে দাও। আপনারাই বুঝে নিন...।'
দেশজুড়ে নীতীশের বক্তব্যের জোর সমালোচনা শুরু হয়ে যায়। বিরোধীরা ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানায়। আসরে নামে জাতীয় মহিলা কমিশনও। তারাও ক্ষমা চাইতে বলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রীকে। তবে, মুখ্যমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে এগিয়ে আসেন বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব। তাঁর দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য অন্য নজরে দেখা হচ্ছে। উনি সেক্স এডুকেশনের বিষয়ে কথা বলেছেন।
তেজস্বী বলেন,, 'মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের খারাপ মানে করা ঠিক নয়। মুখ্যমন্ত্রী যেটা বলেছেন, তা সেক্স এডুকেশনের বিষয়ে বলেছেন। এখন তো স্কুলেও পড়ানো হয়। স্কুলে সায়েন্স ও বায়োলজিতে এই বিষয়ে পড়ানো হয়। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতে যা বাস্তব, সেটাই বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।'
র জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এই ধরনের বিতর্কিত মন্তব্য অতীতেও করেছেন। চলতি বছরের গত ৮ জানুয়ারি রাজ্যে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করেন বিহারের নীতীশ কুমার। মহিলারা ‘অশিক্ষিত’ আর পুরুষরা ‘উদাসীন’। সে কারণেই রাজ্যে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। সে বার ‘সমাধান যাত্রা’ কর্মসূচিতে বিহারের বৈশালী এলাকায় এক জনসভায় জনসংখ্যা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে এই মন্তব্য করেন তিনি। তাঁর কথায়, 'যদি মহিলারা শিক্ষিত হতেন, তা হলে জন্মহার কমত। এটাই বাস্তব। আজকাল মহিলারা শিক্ষিত নন। মহিলারা যদি শিক্ষিত হতেন, তা হলে জানতেন, অন্তঃসত্ত্বা হওয়া ঠেকাতে কী করণীয়। এ ব্যাপারে তাঁরা সচেতন হতেন। পুরুষরা উদাসীন। ওঁদের মাথাতেই থাকে না যে, রোজ রোজ বাচ্চার জন্ম দেব না।'