বিধানসভা বা লোকসভা ভোটের সময় জোটের শরিক হিসেবে কোন দল কতগুলো প্রার্থী দেবে তা নিয়ে বিবাদ ভারতীয় রাজনীতিতে নতুন নয়। এবার সেই একই ছবি দেখা যাচ্ছে বিহারে। তাও আবার NDA শরিক দলগুলোর মধ্যে। বিহারে ইতিমধ্যেই প্রথম দফায় ৭১ জনের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে বিজেপি। আর তাই নাকি অসন্তোষের জন্ম দিয়েছে NDA-এর বাকি শরিকদলগুলোর মধ্যে। যদিও ক্ষোভ প্রশমিত করতে বৈঠকে বসছেন গেরুয়া শিবিরের বিহারের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা।
বিহারে কীভাবে তাঁরা ভোটে লড়বেন, আসন সমঝোতা কীভাবে হবে সেই নীতি আগেই ঘোষণা করেছিলেন NDA নেতারা। ঘোষণা হয়েছিল, প্রধান দুই শরিকদল বিজেপি ও জনতা দল ২৪৩ টির মধ্যে ১০১টি করে আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। সেখানে চিরাগ পাসোয়ানের দল জনশক্তি পার্টি ২৯ ও জাতীয় লোক মোর্চা (RLM) এবং জিতেন রাম মাঝির হিন্দুস্তান আওয়াম মোর্চা (HMM) ৬ টি করে আসনে লড়বে।
তবে নীতীশ কুমারের দল JDU-র অভিযোগ, তাদের অমতে আসন ভাগাভাগির নীতি ঘোষণা করা হয়েছে। তাদের ভাগের আসন কেড়ে নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে চিরাগ পাসোয়ানের দলকে। সোনবারসা, রাজগির, একমা এবং মোরওয়া আসন তাদের প্রাপ্য। কিন্তু জোট সেই দাবি মানেনি। সেই কারণে নিজেদের প্রার্থী দিয়েছেন নীতীশ।
শুধু জেডিইউ নয়, ক্ষুব্ধ নাকি চিরাগ পাসওয়ানও। সূত্রের দাবি, তাঁর ভাগের ক্রিম আসন কেড়ে নিয়েছে বিজেপি। দানাপুর, লালগঞ্জ, হিসুয়া ও আরওয়াল এই চার আসন চেয়েছিলেন চিরাগ। তবে সেখানে প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছে বিজেপি।
আসন ভাগাভাগি নিয়ে RLM প্রধান উপেন্দ্র কুশওয়াহার শিবিরেও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। অভিযোগ, তাঁদের শক্ত ঘাঁটি মহুয়া কেন্দ্র ছেড়ে দেওয়া হয়েছে চিরাগ পাসওয়ানকে। প্রতিবাদে কুশওয়াহা জরুরি সভা ডাকেন। এমনকী তিনি দিল্লিতে অমিত শাহর সঙ্গে দেখা করবেন বলেও জানান। তিনি প্রকাশ্যেই বলে বসেন, 'NDA তে কিছুই ঠিকঠাক নেই। আমি দিল্লি যাব। শরিক দলগুলোকে আসন দেওয়া নিয়ে যে চিন্তাভাবনা চলছে তা ঠিক নয়। আমি অমিত শাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জানাব সব। আশা করি সব ঠিক হবে।'
প্রসঙ্গত, জিতেন রাম মাঝির দল প্রার্থী তালিকা ঘোষণার আগেই ৬ আসনে নিজেদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে পৃথকভাবে প্রচার শুরু করেছিল। একই কাজ করেছিল নীতীশের দলও। ফলে বিতর্ক সেই তখন থেকেই। আর ভোট যত এগিয়ে আসছে, ততই বিতর্ক বাড়ছে। সূত্রের খবর, এই আসন ভাগাভাগির কারণে এখনও পুরোদমে প্রচারই শুরু করতে পারেনি জোট।