রাজস্থানের জয়সলমের জেলায় ভারত-পাকিস্তান আন্তর্জাতিক সীমান্তের কাছে বালির টিলায় এক যুবক এবং এক কিশোররী মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছে। যা নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছ। দু'জনকেই পাকিস্তানি নাগরিক হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে সন্দেহ করা হচ্ছে যে তাঁরা দুজনেই প্রেমিক-প্রেমিকা। খিদে ও তৃষ্ণায় মারা গিয়েছেন। তবে তাঁরা কীভাবে ভারতে পৌঁছলেন এবং তাঁদের মৃত্যুর পিছনে কোনও গভীর ষড়যন্ত্র আছে কি না তা নিয়ে রহস্য রয়ে গিয়েছে।
তথ্য অনুসারে, এই ঘটনাটি জয়সলমেরের কাছে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তের কাছে তানোট এবং সাধেওয়ালা এলাকায় আন্তর্জাতিক সীমান্তের ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার ভিতরে ভারতীয় ভূখণ্ডের। সাধেওয়ালা গ্রামের রাখালরা শনিবার সন্ধ্যায় বালির টিলায় এক যুবক এবং একটি মেয়ের মৃতদেহ দেখতে পান। উভয়ের মৃতদেহ প্রায় চার থেকে পাঁচ দিন পড়ে ছিল মনে হচ্ছে। দু'জনের কাছেই পাকিস্তানি মোবাইল সিম এবং পাকিস্তানি পরিচয়পত্র পাওয়া গিয়েছে। যা নিশ্চিত করে যে উভয়ই পাকিস্তানি নাগরিক। দু'জনেরই বয়স ২০ বছরের কম। প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করা হচ্ছে যে খিদে ও তৃষ্ণায় দু'জনেরই মৃত্যু হয়েছে। এটাও মনে করা হচ্ছে যে দু'জনেই হিন্দু এবং পাকিস্তানে ঘটে যাওয়া নৃশংসতায় বিরক্ত হয়ে ভারতে চলে এসেছিলেন। পুলিশ এবং বিএসএফ কর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করেছেন। পুলিশ বর্তমানে উভয় মৃতদেহ রামগড় মর্গে রেখেছে। এখন ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।
জানা গিয়েছে,এক রাখাল তাঁদের মৃতদেহ দেখে তানোট থানায় খবর দেন। বিএসএফ-কে এ বিষয়ে অবহিত করে পুলিশ। এরপর পুলিশ এবং বিএসএফ কর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করে। যুবকের নাম রবি কুমার (১৮)। মেয়েটির বয়স ১৫ বছর। এটাও অনুমান করা হচ্ছে যে তাঁরা দুজনেই প্রেমিক প্রমিকা। পাকিস্তান থেকে পালিয়ে কীভাবে তাঁরা এখানে পৌঁছলেন তা জানা যায়নি।
পুরো ঘটনা সম্পর্কে প্রশাসন কী বলেছে?
বিএসএফ-র ইন্সপেক্টর জেনারেল এমএল গর্গ বলেন, জয়সলমের সংলগ্ন আন্তর্জাতিক সীমান্তের প্রায় ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার ভেতরে সাদেওয়ালা এলাকায় এক যুবক ও এক মহিলার মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছে। তাঁদের কাছ থেকে পাকিস্তানি সিম কার্ড এবং পাকিস্তানি পরিচয়পত্র ইত্যাদি পাওয়া গেছে। এই দুজন প্রেমিক-প্রেমিকা হতে পারেন, তবে এখনও জানা যায়নি যে এই দুজন পাকিস্তান থেকে ভারতে প্রবেশ করেছেন নাকি আগেই ভারতে ঢুকেছিলেন। বর্তমানে, আমরা পুরো সীমান্ত এলাকায় তল্লাশি অভিযান চালিয়েছি, তবে পাকিস্তানি সীমান্ত থেকে ভারতীয় সীমান্তে প্রবেশের কোনও প্রমাণ বা পায়ের ছাপ সীমান্ত এলাকায় পাওয়া যায়নি। আমরা এফআরও-এর সঙ্গেও যোগাযোগ করছি এবং তাঁদের দুজনের সম্পর্কে তথ্য চাইছি। বিএসএফ তাদের মতো করেও তদন্ত করছে।
পুলিশ সুপার সুধীর চৌধুরী বলেন, দুই পাকিস্তানি কীভাবে সীমান্তের কাছে পৌঁছেছিল সে সম্পর্কে এখনও কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। পুলিশ মামলার তদন্ত করছে। মৃতদেহগুলি ৪ থেকে ৫ দিনের পুরনো। উভয়ের মৃতদেহ আপাতত মর্গে রাখা হয়েছে। এখন ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে। সম্ভবত মৃত্যুর কারণ খিদে-তৃষ্ণা বা অন্য কিছু হতে পারে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পরই তা জানা যাবে।