বিক্ষোভকারীদের ‘শায়েস্তা’ করতে বুলডোজ়ার দিয়ে তাদের আস্তানা গুঁড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল উত্তরপ্রদেশ সরকার। যোগী আদিত্যনাথের প্রশাসন এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতিমধ্যেই প্রয়াগরাজ ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (পিডিএ) মহম্মদ জাভেদের বাড়ি ভেঙে দেওয়ার জন্য একটি নোটিশ দিয়েছে, তাকে ১২ জুন সকাল ১১টার মধ্য়ে বাড়ি খালি করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। তাকে শুক্রবার শহরে হিংসার পিছনে প্রধান ষড়যন্ত্রকারী হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
বাড়ি ভাঙার নোটিশ হিংসায় মদতকারীকে
নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে যে সম্পত্তিটিতে অবৈধভাবে তৈরি রয়েছে। যা প্রয়োজনীয় অনুমতি না নিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে তার কারণেই এই সিদ্ধান্ত। বেশ কয়েকটি বিল্ডিং এবং পরিকল্পনা বিধি ভেঙে তৈরি করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সেগুলিকেও চিহ্নিত করা হবে বলে জানানো হয়েছে। পিডিএ বলেছে যে জাভেদ ৫ মে, ২০২২-এ পাঠানো শো-কজ নোটিশের জবাব দিতে ব্যর্থ হয়েছেন এবং ৯ জুন জারি করা অন্য নোটিশে আদেশ অনুসারে ভবনটি খালি করেননি।
পুলিশের অভিযোগ
পুলিশের অভিযোগ, মহম্মদ জাভেদ বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিলেন, যা শেষ পর্যন্ত সহিংস রূপ নেয়। তাকে গ্রেফতার করে গ্যাংস্টার আইনে মামলা করা হয়েছে। শুক্রবার প্রতিবাদ বিক্ষোভের পরে, পিডিএ, দলগুলি দাঙ্গাবাজদের অবৈধ সম্পত্তি ধ্বংস করার বিষয়ে পুলিশ এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের দ্বারা জারি করা সতর্কতার আপাত ফলোআপে আটলা এবং আশেপাশের অঞ্চলে অবৈধ নির্মাণ এবং দখলের শণাক্তকরণ শুরু করেছে।পুলিশের অতিরিক্ত এডিজি (আইন শৃঙ্খলা) প্রশান্ত কুমার শনিবার বলেছেন যে, শুক্রবারের সহিংসতার ঘটনায় এ পর্যন্ত ৬৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে কঠোর জাতীয় নিরাপত্তা আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিত
পয়গম্বরকে নিয়ে বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মার একটি মন্তব্যকে ঘিরে বিতর্ক ছড়িয়ে পড়ে। এরপর দেশে-বিদেশে নিন্দার ঝড় ওঠে। এর প্রেক্ষিতে নুপূর শর্মাকে বরখাস্ত করে বিজেপি। মন্তব্যের জেরে গত কাল উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন একটি সম্প্রদায়ের মানুষ। প্রয়াগরাজের মতো শহরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষও বাধে বিক্ষোভকারীদের। তার আগে কানপুরেও গোষ্ঠী সংঘর্ষ দানা বেধেছিল। উত্তরপ্রদেশের সাহারানপুর ও কানপুরে হিংসা ছড়ানোয় মুল অভিযুক্তদের সম্পত্তি ধ্বংস করার কাজ শুরু করে যোগীর প্রশাসন।
বুলডোজার দিয়ে ভাঙা শুরু
সাহারনপুর পুলিশের শেয়ার করা একটি ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, বিরাট সংখ্যক পুলিশের উপস্থিতিতে পুরকর্মীরা বুলডোজ়ার নিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন। সমাজে অশান্তি সৃষ্টির অভিযোগে ধৃত দুই অভিযুক্তের বাড়ি বুলডোজ়ার চালিয়ে ভেঙে ফেলা হচ্ছে। কানপুরেও গোষ্ঠী সংঘর্ষে মূল অভিযুক্ত জ়াফর হায়াত হাসমির ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের বাড়ি ভেঙে দিয়েছে কানপুর ডেভলপমেন্ট অথরিটি। এবার প্রয়াগরাজেও একইভাবে নোটিশ জারি করা হয়েছে। মনে করা হচ্ছে এই নীতি লাগু হবে গোটা রাজ্যেই।