নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (CAA) নিয়মে বদল আনল কেন্দ্র। ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন জানানোর সময়সীমা ১০ বছর বাড়িয়ে দিল অমিত শাহের মন্ত্রক। এবার থেকে ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান থেকে আসা অ-মুসলিম সংখ্যালঘুরা (হিন্দু, জৈন, শিখ, বৌদ্ধ) CAA-তে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন জানাতে পারবেন। SIR, বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী নিয়ে অব্যাহত রাজনৈতিক উত্তেজনার মাঝে মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। কতটা বদল করা হল এই নাগরিকত্ব পাওয়ার প্রক্রিয়ায়?
প্রক্রিয়ায় বদল কেন তাৎপর্যপূর্ণ?
আসন্ন বিহার এবং বাংলা বিধানসভা নির্বাচনের আগে ভোটার তালিকায় নিবিড় সমীক্ষা অর্থাৎ SIR ঘিরে রাজনীতির পারা সপ্তমে। ভোটার তালিকার এই সমীক্ষা নাম করে বিহারের বৈধ ভোটারদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করা এবং নাগরিকত্ব ছিনিয়ে নেওয়ার পদ্ধতি বলেই অভিযোগ বিরোধী শিবিরের। বিহারের পর SIR বাংলাতেও হবে বলে সাফ জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। BJP-র দাবি, এর ফলে বাংলায় ঢুকে পড়া বেআইনি বাংলাদেশিদের চিহ্নিত করা সম্ভব হবে।
অন্যদিকে, বছরখানেক আগে বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে সেখানে হিন্দু সংখ্যালঘুদের উপর অকথ্য অত্যাচারেরও বিস্তর উদাহরণ রয়েছে। ফলে ‘ফরেনার্স অ্যাক্ট’-এ ওই শরণার্থীরা ভারতে ঢুকলেও তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করা হবে না। বরং তাঁরা নাগরকিত্বের জন্য আবেদন জানাতে পারবেন কাট অফ ডেটের মধ্যে ভারতে প্রবেশ করে থাকলে।
CAA-তে কী বদল আনল কেন্দ্র?
২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তান, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ থেকে যে হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি, খ্রিস্টানরা ভারতে ধর্মীয় কারণে আশ্রয় নিয়েছেন, তাঁরা সবাই CAA-তে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। রাজনৈতিক মহলের মত এমনটাই।
আগে কী নিয়ম ছিল?
লোকসভা ভোটের আগে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নেয় মোদী সরকার। ২০২৪ ভোটের আগেই CAA কার্যকর হয় CAA। সে সময়ে বলা হয়েছিল, ২০১৪ সালের আগে ৩১ ডিসেম্বরের আগে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা অর্থাৎ হিন্দু, বৌদ্ধ,জৈন,শিখ, পার্সি, খ্রিস্টানরা যদি ধর্মীয় উৎপীড়নের কারণে ভারতে আশ্রয় নিতে চান, সে ক্ষেত্রে তাদের নাগরিকত্ব দেবে ভারত। ছয় সম্প্রদায় ছাড়া পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান বা অন্য কোনও দেশ থেকে আসা মুসলিমদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার বিষয়টি বলা হয়নি আইনে।
CAA নিয়ে একাধিক প্রশ্ন রয়েই গিয়েছে আমজনতার মনে
> ভারতীয় নাগরিকদের উপর প্রভাব ফেলবে CAA? কেন্দ্র জানিয়েছে, এদেশের নাগরিকদের মৌলিক অধিকারের উল্লেখ রয়েছে ভারতীয় সংবিধানে। সেই অধিকার খর্ব করে মুসলিম সহ ভারতীয় নাগরিকদের উপর CAA-র কোনও প্রভাব পড়বে না।
> পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তানের মুসলিমরা কখনই ভারতীয় নাগরিকত্ব পাবে না? ধর্মের বিচারে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না। যোগ্যতার ভিত্তিতে নাগরিকত্ব পাবেন তাঁরা।
> NRC-র সঙ্গে CAA-র কোনও সম্পর্ক নেই। ২০০৪ সালের ডিসেম্বর থেকেই ১৯৫৫-এর নাগরিকত্ব আইনের সঙ্গে আইনত সংযুক্ত NRC। বিগত ১৫-১৬ বছর ধরে এই আইন রয়েছে। CAA আলাদা করে এতে কোনও পরিবর্তন আনেনি।