বালেশ্বর ট্রেন দুর্ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজন রেল কর্মচারীকে গ্রেফতার করল সিবিআই। শুক্রবার তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের নাম অরুণ কুমার মহন্ত, মহম্মদ আমির খান (জুনিয়র সেকশন ইঞ্জিনিয়ার) এবং পাপু কুমার (টেকনিশিয়ান)। তিনজনের বিরুদ্ধেই ভারতীয় দণ্ডবিধির (IPC) ধারা ৩০৪ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। অর্থাৎ এই তিনজনের বিরুদ্ধেঅপরাধমূলক হত্যাকাণ্ডের জন্য অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়াও, সিবিআই তিন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইপিসি-র ২০১ ধারা (অপরাধের প্রমাণ হারিয়ে ফেলা বা অপরাধ সম্পর্কিত মিথ্যা তথ্য দেওয়া) যোগ করা হয়েছে।
গত ২ জুন ওড়িশার বালেশ্বরে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে। তাতে ২৯২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহতের সংখ্যা হাজারের বেশি। কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআই ৬ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে বালেশ্বর ট্রেন দুর্ঘটনার তদন্তভার গ্রহণ করেছিল।
সিবিআই যে স্টেশনে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে সেই স্টেশনটি সিল করে দিয়েছে
বালেশ্বরের বাহানাগা বাজার রেল স্টেশন থেকে প্রতিদিন প্রায় ১৭০টি ট্রেন যাতায়াত করে। দুর্ঘটনার পর সিবিআই লগবুক, রিলে প্যানেল এবং সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত করে স্টেশনটি সিল করে দেয়। বর্তমানে বাহানাগা বাজার স্টেশনে কোনও ট্রেন থামে না।
কীভাবে দুর্ঘটনা
২ জুন করমণ্ডল এক্সপ্রেসের সিগন্যাল আপ মেন লাইনের দিকে থাকলেও পয়েন্ট লুপ লাইনের দিকে ঘোরানো ছিল। ফলে ওই লুপ লাইনে ঢুকেই দাঁড়িয়ে থাকা মালগাড়িতে ধাক্কা মারে করমণ্ডল। ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে করমণ্ডল একপ্রেসের বহু বগি। এরপর ডাউন লাইনে আসা যশবন্তপুর এক্সপ্রেস এসে ধাক্কা মারে করমণ্ডল এক্সপ্রেসকে। সেই দুর্ঘটনার এক মাস পেরিয়ে যাওয়ার পর তদন্ত রিপোর্ট দিয়েছে কমিশনার অব রেলওয়েজ সেফটি(CRS)। ওই রিপোর্ট বলা হয়েছে, মানুষের ভুলেই ওই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে।
দুর্ঘটনার পর রেলের দক্ষিণ-পূর্ব জোনের বহু আধিকারিকই শাস্তিমূলক পদক্ষেপের কবলে পড়েছেন। ইস্টার্ন জোনের জেনারেল ম্যানেজার অর্চনা জোশীকে বদলি করা হয়েছে। তাঁর জায়গায় অনিল কুমার মিশ্রকে দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের জেনারেল ম্যানেজার হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। এর আগে রেল বোর্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার ও বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার-সহ জোনের পাঁচ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে বদলি করেছে।