Justice Yashwant Varma: এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি যশবন্ত ভার্মার বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট মোশন আনতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। রবিবার এমনটাই জানালেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানান, ইতিমধ্যেই ১০০-রও বেশি সাংসদ ইমপিচমেন্ট প্রস্তাবে সই করেছেন। সংসদের আসন্ন অধিবেশনে এই ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব আনা হবে। কিরেন রিজিজু বলেন, 'বিচারপতি যশবন্ত বর্মার বিরুদ্ধে আমরা ইমপিচমেন্ট মোশন আনছি। অনেক সাংসদ ইতিমধ্যেই এতে সই করেছেন।'
ঠিক কবে নাগাত সংসদে ইমপিচমেন্ট মোশন আনা হতে পারে? এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানান, 'এখনই নির্দিষ্ট সময় বলা সম্ভব নয়। পরে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।'
কী নিয়ে বিতর্ক?
২০২৫-এর মার্চে দিল্লিতে বিচারপতি যশবন্ত বর্মার সরকারি বাসভবনে আগুন লাগে। সেই ঘটনার পর থেকেই শুরু হয় বিতর্ক। অভিযোগ, আগুন নেভানোর পরে তাঁর বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণে পোড়া বা আংশিক পোড়া টাকা উদ্ধার হয়।
সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই শুরু হয় জল্পনা। ওঠে তদন্তের দাবি। এই ঘটনায় রীতিমতো বিচারপতিদের উপর প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হচ্ছে বলে দাবি করেন সমালোচকরা।
যশবন্ত ভার্মা যদিও বারবার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, এটি সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্র। তিনি জানান, তাঁর সঙ্গে উদ্ধার হওয়া টাকার কোনও সম্পর্ক নেই। মিথ্যাভাবে ফাঁসানো হয়েছে তাঁকে।
ঘটনার পরেই দিল্লি হাইকোর্ট থেকে আলাহাবাদ হাইকোর্টে বদলি করা হয় বিচারপতিকে। বদলির পর থেকে তিনি এখনও পর্যন্ত কোনও বিচারকার্যের দায়িত্ব পাননি। তবে এখনও পর্যন্ত পদত্যাগও করেননি। অবসরও নেননি। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, এই পুরো বিষয়টিই অন্যায়ভাবে করা হচ্ছে।
সুপ্রিম কোর্টে আবেদন
সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টেও আবেদন করেছেন বিচারপতি ভার্মা। তাঁর দাবি, যে ইন-হাউস কমিটি তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রমাণ করেছে, সেই রিপোর্ট খারিজ করা হোক।
ইন্ডিয়া টুডে-র হাতে তাঁর আবেদন-পত্রের কিছু অংশ এসে পৌঁছেছে। সেখানে বলা হয়েছে, তদন্ত প্রক্রিয়া 'অসাংবিধানিক' ছিল। তাঁর মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে।
আবেদনে জানানো হয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে নয়, শুধুমাত্র আগুন লাগার ঘটনাকে কেন্দ্র করেই এই তদন্ত শুরু হয়।
ঘটনার সময় বিচারপতি ভার্মা ও তাঁর স্ত্রী মধ্যপ্রদেশ বেড়াতে গিয়েছিলেন। বাড়িতে ছিলেন তাঁর মেয়ে ও মা। আগুন নেভানোর পর দিল্লি ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ কোনও টাকা বাজেয়াপ্ত করেনি বলে দাবি করেছেন তিনি।
'বিচারবিধির লঙ্ঘন'
বিচারপতির অভিযোগ, তাঁকে কোনও ব্যক্তিগত শুনানিরও সুযোগ দেওয়া হয়নি। এমনকি CCTV ফুটেজও দেখতে দেওয়া হয়নি।
অভিযোগ, রিপোর্টটি তাঁর হাতে পৌঁছানোর আগেই তা মিডিয়ায় ফাঁস করে দেওয়া হয়। ফলে তাঁর মর্যাদা ও সুনামের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে।
এছাড়াও, সুপ্রিম কোর্টের নিযুক্ত কমিটি এই প্রথমবার ১০ জন প্রত্যক্ষদর্শীর নাম প্রকাশ করেছে। এঁরা বিচারপতির বাড়ির স্টোর রুমে বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা দেখেছেন বলে দাবি করেছেন।
এই ঘটনায় দেশের বিচার বিভাগ রীতিমতো প্রশ্নচিহ্নের মুখে পড়েছে। এবার সংসদে কেন্দ্রীয় সরকার ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব আনার পর কী হয়, সেটাই দেখার।